Search
Close this search box.

ত্বকের যত্নে পেয়ারা পাতা

ছোটবেলা থেকেই এটা জেনে আসছি পেয়ারা ফলের গুণাগুণ ও উপকারিতা।

এটি যেমন মজাদার তেমনি খুব উপকারী।

পেয়ারা ফলের অনেক উপকারিতা সম্পর্কে জানলেন কিন্তু এর পাতার রয়েছে বিশেষ গুণাবলী।

সেগুলো সম্পর্কে কি কোনো আইডিয়া আছে? 

হ্যা পেয়ারা ফলের মতই পেয়ারা পাতায় রয়েছে অনেক গুণাগুণ।

এটি আমাদের শারীরিক সুস্থতা থেকে শুরু করে ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী।  

পেয়ারা পাতার গুণাগুণ

পেয়ারা পাতায় রয়েছে এন্টি-ব্যাক্টেরিয়াল, এন্টি-অক্সিডেন্ট ও এন্টি-ইনফ্লেমাটরি প্রোপার্টিজ যা আমাদের নানা ধরণের অসুখ দূর কর‍তে ও ত্বকের যত্নে খুব বেশি কার্যকরী।

এটাকে প্রাকৃতিক কষ্ট উপশমকারী টোটকা বলা হয়। 

এটি প্রাকৃতিক ভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

জটিল স্টার্চকে সুগার হিসাবে রূপান্তরিত হতে বাধা দিয়ে পেয়ারা ওজন কমাতে সহায়তা করে। 

আপনি জেনে অবাক হবেন যে এটি ডায়াবেটিক্স জাতীয় রোগের ও প্রতিষেধক। 

পেয়ারা পাতার চা আলফা-গ্লাইকোসাইডিক এনজাইম এর কার্যক্রম কমিয়ে ডায়াবেটিকস রোগীদের রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কার্যকরভাবে হ্রাস করতে পারে।

ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে আসে।

১২ সপ্তাহ পর্যন্ত পেয়ারা পাতার চা খেলে আমাদের শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন না বাড়িয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয়।

ফলে ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে রাখে। 

ত্বকের যত্নে যেভাবে ব্যবহার করবেন

ত্বকের যত্ন নিতে পেয়ারা পাতার কোনো তুলনাই হয় না।

পেয়ারা পাতা আপনার ত্বকের উন্নতি করতে এবং বিভিন্ন ত্বকের অসুস্থতার চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যাপক সাহায্য করতে পারে। 

উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে

পেয়ারা পাতায় রয়েছে ভিটামিন-সি যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে খুবই কার্যকরী।

এটি নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত হিয়ে উঠবে।

রোজকার যে পলিউশনের মুখোমুখি হই আমরা তার থেকে মুক্তি পেতে পেয়ারা পাতা ব্যবহার করতে পারি। 

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

পেয়ারা পাতা কয়েকটি নিয়ে সেইগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে এটি সামান্য পানির সাথে মিক্স করুন।

পানি ও পেয়ারা পাতা একসাথে ব্লেন্ড করে নিন।

এমন ভাবে পেস্ট তৈরি করতে হবে যাতে খুব বেশি ঘন বা খুব বেশি তরল না হয়ে যায়।

থকথকে হবে অনেকটা। এটা পুরো ফেইসে লাগিয়ে ১৫/২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।

অল্প শুকিয়ে গেলেই ধুয়ে ফেলুন।

পিম্পল বা একনি দূর করতে

পেয়ারা পাতায় ভিটামিন-সি থাকার পাশাপাশি রয়েছে এন্টি-ব্যাক্টেরিয়াল প্রোপার্টি।

এটি ত্বকের খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলো কে ভিতর থেকে মেরে ফেলে যা পিম্পল হওয়া থেকে রোধ করে।

এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান পরবর্তীতে পিম্পল হওয়া থেকেও রোধ করবে। 

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

৮-১০ টি পেয়ারা পাতা একটু পানির সাথে মিশিয়ে ব্লেন্ডারের সাহায্যে ব্লেন্ড করে নিন।

এই মিক্সারে দিন ২ ফোটা টি-ট্রি এসেন্সিয়াল ওয়েল। 

এই পেস্ট ত্বকে লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।

শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

এন্টি এজিং হিসেবে 

পেয়ারা পাতায় উপস্থিত এন্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের ত্বকের এন্টি এজিং এর কাজ করে।

এই উপাদান টি আমাদের ত্বকের ফ্রি রেডিক্যালস গুলোকে ধ্বংস করে বার্ধক্য আসা রোধ করে।

প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি ও এন্টি-অক্সিডেন্ট মিলে, এটি আমাদের ত্বককে করে তোলে মসৃণ ও প্রাণবন্ত।

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

কয়েকটি পেয়ারা পাতা ১ লিটার পানিতে নিয়ে সেটা মিডিয়াম টু লো তাপে ফোটাতে থাকুন।

সেটা যখন আধা লিটারের কাছাকাছি চলে আসবে তখন চুলা বন্ধ করে দিতে হবে।

দেখা যাবে পানির রং পরিবর্তন হয়ে কিছুটা সবুজাভ রং ধারণ করেছে।

এরপর পানিটি ঠান্ডা করে ছেকে নিয়ে কোনো স্প্রে বোতলে সংরক্ষণ করতে হবে। 

প্রতিদিন টোনার হিসেবে এই পানিটি মুখে স্প্রে করলে ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়বে না। 

এলার্জি রোধে

পেয়ারা পাতায় রয়েছে এলার্জি ব্লক করার উপাদান।

যার ফলে আমাদের ত্বকের এলার্জি প্রতিরোধে এটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

এন্টি এজিং এর জন্য বানানো টোনারের মত করেই কয়েকটি পেয়ারা পাতা পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে।

ঠান্ডা করে স্প্রে বোতলে ভরে স্প্রে করলেই ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে।

এটি মুখে রিফ্রেশমেন্ট দিবে ও সতেজতা বাড়াবে। 

ব্লাক হেডস দূর করতে

আমাদের আশেপাশের দূষণের ফলে আমাদের ত্বকে ময়লা আটকে যায়।

ময়লা আটকে ব্লাক হেডস সহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয় যদি তা এক্সফোলিয়েট না করা হয়।

ক্লিঞ্জিং বা এক্সফোলিয়েট না করার কারনে জেদি ব্লাক হেডস বাসা বেধে বসে।

ফলে দূর করাও কঠিন হয়ে পড়ে।

কিন্তু পেয়ারা অয়াতার স্ক্রাব এই ব্লাক হেডস দূর করতে সাহায্য করবে। 

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

কয়েকটি পাতা নিন। অল্প পানিতে পিষে নিন। ব্লেন্ড করবেন না।

ব্লেন্ড করলে তা সম্পুর্ণ মিহি হয়ে যায়। ব্লেন্ড করলেও এমন ভাবে করতে হবে যেন দানাদার থাকে।

এর সাথে এড করুন অল্প কস্তুরি হলুদ।

বাসায় কস্তুরি হলুদ না থাকলে নরমাল হলুদ ও ব্যবহার করতে পারবেন। 

এই পেস্ট আপনার ব্লাক হেডস এর জায়গায় স্ক্রাব করুন।

ধীরে ধীরে টানা করতে থাকলে ব্লাক হেডস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে খুব শীঘ্রই।