Search
Close this search box.

পনির এর গুনাগুন ও উপকারিতা

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার প্রাচীন সময় থেকে মানুষের খাদ্যতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।

পনির দুধ দিয়ে তৈরি খাবারের মধ্যে অন্যতম। সাধারণত বাড়িতেই দুধ থেকে বানিয়ে নেওয়া যায় পনির, তাছাড়া দোকানেও পাওয়া যায়।

শরীরের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যা যা উপাদান প্রয়োজ তা পনিরে পাওয়া যায়।

ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ফসফরাস, ভিটামিন, মিনারেল পনিরে থাকে। যা মানব শরীরের জন্য খুবই জরুরী। 

পনির খাওয়ার উপকারিতা 

পনিরে নানা পুষ্টিগত উপাদান থাকায় এটি মানব দেহের নানা উপকারে লাগে। তবে মাত্রাতিরিক্ত অবশ্যই না।

পরিমাণ মত খেলে পনির আমরা নানা ভাবে উপকৃত হতে পারি। আসুন জেনে নেওয়া যাক ঠিক কীভাবে।

হাড় ও দাঁত মজবুত হয়  

পনিরে প্রোটিন প্রচুর পরিমানে থাকে। তাছাড়া পনিরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকে।

যা মানব শরীরের হাড় ও দাঁতকে শক্ত রাখে। হাড়ের থেকে হওয়া নানা সমস্যাকে দূরে রাখে।

তাই সপ্তাহে একবার করে পনির খাওয়া যেতেই পারে।

ডায়বেটিস প্রতিরোধক 

আমেরিকান জার্নাল অফ নিউট্রিশনের এক গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে যারা দিনে ২ পিস করে পনির খায় অর্থাৎ ৫০ গ্রাম তাদের ২টাইপ ডায়বেটিস হওয়ার আশঙ্কা অনেক অংশে কমে যায়।

ইন্সুলিনের উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে পনির ফলে ডায়বেটিস হলেও নিয়ন্ত্রনে থাকে।

কোলেস্টরেল কমায় 

পনির কোলেস্টরেল কমাতে সাহায্য করে। অনেকই ভাবেন পনির চর্বি জাতীয় ফলে পনির খেলে কোলেস্টরেল বেড়ে যায়।

এই ধারণা একদম সঠিক না। পরিমান মত পনির খেলে তা আপনার শরীরের খারাপ কোলেস্টরেলকে দূর করে।

পনিরে প্রোবাইওটিক ব্যাকটেরিয়া আছে যা দেহে কোলেস্টরেল বাড়তে দেয় না।

তবে সব সময় খেয়াল রাখতে হবে পরিমান বা প্রয়োজন অনুযায়ী খাওয়া উচিত পনির।

ক্যান্সার প্রতিরোধক 

পনিরে হাই কোয়ালিটির প্রোটিন থাকে যা বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাকে আটকে দেয়।

লিভার ক্যান্সার,  ব্রেস্ট ক্যান্সার ইত্যাদি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। লাইনোলিক অ্যাসিড ও স্পাইনগোলিপিডস নামে দুই উপাদানে ভরা পনির।

যা ক্যান্সার প্রতিরোধক। পনির খান আর ক্যান্সারের মত মারণরোগকে নিজের শরীর থেকে দূরে রাখুন। 

হার্টের জন্য লাভদায়ক 

পনির খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন সঠিক ভাবে হয়। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে।

ফলে হার্টের সমস্যা কম দেখা যায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকার ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্টোক হবার সম্ভাবনা কম থাকে।

হৃদরোগের সমস্যা কমে যায়।

গর্ভাবস্থায়  সময় ও প্রসবের পর পনির খাওয়া লাভজনক 

পনিরে থাকা উচ্চমানের প্রোটিন গর্ভাবস্থায় থাকা মহিলাদের জন্য খুবই উপকারী।

এই সময় মহিলাদের নানা সমস্যা দেখা দেয়। দুর্বলতা, খাবারে অরুচি, রক্তল্পতা, ও নানা সমস্যা।

এই সময় পনির খেলে পনিরে থাকা প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন শরীরকে পুষ্টি প্রদান করে।

ও বাচ্চার জন্য ভালো প্রমাণিত। মায়ের ওমে থাকা শিশু স্বাস্থ্যবান হয়।

প্রসবের পর পনির অবশ্যই মায়েদের খাওয়া উচিত নবজাতকের পুষ্টির জন্য।

জন্মের পর প্রথম ৬ মাস শিশু মায়ের বুকের দুধ খায়। ফলে মায়ের শরীরের পুষ্টি শিশুর শরীর দুধের মাধ্যমে যায়।

পনিরে থাকা প্রোটিন, পুষ্টি, ক্যালসিয়াম শিশুর শরীরে প্রবেশ করে।  

ওজনের সামঞ্জস্য রক্ষা করে 

অনেকের ধারনা রয়েছে পনির খেলে ওজন বেড়ে যায় মোটা হয়ে যায়।

কিন্তু জেনে রাখুন যে, পনির পরিমান ও প্রয়োজন মত খেলে শরীরের জন্য খুবই লাভজনক।

যাদের শরীর দুর্বল, ওজন কম তারা নিয়মিত পনির খেলে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে উঠবেন।

ওজনের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে পনিরের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পনির সম্পর্কে কয়েকটি বিশেষ তথ্য  

পনিরে সোডিয়াম থাকে। যা মানব শরীরের রক্তনালীর কার্যক্রমকে বাড়িয়ে দেহে পরিষ্কার রক্ত সরবরাহের পথকে প্রশস্ত করে।

পনির ত্বকের জেল্লা বাড়াতে সাহায্য করে। পনিরে থাকা ফসফরাস চোখের জন্য ভালো।

তবে খেয়াল রাখা উচিত, যাদের দুধ বা দুগ্ধ জাতীয় খাবারে এলারজি তাদের ক্ষেত্রে পনির না খাওয়া উচিত।

পনির একদম টাটকা খাওয়া বেশি উপকারী। ফ্রিজে রেখে পনির খাওয়া শরীরের জন্য ভালো না।

খেয়াল রাখা উচিত পনির যদি ফ্রিজে  থাকে তাহলে তা নর্মাল টেম্পারেচারে এনে তারপর তা খাওয়া উচিত।