Search
Close this search box.

আইব্যাগ বা চোখের নীচের ফোলা ভাব কমানোর ঘরোয়া উপায়

সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে নেটিজেনদের যদি প্রশ্ন করা হয় রাত জাগার অভ্যেস আছে? উত্তর কিন্তু হ্যাঁ-ই আসে।

এবার রাত জাগার ফলে যেসব সংকট এসে হাজির হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো চোখের তলায় কালি পড়া ও আইব্যাগ।

মানে চোখের নীচে ফোলা ভাব।

যদিও বয়সগত কারণ, দীর্ঘক্ষণ কান্না, এলার্জি বা ড্রিংকিং ইত্যাদির ফলেও চোখের নিচে জমতে পারে আইব্যাগ।

এইসব কারণে চোখের স্পর্শকাতর কোষ আহত হয়ে ভেঙে নিয়ে ফ্লুইড হয়ে চোখের তলায় জমা হয়ে ফুলে থাকে।

সৃষ্টি হয় আইব্যাগ।

আইব্যাগ জমার কারণ

  • এগজিমা
  • ড্রাগ নেয়া
  • মদপান
  • গ্লুকোমা
  • বংশগত কারণ
  • অপরিমিত ঘুম
  • থাইরয়েড
  • লিভারের দোষ
  • কান্নাকাটি

চোখের ফোলা ভাব বা আইব্যাগ কমানোর উপায়

চোখের আইব্যাগ বা ফোলা ভাব দেখতে খুবই খারাপ লাগে।

উপরে উল্লেখিত কারনের জন্য হলে আগে তা সমাধান না করলে এই ফোলা ভাব কমানো মুশকিল।

তবে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে অনেক সহজে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।

পানি পান মাস্ট

  • শরীরকে দিন পর্যাপ্ত তরল যা ত্বকের পক্ষে আবশ্যকীয়।
  • তাই চোখের স্ফীতি কাটাতে জলের যোগান খুবই প্রয়োজন।
  • সারাদিন কমপক্ষে ৩-৪লিটার জলপান অবশ্যই করুন।
  • সংবহন এর প্রধান মাধ্যমই হলো জল। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে জল ভুলবেন না।
  • শরীরে পর্যাপ্ত পরিমান জলের যোগান থাকলে তা চোখের নীচের ফোলা ভাব দ্রুত কমিয়ে দেয়। তাই জল পান করা মাস্ট।

টি ব্যাগ হোক সাথী

  • চা এর মধ্যে থাকা ট্যানিন চোখের ফোলা ভাব কমাতে খুবই কার্যকরী।
  • তবে সবচেয়ে ভালো হলো গ্রীন টি, যা এন্টি অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ এবং চোখের তলার অংশে রক্ত চলাচলকে স্বাভাবিক রাখে।
  • এরফলে ওই অংশে অতিরিক্ত ফ্যাট জমতে পারেনা। পাশাপাশি এটির ব্যবহার আপনাকে ইউভি রে এর থেকে রক্ষা করবে এবং এজিং প্রক্রিয়াকে করবে নিম্নমুখী।

যেভাবে ব্যবহার করবেন

  • চা বানিয়ে ভালো করে পাতা গুলোকে ছেঁকে নিন।
  • তারপর ফ্রিজে রেখে দিন আধঘন্টা মতো।
  • ঠান্ডা প্রলেপ আস্তে আস্তে চোখের নিচে লাগান ১৫-২০মিনিট ধরে।
  • তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
  • কিচ্ছুক্ষণের মধ্যে ফোলা ভাব দেখবেন গায়েব হয়ে গিয়েছে।

বিশ্বাস রাখুন এন্টি হিস্টামিনে

  • এলার্জির কারণেই আপনার চোখে জোলো ভাব ও লালচে ভাব আসে। ইরিটেশন ও দেখা যায়।
  • ডাক্তার এর সাথে কথা বলে এর মধ্যে কিছু মেডিকেশন নিতে পারেন। যেমন – বেনড্রিল, ক্লারিটিন ইত্যাদি।
  • এছাড়া, হেয়ার ডাই, মেকআপ এবং বিভিন্ন সোপ ব্যবহার করার সময় সতর্ক থাকুন। এগুলো থেকেও এলার্জি হয়ে থাকে।
  • ক্রনিক রোগ যদি থেকে থাকে তবে এসব এড়িয়ে চলুন।

ত্বকের উপযোগী যত্ন

  • মুখে অতিরিক্ত মেকআপ করবেন না। বিশেষ করে চোখে ডিপ আইলাইনার বা মাস্কারা ইউস করা থেকে বিরত থাকুন।
  • এসব থেকেই ব্রণ, ব্ল্যাকহেড হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • সান ট্যানিং থেকে বাঁচুন ও সময় মতো সানস্ক্রিন লাগিয়ে তবেই বাড়ির বাইরে বেরোন।
  • রাতে শুতে যাবার আগে মুখ ফ্রেশ করে তবেই ঘুমোন।
  • এই প্রতিটি বিষয় যদি খেয়াল করে করতে পারেন, তাহলে আইব্যাগের সমস্যা থেকে অনেক দূরে থাকবে আপনার সুন্দর দুটি চোখ।

খাদ্যাভ্যাসে আনুন পরিবর্তন

  • বয়স বাড়ার সাথে সাথে আইলিডের মাসল টিস্যু ভেঙে পড়ে। এরকম সময়ে ভিটামিন সি আপনার শরীরে খুব দরকারী হয়ে পড়ে।
  • আপনার শরীরে হ্যালুরণিক এসিড এর চাহিদা একমাত্র পূরণ করতে পারবে ভিটামিন সি।
  • ত্বকের স্বাভাবিক জেল্লা বাড়াতেও এর জুড়ি মেলা ভার।
  • আমিনো এসিড ও কোলাজেন উৎপাদন এর জন্য ভিটামিন সি এর এই সোর্স গুলি গ্রহণ করুন বেশি করে। কমলালেবু, ব্রকোলি, স্ট্রবেরি, স্প্রাউট ইত্যাদি।

লবনাক্ত খাবার চলুন এড়িয়ে

  • অতিরিক্ত নোনতা খাবার কিন্তু শরীরে ফ্লুইড ধরে রাখে এবং চোখের ফোলা ভাব বাড়ায়।
  • আমেরিকার হার্ট এসোসিয়েশন বলছে এডাল্টদের দৈনিক ২৩০০মিলিগ্রাম নুন শরীরে ঢোকা উচিত।

সল্ট মেজারমেন্ট এর হিসেব নীচে দেওয়া হলো

১/২ টেবিলচামচ (১১৫০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম)

৩/৪ টেবিলচামচ (১৭২৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম)

১ টেবিলচামচ (২৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম)

রেটিনলকে রাখুন রুটিনে

  • ত্বক ভালো রাখার জন্য কতই না ক্রিম ইউজ করেন আপনি। কিন্তু সেগুলোর ইনগ্রেডিয়েন্ট এর প্রতি লক্ষ্য দিতে ভুলে যান।
  • রেটিনল ক্রিম কিন্তু একনে, এজিং, সোরিয়াসিস এর জন্য কার্যকরী। জেল,ক্রিম ইত্যাদি ফর্মে পেয়ে যাবেন বাজারে।
  • ভিটামিন এ তে সমৃদ্ধ এটি। দিনে একবার লাগাবেন এবং আধঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন।

ঘুম দিন নিশ্চিন্তে

  • ঘুম কিন্তু ভাইটাল ফ্যাক্টর আপনার কমপ্লেক্সন এর ক্ষেত্রে। চোখের শ্যাডো কম ঘুমের ফলেই হয়ে থাকে ।
  • দিনে আটঘণ্টা ঘুমান স্ট্রেস ফ্রি হয়ে।
  • ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাবেন না ঘুমানোর আগে।
  • এলকোহলকে ধারেকাছে ঘেঁষতে দেবেন না।
  • টেলিভিশন, সেলফোন এর ব্যবহার ঘুমের ১ঘন্টা আগে থেকে বন্ধ রাখুন।

স্মোকিং এবং এলকোহল থেকে বাঁচুন

  • স্মোকিং স্কিন ডিপ্লিট করে আর এলকোহল আপনাকে করে তোলে ডিহাইড্রেটেড।
  • স্কিন এর রিঙ্কেল, কালার ফেডিং এর জন্যও দায়ী এরা।
  • কার্ডিওভাসকুলার জাতীয় রোগ থেকে বাঁচার জন্যও এসব থেকে দূরে থাকুন। কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এ রেখে আইব্যাগকে করুন জব্দ।