পা শুধু আমাদের চলনশক্তি যোগায় না, এটা আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা অঙ্গ।
সুন্দর পা পুরো শরীরের সৌন্দর্য শতগুণ বাড়িয়ে দেয়। পা কিন্তু শরীরের আয়নার মতই কাজ করে, শরীরে কোন রোগ থাকলে তার প্রতিফলন পায়েও কিছুটা পড়ে।
এই বিশেষ অঙ্গে ছোটখাট অবহেলা বা অসতর্কতা থেকে ঘটতে পারে ক্যান্সারের মত মরণব্যাধি রোগ, হতে পারে পা কেটে ফেলার মত গুরুতর অবস্থা।
ধারালো জিনিসের সংস্পর্শ ছাড়াও নানা কারণে পায়ের চামড়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷ শুষ্ক বা শীতল আবহাওয়া, ধুলাবালি, ঘাম, বিভিন্ন ধরণের রোগ, ওষুধ, এমনকি জুতা-মোজা থেকেও পায়ের চামড়া ছড়ে যেতে পারে।
পায়ের পাতা হচ্ছে সবচাইতে সংবেদনশীল অংশ, এখানেই সবচেয়ে বেশি ঘা হয়, চামড়া লাল হয়ে যায়, বা ছিলে যায়।
এই জাতীয় সমস্যা থেকে মুক্তির প্রধান এবং একমাত্র উপায় হচ্ছে পায়ের সঠিক যত্ন।
চলুন জেনে নেয়া যাক কি কি কারণে পায়ের চামড়ায় আকস্মিক কাঁটাছেড়া হতে পারে, এবং কি কি করলে এর প্রতিকার করা সম্ভব।
শুষ্ক আবহাওয়া/পরিবেশ
শুষ্ক আবহাওয়া/পরিবেশ পায়ের চামড়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করে সহজেই। আমরা বেশিরভাগ সময়েই দুই ফিতার চটি স্যান্ডেল পরে চলাফেলা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।
এতে করে বাইরের ধুলাবালি খুব তাড়াতাড়ি পায়ে আটকে যায়। পায়ের অন্য অংশের তুলনায় আঙ্গুলের ফাঁকে ফাঁকে ধুলা জমে যায় তাড়াতাড়ি।
ধুলা জমলে পায়ের স্বাভাবিক মসৃণতা ও আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে যায়, চামড়া খসখসে হয়ে যায়।
পায়ে চুলকানি শুরু হয়ে যায়, বেশি চুলকাতে থাকলে পায়ের চামড়া লাল হয়ে ফেটে যায়।
এই সমস্যা এড়াতে ধুলাবালি বেশি এমন জায়গায় হাঁটবেন না। খোলামেলা স্যান্ডেল যতটা সম্ভব কম পরবেন।
ভেজা আবহাওয়া/পরিবেশ
ভেজা আবহাওয়া/পরিবেশ থেকেও পায়ে সমস্যা দেখা দেয়।
সাঁতারুদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি বেশি দেখা যায় কারণ তাদেরকে সারাদিন ভেজা পরিবেশে থাকতে হয়৷ বিদেশে পাবলিক বাথ বা গণ-গোসলখানার ব্যবস্থাও আছে।
যারা পাবলিক বাথ ব্যবহার করে তাদেরকে বদ্ধ পরিবেশে সারাদিন ভেজা ফ্লোর, পানির ভিতর থাকতে হয়।
তাছাড়া বর্ষাকালে এমনিতেও ভেজা পা শুকাতে দেরি হয়।
ভেজা পরিবেশ থেকে এক ধরণের ইনফেকশন তৈরি হয়, যাকে ইংরেজিতে বলে অ্যাথলেট’স ফুট।
অ্যাথলেট’স ফুট হলে পায়ে ফুসকুড়ি, চুলকানি, সাদা সাদা ছোপ পড়ে যায়। আঙ্গুলের ফাঁকের, নিচের, বা উপরের চামড়া আলগা হয়ে খুলে পড়ে যায়।
অ্যাথলেট’স ফুট ছোঁয়াচে রোগ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ধারেকাছে থাকলে একজন সুস্থ ব্যক্তিও সহজে আক্রান্ত হয়ে যাবে।
আপনি যদি অ্যাথলেট’স ফুটে ভুগতে থাকেন তাহলে অন্যদের থেকে আলাদা থাকার চেষ্টা করবেন।
নিজের ব্যবহার্য জিনিসপত্র আলাদা রাখবেন। আলাদা ঘুমাবেন, যদি কারো সাথে ঘুমান তাহলে পায়ে মোজা পরবেন।
ঘায়ের জায়গাটা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে পরিষ্কার করবেন নিয়মিত।
ঠান্ডা আবহাওয়া
শীতকালেও পায়ের চামড়া দারুণ সমস্যার মধ্য দিয়ে যায়। ঠান্ডা আবহাওয়া অতিরিক্ত ঠান্ডা পা ফাটার জন্য দায়ী।
পা ফাটা বলতে সাধারণত গোড়ালির চামড়ায় ফাটল ধরাকেই বোঝায়।
গোড়ালি ফাটলে চামড়া খসখসে হয়ে যায়, ছোট ছোট মরা চামড়া আলগা হয়ে পড়েও যেতে পারে।
কারো কারো আবার গোড়ালি বাদেও পায়ের অন্য অংশের চামড়া ফেটে যায়।
পা নোংরা থাকলেও পায়ের বারোটা বাড়িয়ে ছাড়ে। বাইরে থেকে এসে পা না ধুলে বা নোংরা পরিবেশে থাকলে ময়লা চামড়ার সাথে আটকে যায়, আঙ্গুলের ফাঁকে জমা হয়।
নোংরা পা থেকে গন্ধ আসে, খোসপাঁচড়াসহ অনেক ধরণের চর্মরোগ হতে পারে। সময়মত চিকিৎসা না করালে পায়ে পচন ধরতে পারে।
পা সবসময় পরিষ্কার রাখবেন। চর্মরোগ হলে সঠিক চিকিৎসা করাবেন।
জুতা-মোজা
শুধু জুতা বা শুধু মোজা বা জুতা-মোজা উভয়ের সম্মিলিত অ্যাকশনে পায়ের ক্ষতি হতে পারে।
টাইট, রুক্ষ জুতা বা মোজা পায়ের অক্সিজেন চলাচল ব্যহত করে।
আবার ভেজা জুতা-মোজা থেকেও ইনফেকশন হতে পারে। নন-কটন মোজা এক অর্থে পায়ের জন্য বিষ।
আবার জুতার পেছন দিক থেকে ফোস্কা পড়াটা কমবেশি সবার ক্ষেত্রেই কমন।
যেসব কাজের জন্য হাই হিল পরা বাধ্যতামূলক, সেসব ক্ষেত্রে মর্টন’স নিউরোমা দেখা দেয়। আবার ব্যালে নাচের জুতা থেকেও মর্টন’স নিউরোমা হয়।
টাইট, রুক্ষ জুতা-মোজা থেকে পায়ে ফোস্কা পড়ে, চুলকানি হয়।
দীর্ঘসময় ধরে ভেজা জুতা-মোজা পরে থাকলে পায়ে গন্ধ হয়, ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হয়ে ঘা হয়ে যায়।
মর্টন’স নিউরোমায় পায়ের নার্ভগুলো চেপে গিয়ে অস্বস্তির সৃষ্টি করেয়।
সঠিক মাপের আরামদায়ক জুতার সাথে কটনের মোজা পরবেন সবসময়। চামড়া এবং নাইলনের জুতার বদলে রাবার বা তুলার জুতা পরবেন।
জুতার ভিতরের দিকটা রুক্ষ এমন জুতা না পড়লেই ভাল হয়।
সাবান
সাবান পায়ের ক্ষতিসাধনের জন্য আরেকটি বড় কারণ। অতিরিক্ত ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহারে পায়ের আর্দ্রতা কমে গিয়ে রুক্ষতা তৈরি হয়।
রুক্ষ পা দেখতে সাদা ও নিষ্প্রাণ দেখায়, পা চুলকায়, এবং চুলকানোর এক পর্যায়ে চামড়া ফেটে যায়।
সাবানের ব্যবহার যতটা পারবেন কম করবেন। সপ্তাহে একদিন পর একদিন সাবান ব্যবহার করলে পায়ের চামড়া ঠিক থাকবে।
সম্ভব হলে বেবি সোপ বা অন্য কোন মাইল্ড সোপ ব্যবহার করবেন।
অ্যালার্জি
সিজনাল অ্যালার্জি থেকে ডিসহাইড্রোসিস একজিমা হয়। অতিরিক্ত স্ট্রেস এই একজিমা আরো বাড়িয়ে তোলে।
আবার অনেক সময় জুতা, মোজা, কেমিক্যাল, সুগন্ধি থেকেও পায়ে অ্যালার্জি হয়।
ডিসহাইড্রোসিস একজিমার মূল লক্ষণ হচ্ছে ফোস্কা। বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে ফোস্কা থেকে ব্যথা, চুলকানি, চামড়া লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়।
যেসব কারণে অ্যালার্জি হয় সেসব থেকে শতহাত দূরে থাকবেন। ঋতু পরিবর্তনের সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন
এমনিতে ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরের জন্য উপকারী হলেও মাঝে মাঝে এটা আমাদের শরীরকে বিপদের মুখে ফেলে দেয়৷ আগে থেকেই যদি পা কাটা থাকে তাহলে বাইরে থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া কোন বাধা ছাড়াই সেই রাস্তা দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। ফলস্বরূপ পায়ে ভয়াবহ ইনফেকশন হয়।
এই ধরণের ব্যাকটেরিয়ার কারণে পায়ের চামড়া ফুলে যায়, পায়ে গরম অনুভব হয়, ঘা হয়, পায়ে প্রচন্ড ব্যথা হয়
পা কাটলে কোন অবস্থাতেই বাইরের ধুলাবালি বা ময়লার সংস্পর্শে যাবেন না।
পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ
পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ বা পিএডি বয়স্কদের পায়ের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি ডেকে আনে। পঞ্চাশোর্ধ বয়স্ক লোকজন এই রোগে বেশি ভোগেন।
ডায়বেটিস, হাই কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, ইউরিক এসিড এগুলো পিএডির অন্তর্ভুক্ত।
পিএডি শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, হার্টে ও পুরো শরীরের রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে।
শরীরে ইনফ্লামেশন তৈরি করে বলে এগুলোকে ইনফ্লামেটরি ডিজিজও বলা হয়।
এগুলো ছাড়াও মাঝে মাঝে ওষুধ থেকেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ইনফ্লেমেশন হতে পারে।
পিএডির কারণে পায়ে আগে থেকে যদি কোন কাটাছেঁড়া থাকে তাহলে সেটা সহজে শুকায় না, যেটা বয়স্কদের ক্ষেত্রে সবচাইতে কমন।
অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে পায়ের বেগুনি রঙ ধারণ, পায়ে ব্যথা, ফোস্কা ইত্যাদি।
আবার দেখা যায়, বুড়ো আঙ্গুলে প্রথমে লাল ঘা দেখা দেয়, পরে সেখান থেকে আলসার হয়ে যায়।
আলসার থেকে পচন এবং সবশেষে পা কেটে ফেলতে হয় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
পিএডি হালকা কোন জিনিস না। সঠিক খাওয়াদাওয়া ও ব্যায়াম পিএডির ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
সবচাইতে সহজ প্রতিকার হচ্ছে ছোটখাট কাটাতে ভ্যাসলিন লাগানো, যাতে এটা পরবর্তীতে না বাড়ে।
বিকল্প হিসেবে নারিকেল তেল আর অ্যান্টিসেপটিক পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। দুটো জিনিস পরিমাণমত মিশিয়ে কাটা জায়গায় আলতো করে লাগিয়ে নিবেন।
আলসার হয়ে গেলে খোলা বাতাসে পা মেলে রাখবেন, সময়মত ড্রেসিং করবেন।
পায়ের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান
ডাক্তারি ট্রিটমেন্ট ছাড়াও প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে পায়ের প্রাথমিক চিকিৎসা করতে পারবেন ঘরে বসেই।
মধু
মধুর ব্যবহার একদিকে যেমন ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন দমন করে, অন্যদিকে বাজারের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্রিম বা মলমের থেকেও অনেক ভাল কাজ করে।
চেষ্টা করবেন রান্না করা মধুর বদলে একদম খাঁটি মধু ব্যবহার করার।
রসুন
রসুনে থাকা অ্যালিসিন নামক রস এক ধরণের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান।
কাটাছেঁড়ায় রসুন লাগালে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রোধ হয়। এক কোয়া রসুন ছেঁচে নিয়ে তার রস ক্ষতস্থানে লাগান, ২০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন।
২০ মিনিটের বেশি দেরি হলে রসুনের রস ত্বকের ভাল কোষ নষ্ট করে ফেলতে পারে।
হলুদ
যেকোন ধরণের ক্ষত নিরাময়ের জন্য হলুদ খুবই কমন ও উপকারী একটি উপাদান। হলুদ রক্তক্ষরণ কমায়, জ্বালাভাব দূর করে।
আলু
কাটাছেঁড়া সারাতে আলু ব্যবহার করে দেখতে পারেন। পায়ে যেখানে কেটেছে সেখানটা ভালমত পরিষ্কার করে নিন।
এরপরে এক টুকরা আলু ধুয়ে কুচি করুন। এবারে কাটা জায়গায় কুচি করা আলু লাগিয়ে একটি পরিষ্কার সুতি কাপড় দিয়ে জায়গাটা পেঁচিয়ে নিন।
প্রতি চার ঘন্টা পরপর কাপড় আর আলু বদলাতে হবে।
টি ট্রি অয়েল
টি ট্রি অয়েল ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস দমনে জাদুর মত কাজ করে। সাধারণ ক্ষতস্থানে কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল লাগান, আর দেখে নিন জাদু নিজের চোখেই
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরায় আছে অ্যান্টিসেপটিক উপাদান এবং ভিটামিন ই, যা ছোটখাট ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি সারিয়ে তোলে।
অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেল বের করে সরাসরি ক্ষতের উপর লাগালেই ক্ষত সেরে যাবে।
নারিকেল তেল
বিশুদ্ধ নারিকেল তেলে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান কাটাছেঁড়া নিরাময়ের জন্য দারুণ কার্যকর। কাটা জায়গায় কয়েকবার শুধু নারিকেল তেল লাগালেই ভাল ফল পাওয়া যাবে।
লেবু
কেটে যাওয়া পায়ের চামড়া শক্ত হয়ে কড়া পড়া সারানোর জন্য লেবু একটি ভাল উপাদান।
লেবুর রস সরাসরি কড়ার ঠিক মাঝখানে দিলে উপকার পাবেন। যত বেশি লেবুর রস ব্যবহার করবেন তত তাড়াতাড়ি কড়ার চামড়া খসে পড়বে।
টমেটো
জুতা থেকে পড়া ফোস্কা সহজেই সারিয়ে তুলুন টমেটো দিয়ে।
যে জায়গাটা লাল হয়ে গেছে সেখানে এক টুকরা টমেটো চেপে ধরে জায়গাটা ব্যান্ডেজের কাপড় বা সুতি কাপড় দিয়ে ভালভাবে বেঁধে ফেলুন।
২০ মিনিট পরে খুলে ফেলুন। ফোস্কার ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে এটা করলে।
ক্যাস্টর অয়েল
রুক্ষ ও শুষ্ক পায়ে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
কুসুম গরম পানিতে পরিমাণমত ক্যাস্টর অয়েল আর লিকুইড সাবান মেশান, এরপর এতে পা ডুবিয়ে রাখুন।
তাহলে পায়ের চুলকানি কমে যাবে, আর্দ্রতা ফিরে আসবে।
পায়ের চামড়া ঠিক রাখতে যে ৯টি কাজ করা অত্যাবশ্যক
- প্রতিদিন পা ধোয়া জরুরি। পরিষ্কার পানি আর যেকোন বেবি সোপ দিয়ে প্রতিদিন পা পরিষ্কার করবেন।
- পা ধোয়ার পরে বা প্রতিদিন গোসলের পরে পা শুকিয়ে নেবেন নরম তোয়ালে বা সুতি কাপড় দিয়ে।
- জুতা থেকে পা বের করে খোলা বাতাসে পা কিছুক্ষণ মেলে রাখবেন, যাতে আঙুলের ফাঁকে থাকা ঘাম শুকিয়ে যায়।
- রাতে শোয়ার সময় কোন ভাল মানের ফুট কেয়ার ক্রিম বা লোশন পায়ে ব্যবহার করবেন।
- শীতকালে রাতে মোজা পরে ঘুমাবেন, এতে পা ফাটা রোধ হবে।
- পায়ের নখ কেটে ছোট রাখবেন সবসময়। ফ্যাশনের ঝোঁকে বড় বড় নখে আঙুলের চামড়া কেটে যাওয়া থেকে বাঁচার জন্য নিয়মিত পায়ের নখ কাটবেন।
- পায়ে জ্বালা বা চুলকানি হলে কোল্ড কম্প্রেস প্যাচ ব্যবহার করুন।
- ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারের সময় সাবধানে থাকবেন।
- বাড়ির বয়জ্যেষ্ঠ সদস্যদের দিকে খেয়াল রাখবেন। তাদেরকে তুলার জুতা কিনে দিতে পারেন, এগুলো বেশ আরামদায়ক হয় পড়তে, ফোস্কাও পড়ে না।
- যেসব খাবার থেকে ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ইউরিক এসিড বাড়ে সেসব খাবার তাদের দিবেন না। সম্ভব হলে তাদের জন্য রেগুলার হেলথ চেকআপের ব্যবস্থা করবেন।
- পায়ে কোন ধরণের কাঁটাছেড়া নজরে পড়লে এবং তা শুকাতে দেরি হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবেন।
যে ৬টি কাজ পায়ের জন্য বিপজ্জনক এবং আপনার এড়িয়ে যাওয়া উচিত
- ছোট সাইজের বা রুক্ষ ম্যাটেরিয়ালের জুতা, নন-কটন মোজা পরা।
- অনেকক্ষণ ধরে খালি পায়ে হাঁটা বা খোলামেলা চটি স্যান্ডেল পরা।
- ক্ষতস্থানে নখ দিয়ে চুলকানো।
- পা ভেজা অবস্থায় মুড়িয়ে রাখা বা ভেজা জুতা, মোজা পরা।
- ছোটখাট কোন ঘা কে পুরোপুরি অগ্রাহ্য করা।
- ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ক্রিম/ওষুধ লাগানো, বা ডাক্তারি চিকিৎসা মাঝপথে ছেড়ে দেয়া।
শেষ কথা
আপনি হয়তো ছোটখাটো কাটাছেঁড়া সহ্য করে গেলেন বা অবহেলা করলেন। কিন্তু মনে রাখবেন, এটাই ভবিষ্যতে বড় ধরণের ঝুঁকি ডেকে আনবে। তাই পায়ের আর্দ্রতা ঠিক রাখার চেষ্টা করবেন কিন্তু সেটা যেন অতিরিক্ত না হয়। পায়ে যাতে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো আর বাতাস লাগে সেটাও খেয়াল রাখবেন। ঘরোয়াভাবে পা সারাতে চাইলেও আগে ডাক্তারের সাথে কথা নেয়া ভাল। কারণ ঘরোয়া চিকিৎসা সবসময় সুফল নাও আনতে পারে। সর্বোপরি সুস্থ জীবনযাপন করুন, এতে আপনার পা-সহ পুরো শরীর থাকবে সুস্থ।