Search
Close this search box.

বডি অ্যাকনে থেকে রেহাই পাওয়ার সহজ উপায়

আমাদের স্কিনের ক্ষেত্রে বোধহয় সবচেয়ে বড় সমস্যা হল অ্যাকনে। অ্যাকনে বা ব্রণ নিজে তো বড় সমস্যাই, তার সঙ্গে আরও বড় সমস্যা থাকে অ্যাকনের দাগ।

এই দাগ সহজে যেতেই চায় না। তাই আমাদের দেখতেও বেশ খারাপ লাগে।

শুধু যে বয়ঃসন্ধির সময়ে অ্যাকনে বেশি হয় তা নয়। পরবর্তীকালেও অ্যাকনে কোনও কোনও সময়ে হয়ে থাকে।

তবে সমস্যা যাই হোক, আমাদের কাছে উপায়ও কিন্তু আছে।

অ্যাকনে কেন হয়?

আমাদের শরীর সিবাম নামের এক ধরণের তেল তৈরি করে। এই তেলের নিঃসরণ অতিরিক্ত হয়ে গেলেই মুশকিল।

তখন এই সিবাম মরা চামড়ার সঙ্গে মিশে স্কিনকে দূষিত করতে থাকে।

এর ফলে স্কিন পোর্স বন্ধ হয়ে যায় আর ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বাড়তে থাকে স্কিনে।

এবং এর পরেই দেখা দেয় অ্যাকনের সমস্যা। এটা তো হল সাধারণ কারণ। অনেক সময়ে হরমোনের থেকে হতে পারে অ্যাকনে।

তাই বয়ঃসন্ধির সময়ে অ্যাকনে বেশি হয়। আবার কোনও কোনও ওষুধ থেকেও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে অ্যাকনে হয়।

কী করে মুক্তি পাবেন?

একটা জিনিস তো বুঝতেই পারলেন। মুখে অতিরিক্ত তেল আর মরা চামড়া কিছুতেই জমে থাকতে দেওয়া যাবে না।

তাহলেই অনেকটা মুক্তি পাব আমরা অ্যাকনে থেকে।

১. ঘাম জমতে না দেওয়া

ঘেমে থাকা শরীর ব্যাকটেরিয়া সবচেয়ে বড় আক্রমণের জায়গা। তাই ঘাম শরীরে জমতে দেওয়া যাবে না।

আমরা অনেক সময়ে এক্সারসাইজ করে সঙ্গে সঙ্গে স্নান করি না। এর ফলে ঘাম শরীরে বসে যায়।

তাই এক্সারসাইজ করে স্নান করে নিতে হবে। মাইল্ড কোনও বডি ওয়াশ এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে।

এর পাশাপাশি যে পোশাক পড়ে এক্সারসাইজ করেছেন সেই পোশাকও ধুয়ে দিতে হবে।

পরের দিন সেই পোশাক আর পরা যাবে না না ধুয়ে। এই ভাবে চললে ঘাম জমে সেখান থেকে আর অ্যাকনে হবে না।

২. এক্সফলিয়েট

মাঝে মাঝে স্কিনকে এক্সফলিয়েট করা দরকার। এক্সফলিয়েট করা মানে ভিতর থেকে পরিষ্কার করা।

ছুটির দিন একটু সময় নিয়ে একটা ভালো এক্সফলিয়েটিং স্ক্রাব নিয়ে নিজের শরীর পরিষ্কার করতে পারেন।

এর ফলে জমে থাকা ময়লা আর মরা চামড়া ভিতর থেকে পরিষ্কার হয়ে যাবে।

৩. হাল্কা পোশাক পরুন

টাইট পোশাক পরলে ঘাম জমতে পারে বেশি। আমাদের মতো গরমের দেশে তাই হাল্কা পোশাক সবচেয়ে ভালো।

এতে শরীরে হাওয়া চলাচল করতে পারে আর ঘাম কম হয়। আর টাইট পোশাকে নোংরাও জমে বেশি।

তাই আপনার শরীরকে নিঃশ্বাস নিতে দিন আর হাল্কা পোশাক পরুন। দেখবেন অ্যাকনে অনেক কম হবে।

৪. সানস্ক্রিন ঠিক হওয়া চাই

আমরা সানস্ক্রিন মেখেই ভেবে নিই যে এবার সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। রোদে বাইরে গেলেও আর কোনও সমস্যা নেই।

কিন্তু কী ধরণের সানস্ক্রিন ব্যবহার করছেন সেটা দেখছেন কী? অয়েল বেস বা জেল বেশ সানস্ক্রিন ব্যবহার করলেই কিন্তু বাইরের নোংরা, ঘাম বেশি জমবে মুখে।

আর তেলতেলে স্কিন হলে তো কথাই নেই। তাই সবসময়ে চেষ্টা করুন অ্যাকোয়া বেস সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে।

এটি স্কিন তাড়াতাড়ি শুষে নেয়। তার ফলে ময়লাও জমে কম। আজকাল অনেক ভালো ভালো অ্যাকোয়া বেস সানস্ক্রিন পাওয়া যায়।

৫. খাবারেও নজর প্রয়োজন

আমাদের শরীরের ছোট থেকে ছোট সমস্যার মূলে কিন্তু আছে খাদ্যাভ্যাস। অ্যাকনের সমস্যা হয় অতিরিক্ত তেলের নিঃসরণ হলে।

তার ওপর যদি আমরা অতিরিক্ত তেলতেলে খাবার রোজ খাই তাহলে তো শরীরে তেলের পরিমাণ আরও বাড়বে।

অতিরিক্ত বাইরের খাবার, ডিম, প্রাণীজ প্রোটিন, সঙ্গে ভাত বা রুটি, অতিরিক্ত এই সবের শরীরে যাওয়া অ্যাকনে হওয়াকে বাড়ায়।

এর বদলে ফল আর সবজি খেলে শরীরে জলের পরিমাণ বাড়ে। শরীর আর্দ্র থাকে। অ্যাকনে বা অন্য স্কিনের সমস্যা কম হয় অনেক।

৬. টি ট্রি অয়েলের প্রয়োগ

টি ট্রি কিন্তু স্কিনের জন্য বেশ ভালো। আমাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ যদি কম করতে হয় তাহলে টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্নানের জলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে স্নান করলেই হবে। এটা একটা রিল্যাক্সিং এফেক্ট যেমন দেয়, তেমনই অ্যাকনে কম করে।

৭. দারচিনি আর মধু

দারচিনি আর মধু, এই দুই উপাদানের মধ্যেই ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা আছে।

তাই শরীর থেকে অ্যাকনে দূর করতে চাইলে এই দুটি উপকরণের মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন।

উপকরণ

এক চামচ দারচিনি গুঁড়ো, ২ চামচ মধু।

পদ্ধতি

দারচিনি গুঁড়ো করে এক চামচ নিয়ে নিন। এর সঙ্গে দুই চামচ মধু মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করুন।

এই পেস্ট শরীরে অ্যাপ্লাই করুন আর ৩০ মিনিট রেখে দিন। এরপর জল দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে তিন দিন করতে পারেন। দারুণ কাজ পাবেন।

এই কয়েকটি পদ্ধতি বডি অ্যাকনে থেকে আপনাকে রেহাই দিতে পারে। তবে নিয়ম করে করতে হবে। তবেই ফল পাবেন।