চুলের বৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণ

চুলের জন্য চিন্তা? আর সেই চিন্তায় আপনার ঘুমের দফারফা? চুলের বৃদ্ধি হচ্ছে না ঠিকমতো বলে নিশ্চয়ই আপনার মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে?

টেনশন করবেন না। এরকম সমস্যা তো হতেই পারে। কিন্তু তাই বলে আপনি মুখ ভার করে বসে থাকবেন-এ কেমন কথা?

তার থেকে জেনে নিন কেন আপনার চুলের বাড় কমে যাচ্ছে, আর সহজে তার সমাধান করুন।

চুলের বৃদ্ধি বুঝি সত্যিই কমে?

চুলের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে—এটা কিন্তু একটা ভুল ধারণা। চুলের বৃদ্ধি কিন্তু সত্যিই কখনও বন্ধ হয় না।

কিছু কিছু কারণে আপনার চুলের বৃদ্ধি সাময়িক ভাবে কমে হয়ে যেতে পারে বটে। কিন্তু কখনই বন্ধ হয় না!

আর আপনার চুল দুর্বল হয়ে পড়লে ভেঙে যায়, তখন মনে হয় চুলের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে গেছে।

চুলে একদম তাপ লাগাবেন না

নানারকম হেয়ার স্টাইল করতে গিয়ে চুলে তাপ-টাপ দিয়ে বা চুল স্ট্রেট করে চুলের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন তো?

জানেন কি, চুলে ওই হিটই কিন্তু আপনার চুলের ভেঙে যাবার কারণ। কারণ অতি মাত্রায় তাপ চুলে লাগলে তা আপনার চুলের কিউটিকলের হাল খারাপ করে দেয়।

আর তার ফলেই চুল পড়েও যায়। চুলের বৃদ্ধিও কমে যায়। তাই এই হিট ট্রিটমেন্ট এবার বন্ধ করুন।

আর যদি একান্তভাবেই চুলে হিট দিতেই হয়, তাহলে হিট প্রোটেক্ট্যান্ট ক্রিম আর সিরাম ব্যবহার করুন। দেখবেন পুরো না হলেও খানিক উপকার পাচ্ছেন।

স্প্লিট এন্ডের সমস্যা?

চুল বড় রাখার ঝোঁকে চুল কাটতেই আর ইচ্ছে করে না নিশ্চয়ই? চুলের ডগা নিয়ম করে না কাতলে কিন্তু স্প্লিট এন্ডের সমস্যা হবেই।

আর স্প্লিট এন্ড মানেই জানেন, চুল ভেঙে যাওয়া। তাই স্প্লিট এন্ডকে যদি এড়াতে চান, তাহলে মাস তিনেক ছাড়া ছাড়া অন্তত ট্রিম করান।

স্ক্যাল্প ভালো যার, চুল ভালো তার

আপনার স্ক্যাল্পে যদি নানারকম প্রদাহ, ইনফেকশন, খুশকি থাকে, তাহলে চুল তো এমনিতেই বাড়বে না!

তাই স্ক্যাল্পকে কিন্তু পরিষ্কার রাখতেই হবে। আর তাতেও যদি না কমে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ময়েশ্চার আছে তো?

ভাবুন তো, আপনার চুল যদি রুক্ষ, শুষ্ক আর ড্রাই হয়, তাহলে এমনিতেই তো তার চৌদ্দটা বেজে যাবে।

তাই চুলকে ময়েশ্চারাইজড রাখা কিন্তু খুব দরকার। চুলে তেল দিন। হট অয়েল ম্যাসাজ করুন ভালো করে অন্তত সপ্তাহে একদিন।

আর রোজ শ্যাম্পু কিন্তু একদম করবেন না। ওতেও আপনার চুলকে রাফ করে তোলে। আর মাসে দু’বার হেয়ার স্পা কিন্তু করাবেন।

অতিরিক্ত চিন্তা

বুঝতেই পারছি এখনকার যা লাইফ স্টাইল, তাতে আপনি চাইলেও স্ট্রেস ফ্রি থাকতে পারবেন না।

অফিসে বসের চাপ, আর বাড়িতে বরের—আপনার হাল খারাপ জানি। কিন্তু তাও—ওর মাঝেও তো একটু চাপলেস থাকাই যায়, বলুন?

ভালো করে ঘুমান, ্নিশ্চিন্তে এক্সারসাইজ করুন। দেখবেন আপনার আনন্দে চুলও আনন্দে বাড়ছে!

ভুলভাল ডায়েট করবেন না

ভুলভাল ডায়েট করলেন বা ইচ্ছেমত খেলেন। মনের সুখ তো হলো। কিন্তু চুলের সুখ? সে আশায় গুড়ে বালি!

বেশি ঝাল-মশলা, তেল, ভাজাভুজি কিন্তু আপনার চুলের বারোটা বাজিয়েই দিতে পারে। আর ডায়েটে যদি ভিটামিন কম থাকে, তাহলে চুলের বৃদ্ধি কমেও যেতে পারে।

তাই হেলদি খাবার খান। দেখবেন আপনার খাবারে যেন ফেরিটিন, ভিটামিন বি ১২, জিঙ্ক—ইত্যাদি থাকে।

বয়সের চাপ

আর বয়সের সাথে সাথে শরীর দুর্বল হয়েই পড়ে। চুলও তাই। তাই মেনে নিন যে আপনার বয়স হয়েছে।

এখন আর আপনার চুল আগের মতো ফটাফট বাড়বে না।

আর ৪৫ এর পর চুলের স্বাভাবিক অয়েল প্রোডাকশন এমনিতেই বন্ধ হয়ে যায়, ফলে চুল সহজে শুকিয়েও যায়।

কাজেই মেনে নিন, দেখবেন তাহলে মেনে নেওয়াটা কত্ত সহজ হয়ে যাচ্ছে!

জেনেটিক কারণ

এই জেনেটিক কারণটা কিন্তু আপনার চুলের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার বাড়ির সকলের মাথায় টাক, তাহলে আপনি কি করে আশা করবেন আপনার একমাথা ঘন কালো চুল থাকবে, আর সেই চুল আবার ফটাফট বাড়বেও?

হাজার হোক, যত যত্নই করুন না কেন, বংশগতি বলে তো একটা জিনিস আছে, নাকি? আর ওই বংশগতি অনুযায়ী সব মানুষেরই নির্দিষ্ট চুলের বৃদ্ধি আছে।

তাই আপনার চুল যদি আর নাই বাড়ে, ধরে নেবেন ওটাই আপনার শেষ লেভেল! তাই মন খারাপ করবেন না।

তাহলে চুলের বৃদ্ধি কমার জন্য কোন কারণ দায়ী তা আজ জেনে গেলেন। এবার আরও ভালো করে চুলের যত্ন নিন।

দেখবেন চুলও বাড়ছে! আর আপনিও শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন।