প্রাচীন যুগের রূপচর্চা নিয়ে প্রচুর আলোচনা, গবেষণা রয়েছে। কথিত আছে রানি ক্লিওপেট্রা নাকি স্নান করতেন গাধার দুধে। তাঁর অমিত রূপযৌবনের রহস্য নাকি লুকিয়ে ছিল ওতেই!
প্রাচীন ভারতের রাজপরিবারের কাহিনী পড়লেও হামেশাই পাওয়া যায় রানিদের দুধ বা গোলাপজলে স্নান করার কথা, ধূপের ধোঁয়ায় চুল শুকোনোর ছবি।
বেসন গোলা থেকে হলুদ বাটা, চন্দন থেকে মধু, রূপচর্চার জগতে প্রাচীন পদ্ধতির বিকল্প নেই।
বিদেশেও যেমন একসময় খুবই জনপ্রিয় ছিল জোঁক দিয়ে ট্রিটমেন্ট বা পশুপাখীদের পূরীষ ব্যবহার।
আজকের দিনেও কোনও কোনও সালোনে লিচ ট্রিটমেন্ট বা বার্ডপুপ ফেশিয়াল পাওয়া যায়।
তবে এতটা ঝুঁকি নিতে যাঁরা চান না, তাঁরাও কিছু অপেক্ষাকৃত নিরীহ প্রাচীন রূপচর্চার পদ্ধতির উপর ভরসা রেখে দেখতে পারেন।
তেমনই কিছু পদ্ধতি আর উপাদানের কথা দেওয়া হল, ব্যবহার করে দেখলে উপকার পাবেন।
ডিম
প্রাচীন চিনে, বিশেষ করে চেন বংশের রাজত্বকালে রূপচর্চায় ডিমের ব্যবহার বহুল প্রচলিত ছিল।
৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দেও ডিম দিয়ে রূপচর্চা করার উদাহরণ খুঁজে পাওয়া গেছে সেখানে।
ডিমের সাদা অংশটা মুখে আর গলায় মাখতেন চিনা মেয়েরা, শুকিয়ে টান ধরলে ধুয়ে ফেলতেন।
এভাবে ডিম মাখলে ত্বক টানটান, সতেজ হয়। ডিমের প্রোটিন ত্বকে আর্দ্রতা ও পুষ্টিও জোগায়।
অন্টি এজিং গ্লাভস
বয়সের ছাপ সবার আগে আপনার হাতের উপর পড়ে। কারণ হাত সারাক্ষণ অনাবৃত থাকে, সমস্ত কাজকর্মের ঝক্কিও হাতের উপর দিয়েই যায়।
তাই হাতের ত্বকে অনেক দ্রুত কুঞ্চন ও বলিরেখা দেখা দেয়।
রানি মেরি আঁতোয়ানেত সে কথা জানতেন, তাই ঘুমোনোর সময় মোমের আস্তরণ দেওয়া গ্লাভস পরে নিতেন।
মোমের আস্তরে মেশানো থাকত সুইট আমন্ড অয়েল আর গোলাপজল। সারা রাত হাতের ত্বকে আর্দ্রতা জোগাত সেই গ্লাভস, সারা দিন ধরে হাত থাকত পেলব, নরম।
আজকের দিনে এমন একটা গ্লাভস জোগাড় করা মুশকিল মনে হলে সরাসরি আমন্ড অয়েলে কয়েক ফোঁটা গোলাপজল মিশিয়ে নিন, তারপর শোওয়ার আগে হাতে ভালো করে মেখে নিন। ফল মোটের উপর একই পাবেন!
দুধ ও মধু
রূপচর্চায় দুধ আর মধুর প্রসঙ্গ উঠলেই মনে পড়ে যায় রানি ক্লিওপেট্রার কথা। তিনি গাধার দুধে স্নান করতেন।
সেটা আপনি পারবেন না, কিন্তু অনায়াসেই দুধ, মধু আর অলিভ অয়েল মিশিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন আপনার নিজস্ব রূপটান!
অ্যাভোকাডো
অ্যাজটেক রূপচর্চায় অ্যাভোকাডো দারুণভাবে ব্যবহৃত হত। আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়, তা হলে অ্যাভোকাডো ব্যবহার করতে পারেন আপনিও।
অ্যাভোকাডো মুখের রোমছিদ্র বন্ধ করে না, ত্বকে স্বাস্থ্যের দীপ্তি এনে দেয়। ত্বকের পিএইচ লেভেলের ভারসাম্য রক্ষা করতেও অ্যাভোকাডো খুবই কার্যকর!
গোলাপজল
সৌন্দর্যের সঙ্গে গোলাপের সম্পর্ক চিরন্তন। প্রাচীন মিশরের রূপ-রুটিনে নিয়মিত গোলাপ ও গোলাপজল ব্যবহৃত হত।
রোমছিদ্র বন্ধ করে ত্বক টানটান করতে, মুখ থেকে বয়সের ছাপ ও বলিরেখা দূর করতে গোলাপজল খুবই কাজের। ক্লিনজার হিসেবেও গোলাপজল খুবই কাজের!