চুল আমাদের সবার কাছেই খুব প্রিয়।
নারী হোক কি পুরুষ, আমরা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যদি দেখি যে আমাদের চুল ঠিক আমাদের পছন্দ মতো নয়, তাহলে আমাদের মন বেশ খারাপ হয়ে যায়।
তাই খুব জরুরি হলো আমাদের চুলের বৃদ্ধি বা গ্রোথ যাতে ভাল থাকে তার ব্যবস্থা করা।
আর তার জন্য শুধু কিছু প্রোডাক্ট বাইরে থেকে লাগানোই যথেষ্ট নয়, কিছু পুষ্টিকর খাবারও খেতে হবে।
আসুন তাহলে দেখে নিই সেগুলো কী কী।
পালং শাক
জানি অনেকেরই খেতে হয়তো খুব একটা ভাল লাগে না। কিন্তু চুলের বৃদ্ধির জন্য পালং শাক খুবই উপকারি।
চুলের বৃদ্ধির জন্য দরকার ভিটামিন এ এবং সি আর এই দুটো উপাদানই রয়েছে পালং শাকের মধ্যে।
এর পাশাপাশি পালং শাকে রয়েছে আয়রন, যা চুলকে মজবুত করে। চুলের মধ্যে রক্ত সরবরাহ করতেও আয়রন সাহায্য করে।
তাই চুলের জন্য পালং শাক খাওয়া অভ্যেস করুন।
বাদাম
শুধু বাদাম তেল অন্য তেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথায় মাখলে উপকার পাওয়া যাবে না।
তাই এবার থেকে বাদাম খান। বিশেষ করে পেস্তা ও কাঠবাদাম।
এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি আর জিঙ্ক, যা চুলের জন্য খুবই দরকারী।
সবজির দানা
আপনার চুলের বৃদ্ধির জন্য সবজির দানা কিন্তু খুব উপকারি।
দানায় থাকে ভিটামিন ই আর জিঙ্ক, যা চুলের বৃদ্ধি তো বটেই, চুলের অন্য নানা সমস্যা দূর করতে খুবই সাহায্য করে।
তাই আপনি হয় এমনি হোক, বা দানা শুকিয়ে নিয়ে পরে রান্নায় দিয়ে হোক, কিন্তু সবজির দানা খান।
এতে উপকার পাবেনই।
বিন্স
কোনও কিছু সুস্থ রাখার জন্য প্রোটিন খুবই দরকার। আর চুল তার স্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন বিন্স থেকেই নিয়ে নিতে পারে।
বিন্সকে তাই সঙ্গী করুন আর চুলের প্রোটিনের ভারসাম্য বজায় রাখুন।
মাছ
মাছ নিয়ে নতুন করে আর কী বলবো। আমাদের শরীরের জন্য মাছ যে কত ভাবে উপকার করে তা তো আমরা সবাই জানি।
কিন্তু চুলের জন্যও আলাদা ভাবে মাছের দিকে নজর দিন।
মাছে আছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আর ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যা আমাদের চুলের একান্ত আবশ্যিক উপাদান।
তাহলে বুঝতেই পারছেন যে চুল ভাল রাখতে মাছ খাওয়া কতোটা জরুরি।
গোলমরিচ
রান্নায় স্বাদ বাড়াতে গোলমরিচ ব্যবহার করেন তো জানিই।
কিন্তু এবার থেকে গোলমরিচ খাওয়ার আগে ভেবে নিন যে এটা আপনার চুলের জন্যও কতটা উপকারি।
গোলমরিচে আছে ভিটামিন সি যা চুলের জন্য খুবই জরুরি।
চুলের বৃদ্ধি ধরে থাকতে শুধু নয়, চুলের ডগা ফাটা, চুল পড়া বন্ধ করতেও খুব দরকারি হলো ভিটামিন সি।
তাই নিয়ম করে গোলমরিচ খান।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু খেতে যতটা মিষ্টি, ততটাই কাজেরও। এই মিষ্টি আলুতে আছে বিটা ক্যারোটিন, যা চুলকে ভিতর থেকে মজবুত করতে সাহায্য করে।
এর পাশাপাশি, বিটা ক্যারোটিন চুলের কোষ জন্ম নিতেও সাহায্য করে। আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় তাই মিষ্টি আলু রাখতেই পারেন।
ডিম
আমাদের চুলের একটি উপাদান হলো প্রোটিন। প্রোটিনের অভাবে চুল পড়ে যায়।
তাই চুলে প্রোটিনের সরবরাহ ঠিক রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি নির্ভর করতে পারেন ডিমের উপর।
এতে আছে প্রচুর প্রোটিন আর বায়োটিন। এর পাশাপাশি জিঙ্ক আর সেলেনিয়ামের মতো উপাদানও আছে ডিমে যা চুলের গ্রোথের জন্য খুব দরকার।
অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডো চুলে ভিটামিন ই সরবরাহ করে। একটি মাঝারি অ্যাভোকাডো ২১% ভিটামিন ই এর জোগান দেয় চুলে।
গবেষণা করে দেখা গেছে যে ভিটামিন ই নিলে চুলের গ্রোথ ৩৪.৫% মতো বেড়ে যায়।
আর ভিটামিন ই তো ফলিকল শক্ত করে, স্ক্যাল্পকে ভাল রাখে।
তাছাড়া এই অ্যাভোকাডো ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস, যা ছাড়া চুলের কোষ তৈরিও হবে না, মজবুতও হবে না।
সয়াবিন
সয়াবিন যে চুলের জন্য ভাল এটা আমরা সকলেই জানি।
সয়াবিনে থাকা স্পারমিডিন চুল লম্বা করতে সাহায্য করে। চুলের ভেঙ্গে যাওয়াও আটকায় এই সয়াবিন।
যে কোনও ভাবেই হোক, তাই সয়াবিন আপনার খাদ্য তালিকায় যোগ করুন।