Search
Close this search box.

শুষ্ক ত্বকে ফেসিয়াল করার ঘরোয়া উপায়

আপনার যদি ড্রাই স্কিন হয়? তাহলে কিভাবে করবেন ফেসিয়াল?

চিন্তা নেই বন্ধুরা। বিশেষ কিছু না সামান্য কয়েকটি জিনিস মেনেই ঘরে ফেসিয়াল করতে পারবেন।

ফেসিয়াল কেন দরকার হয়?

অনেকেই ভাবেন একটা ফেসিয়াল করে আসলেই চট করে একটা জেল্লা পাওয়া যাবে।কিন্তু ফেসিয়ালকে বলা যায় স্কিনের এক ধরণের ট্রিটমেন্ট।

ফেসিয়াল মানে ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে ত্বককে ময়েশ্চারাইজড করা, আলাদা পরিচ্ছন্নতা ও উজ্জ্বলতা দেওয়া।

ফেসিয়ালে থাকে ম্যাসাজ, যার মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। আর ত্বকে রক্ত সঞ্চালন ভালো হলে ত্বক তো এমনিতেই ভালো থাকবে।

তাই ফেসিয়াল হল ত্বকের সার্বিক যত্ন। তাই যখন মনে হল তখন হঠাৎ গিয়ে ফেসিয়াল নয়, আপনার রূপচর্চার ডেইলি রুটিনে রাখুন ফেসিয়াল।

ত্বক পরিষ্কার করুন

  • ফেসিয়াল করার সবচেয়ে শুরুর পদ্ধতি হলো মুখ পরিষ্কার করা। এখান থেকেই ফেসিয়াল শুরু। তবে শুধু মুখ নয়, ভালো করে হাত ধুয়ে নিন গরম জলে। কারণ ফেসিয়ালে হাতের ব্যবহার খুব বেশি করতে হবে।
  • এবার জানুন আপনার ড্রাই স্কিন হলে কিভাবে মুখ পরিষ্কার করবেন? তেমন কিছুই করতে হবে না। শুধু শুরুতে মুখটা পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এবার মধু নিন হাতে আর তা মুখে,ঘাড়ে,গলায় লাগিয়ে নিন।
  • দেখবেন মধুটা যেন বিশুদ্ধ হয়। মধু খুব ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার করে ভেতর থেকে।
  • হাতে সামান্য ঘষে পারলে গরম জল দিয়ে, নইলে এমনি ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলুন আর পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে ফেলুন।

এক্সফোলিয়েট করুন

  • মধু দিয়ে তো মুখ পরিষ্কার করলেন। তাতে স্কিনের ওপরের লেয়ার থেকে ময়লা গেলো।এবার আরও গভীর থেকে পরিষ্কার করার পালা। এর ফলে ব্ল্যাকহেডস বা কোনো কালো ছোপ থাকলে তা আস্তে আস্তে হাল্কা হয়ে আসবে।
  • মরা চামড়া তো তোলেই, বলিরেখাও হতে দেয় না পারফেক্ট এক্সফোলিয়েশন। আপনার স্কিন যদি ড্রাই হয় তাহলে অ্যালোভেরা দিয়ে স্ক্রাব করুন।
  • সঙ্গে অবশ্য আরও কিছু লাগবে।

উপকরণ

  • ১ টা অ্যালোভেরার পাতা
  • ৩-৪ টা নিমপাতা
  • হলুদ গুঁড়া

পদ্ধতি

  • আপনার বাড়িতে যদি অ্যালোভেরার গাছ থাকে তাহলে খুব ভালো। সরাসরি পেয়ে যাবেন রস। না হলে ভালো অ্যালোভেরা জেল নিয়ে আসুন। অ্যালোভেরা খুব ভালো ড্রাই স্কিনের জন্য।
  • ভেতর থেকে শুষ্কতা কমিয়ে কোমলতা বজায় রাখে। এর সাথে দিন ২ চামচ হার্বাল হলুদ গুঁড়ো, নিমপাতা ৩ থেকে ৪টা।
  • এবার মিশ্রণটা মুখে লাগিয়ে স্ক্রাব করুন ১৫ মিনিট মতো। তারপর ধুয়ে ফেলুন। সঙ্গে সঙ্গেই একটা জেল্লা দেখতে পারবেন।

স্টিম দিন

ফেসিয়ালের এটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ।বিশেষ কিছুই করতে হবে না।একটা পরিষ্কার তোয়ালে নিন।এটা এবার গরম জলে খানিকক্ষণ রাখুন।তারপর জল চিপে নিয়ে মুখে ৫ থেকে ১০ মিনিট রাখুন।এর বেশি রাখবেন না।এই গরম ভাপ আপনার মুখে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে আর পরবর্তী স্টেপের জন্য আপনার স্কিনকে তৈরি করে।

ম্যাসাজ করুন

এবার ফেসিয়ালের আসল স্টেপ, ম্যাসাজ। আপনার যদি ড্রাই স্কিন হয়, তাহলে আপনি গাজরের একটা প্যাক বানিয়ে তা দিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন।

উপকরণ

  • গাজরের পেস্ট
  • গোলাপজল

পদ্ধতি

  • পরিমাণমতো গাজর নিয়ে একটা স্মুথ পেস্ট বানিয়ে নিন। তাতে এবার গোলাপজল দিন।
  • এই মিশ্রণটা মুখে মেখে হাল্কা হাতে ম্যাসাজ করুন। ম্যাসাজের নিয়ম হল চার আঙ্গুল দিয়ে প্রেসার দিয়ে দিয়ে নীচ থেকে ওপরের দিকে ম্যাসাজ করা।
  • ম্যাসাজ কিন্তু ভুল পদ্ধতিতে করবেন না। এভাবে ম্যাসাজ করুন ২০ মিনিট মতো।তারপর মুছে ফেলুন এই মিশ্রণটা।

ফেস মাস্ক লাগান

এবার আপনার স্কিনের দরকার একটা মাস্ক যা আপনার ত্বকে রাখতে হবে বেশ খানিকক্ষণ।

ড্রাই স্কিন হলে আপনি বেশ কয়েকটা প্রাকৃতিক ফেস মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।

কলার মাস্ক

এই মাস্কটি খুব ভালো ড্রাই স্কিনের জন্য। এতে থাকা পটাশিয়াম এবং ভিটামিন ই আর সি স্কিনকে হাইড্রেট করে।

তাই স্কিন হয় নরম,কোমল।সঙ্গে থাকবে দই, যা স্কিনকে ভেতর থেকে নরিশ করবে।

উপকরণ

  • ২টি কলা
  • ৩ চামচ মধু
  • ২ চামচ টক দই

পদ্ধতি

  • সবকটি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে একটা টাইট প্যাক বানান। এইটা এবার মুখে লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট মতো।
  • দেখবেন শুকিয়ে গেলে ওটা উঠে আসবে। ওই প্যাকটা ৩০ মিনিট পর আস্তে আস্তে তুলে নিন।
  • তারপর পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে মুখটা মুছে ফেলুন। দেখবেন একটা ইন্সট্যান্ট গ্লো পাচ্ছেন।

মধু আর নারিকেল তেলের মাস্ক

এই দুটি উপকরণ খুব ভালোভাবে ড্রাই স্কিনকে কোমল করে।

আর সবচেয়ে বড় কথা হলো এটা একদম তেলতেলে হবে না নারিকেল তেল আছে বলে।

উপকরণ

  • অর্ধেক কাপ মধু
  • ৩ চামচ নারকেল তেল
  • কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল

পদ্ধতি

  • মধুর মধ্যে নারকেল তেল দিয়ে ভালো করে মেশান। এর মধ্যে এবার ল্যাভেন্ডার অয়েল দিয়ে মিশিয়ে দিন।
  • এই ঘন প্যাকটা এবার মুখে লাগিয়ে রেখে দিন ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট মতো। তারপর গরম পানি দিয়ে মুখ থেকে ওই প্যাকটা তুলে ফেলুন।
  • এরপর পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে নিন।

ময়েশ্চারাইজড করুন

এত কিছু যে করলেন, এর পর সবশেষে করুন ময়েশ্চারাইজ। ময়েশ্চারাইজ করা মানে আপনার স্কিন এতক্ষণ ধরে যে যে উপকার পেল, তাকে লক করে রাখা।

আর ময়েশ্চার ধরে না রাখলে ড্রাই স্কিনের শুষ্কতা কমবে কি করে। তাছাড়া স্কিনে লাস্ট উজ্জ্বলতা ধরে রাখার জন্যও তো ময়েশ্চার করা দরকার।

আর ড্রাই স্কিনে ময়েশ্চার করুন শসা দিয়ে।

উপকরণ

  • কয়েক টুকরো শসার রস

পদ্ধতি

  • তেমন কিছুই করতে হবে না। শসা থেকে রস বের করে নিন। এই রস এবার আপনার মুখে আর গলায় লাগিয়ে নিন।
  • এরপর ১০ মিনিট রেখে মুছে ফেলুন। আপনি এরপর অবশ্যই কোনো ভালো হার্বাল ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতেই পারেন।
  • আর এখানেই আপনার ফেসিয়াল শেষ হবে।

কত সহজেই আপনি ঘরে বসে ফেসিয়াল করতে পারেন দেখলেন তো! আপনি সপ্তাহে এটা একবার করুন।

স্কিনও খুশি, মনও খুশি, তাই আপনিও খুশি।