আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমের প্রভাব পড়ে পুরো শরীরেই।
তবে ঘুমের অবস্থানের কারণেও আসতে পারে ত্বকের হঠাৎ পরিবর্তন।
আমাদের ঘুম ঠিক মতো না হলে যেমন আমাদের ত্বকে কিছু প্রভাব দেখা যায়, তেমনি ঘুমের সঠিক পজিশনের অভাবেও ত্বকে পড়তে পারে বাজে প্রভাব।
আমাদের ত্বক রাতে নিরাময় হওয়ার সুযোগ পায়।
প্রতিদিন ৬/৭ ঘন্টা ঘুম আমাদের ত্বকে আনতে পারে তারুণ্য।
আর সঠিক উপায়ে না ঘুমালে এর উল্টো ইফেক্ট পড়বে।
আমাদের ঘুমের অবস্থানের কারণে চোখ ফুলে যেতে পারে।
আই ব্যাগ বেড়ে যেতে পারে, চোখের নিচে কালো ছোপ পড়ে যেতে পারে।
সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা দেখা দেয় সেটা হচ্ছে অল্প বয়সে বলিরেখা পড়ে যায়। রিংকেলস দেখা দেয়।
তাই এসব সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে আমাদের ঘুমের সঠিক পজিশন বা অবস্থান জানতে হবে।
ভুল পজিশনে ঘুমানোর ফলে যে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হতে পারে
এটা আপনিও অবিলম্বে বলে দিতে পারেন না ঘুমানোর ফলে আপনার ত্বক মলিন হয়ে যায়।
ঠিক তেমনি একটি ভুল পজিশনে ঘুমানোর ফলে আপনার চেহারায় পড়তে পারে এর খারাপ প্রভাব।
ভুল পজিশনে ঘুমানোর ফলে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন।
- চোখের পাতা ঝুলে যাওয়া
- চোখ ফুলে যাওয়া
- আই ব্যাগ বেড়ে যাওয়া
- বলিরেখা দেখতে পাওয়া
- মুখের ও চোখ কুঁচকিয়ে যাওয়া
- কপালে রিংকেলস পড়া
জেনে নিন কোন পজিশন আপনার ঘুমের জন্য ভালো ও কোন পজিশন খারাপ।
১) এক কাধ হয়ে ঘুমানো
সাইনাসের সমস্যা যাদের আছে তারা সাধারণত যেকোনো এক কাধ হয়ে ঘুমায়। এটা তাদের জন্য সুবিধাজনক।
কিন্তু এতে করে আমাদের ত্বকে বয়সের ছাপ খুব দ্রুত পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কারণ আমাদের চেহারা আমাদের বালিশের কাভারের সাথে ঘর্ষণ সৃষ্টি করে।
আমাদের চেহারার নড়াচড়া বা কিছু মুভমেন্ট এর ফলে বালিশের সাথে ঘর্ষণ হয়।
যা বলিরেখা হওয়ার অন্যতম কারণ। আমাদের ত্বকেরও শ্বাস নেয়া প্রয়োজন।
কিন্তু এক পাশে ঘুরে ঘুমালে আমাদের ত্বকের এক পাশ শ্বাস নিতে পারে না।
ফলে ত্বকে রিংকেলস দেখা দেয়। এজিং এর সমস্যা বৃদ্ধি পায়।
২) পেটের উপর ভর দিয়ে উল্টো হয়ে ঘুমানো
পেটের উপর ভর দিয়ে বা উল্টো হয়ে ঘুমানো যদি আপনার অভ্যাস হয়ে থাকে তবে আজই ছাড়ুন।
উল্টো হয়ে ঘুমানো হচ্ছে স্লিপিং পজিশমের সবচেয়ে খারাপ ও বাজে পজিশন।
এই পজিশনে ঘুমালে আমাদের চেহারা সম্পূর্ণ বালিশের বিপরীতে চাপ দিয়ে থাকে।
আপনি যখন আপনার সামনে ঘুমান, আপনার ত্বকটি একবারে কয়েক ঘন্টা ধরে বালিশের বিপরীতে থাকে।
যার ফলে চেহারার বলিরেখা বৃদ্ধি পাবে ও ফাইন লাইনস দেখা দিবে।
তার সাথে চোখ এবং ঠোঁটের চারপাশে ভাসমান লাইনকে ভিজিবল করতে পারে।
হঠাৎ এমন সমস্যা চোখে পড়বে না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ফাইন লাইনস স্থায়ী হয়ে যাবে।
বিশেষ করে কপাল কুঁচকে যাবে যা সমাধানের করা সবচেয়ে কঠিন।
বালিশের মধ্যে আপনার মুখের চাপ থাকার কারণে তা চোখের চারপাশে ফোলাভাব আরও স্পষ্ট করে।
কারণ আপনার মাথা ও হার্ট সমানভাবে থাকে। যার অর্থ আপনার রক্তে আরও রক্ত প্রবাহিত হবে।
তাছাড়াও বালিশের মধ্যে থাকা নানা ধরণের জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়ার জন্য পিম্পল বা একনের সংক্রমণ করে।
এই পজিশন এড়িয়া চলা উচিত যেকোন মূল্যেই।
৩) পিঠে ভর দিয়ে ঘুমানো
সুন্দর ত্বক ও ভালো স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ভালো ও কার্যকরী পজিশন হলো পিঠের উপর ভর দিয়ে ঘুমানো।
এই পজিশনে ঘুমানোর ফলে আমাদের শরীরের সব অংশ ভালোভাবে শ্বাস নেয়ার সুযো পায়।
এটা শুধু মাত্র রিংকেলসই প্রতিরোধ করে না বরং ত্বকের ফোলা ভাব কমিয়ে তারুণ্য নিয়ে আসে।
তবে আরো ভালো হয় যদি এক্সট্রা বালিশ নিয়ে ঘুমানো যায়। এতে করে শরীরে ভালোভাবে রক্ত সঞ্চালন হয়।
এছাড়া এ নিয়মটি ত্বকের জ্বালা রোধে সহায়তা করে।
কিছু টিপস যা মেনে চললেই আপনার ত্বক হয়ে উঠবে সুন্দর ও ভালো
- পরিমাণ মতো ঘুম: ঘুম আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।
কিন্তু সারারাত জেগে থাকলে তা আমাদের ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ প্রভাব ফেলে।
তাই প্রতিদিন সঠিক সময়ে ঘুমাতে যাওয়া উচিত ও সকালে সঠিক সময়ে উঠে যাওয়া উচিত।
- বালিশের কাভার নিয়মিত পরিবর্তন করা: আমাদের ঘুমানোর সময় ত্বকের সাথে বালিশের ঘর্ষণ সৃষ্টি হয়।
যার ফলে বালিশে থাকা ফাংগাস বা ব্যাকটেরিয়া আমাদের ত্বকে সংক্রমণ হয়।
ফলে পিম্পল সহ নানা ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই নিয়মিত বালিশের কাভার পরিবর্তন করতে হবে।
নয়তো উপরে কোনো কাপড় দিয়ে ঢেকে তারপর ঘুমাতে হবে।
- মুখ ভালো ভাবে ওয়াশ করে ঘুমাতে যেতে হবে: রাতে ঘুমানোর সময় ত্বক রিপেয়ার মুডে চলে যায়।
আমাদের ত্বক নিরাময় হতে থাকে সারা রাত ধরে।
তাই অপরিষ্কার ত্বক নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া কখনই ভালো বুদ্ধি হবে না।
মুখ পরিষ্কার করে ঘুমাতে যেতে হবে।
- ক্লিনজিং: রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই ত্বক ডাবল ক্লিনজিং করে ঘুমানো উচিত।
আমাদের ত্বকের পোরস এ সারাদিন ধরে জমা হতে থাকে নানা ধরণের ধুলো ময়লা।
তাই গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করার জন্য ডাবল ক্লিনজিং করা আবশ্যক।
- ময়েশ্চারাইজিং: আমাদের ত্বক হাইড্রেটেড রাখতে অবশ্যই ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
তাতে আমাদের ত্বক হাইড্রেট থাকে ও শুষ্ক হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।