লম্বা, স্বাস্থ্যকর ও জেল্লাদার চুলের সাধ কার না থাকে বলুন? চুলের আর্দ্রতা ও খাদ্য জোগানে তেলকে আমরা ব্রাত্য করে ফেলেছি প্রায়।
কারণ তেল জবজবে মাথা, চুলের সাইন ও লুক নষ্ট করে দেবে। তাই আমাদের অধুনা ভরসা হলো হেয়ার সিরাম ও ফোম।
কিন্তু বিশ্বাস করুন সুপ্রাচীন অয়েল ট্রিটমেন্টই চুলকে মজবুতি ও তার গুণগত মান ধরে রাখতে শক্তি যোগায়।
তবে যেমন তেমন করে নয়, শুদ্ধ আয়ুর্বেদিক উপায়ে চুলে তেল লাগান। আপনার ঘুম গাঢ় হবে, মনে স্থিরতা আসবে এবং চুল ও হবে ড্যান্ডড্রাফ ফ্রি।
আয়ুর্বেদিক উপায়ে চুলে তেল লাগানোর উপকারিতা:
- চুল হবে ঘন, কোমল ও জেল্লাদার।
- চুলে তেল লাগানোর পর পাবেন এক সুথিং ফিলিং যা আপনার ইন্দ্রিয়ের উদ্দীপক ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে।
- গবেষণা দ্বারা প্রমাণিত যে মুখের রিঙ্কেল এর সাহায্যে অনেক কম হয়েছে।
চুলের কোয়ালিটি বর্ধন:
- আয়ুর্বেদিক মতে ভৃঙ্গরাজ বা ব্রাহ্মী তেল চুলের যত্নের জন্য উৎকৃষ্ট। কিন্তু এটি লাগানোর মেথড মেনে চলাও দরকার।
- হেয়ার কোয়ালিটির উৎকর্ষ সাধন বলতে আমরা বুঝি চুলের অকালপতন, বার্ধক্য রোধ, আগা ফেটে যাওয়া এগুলোর উপশম । সাথে বেশি হেয়ার গ্রোথ বুঝে থাকি। এর জন্য তেল নিজের হাতের তালুতে মেখে আঙ্গুল দিয়ে বিলি কেটে মাথায় লাগান ফল পাবেন।
- ঘুমোতে যাবার আগে লাগিয়ে শুতে যান। সকালে উষ্ণগরম জল দিয়ে ওই চুল ধুয়ে ফেলুন। যাদের লম্বা চুল তারা ডেলি ওয়াশ না করে সপ্তাহে ২-৩বার ধুয়ে নেবেন।
- যখন তেল লাগাবেন নিশ্চিত করুন সমগ্ৰ স্ক্যাল্প জুড়েই যেন স্প্রেড করে । তেল চুলের উপরে নয় গোড়া বরাবর লাগান।
- পিত্তের সমস্যা থাকলে গরম তেলের ট্রিটমেন্ট এড়িয়ে যান।
খুশকির খসখসানী আর নয়:
- শীতকাল এলেই খুশকির দৌরাত্ম্য বাড়ে। শুস্কতা নিয়ে আসে ।ফ্লেকি ড্যান্ডড্রাফ, চুলকুনি ও ইরিটেশন হয় নিত্যসঙ্গী।
- এর থেকে মুক্তির জন্য হেয়ার অয়েল এর সাথে নিম, এলোভেরা জাতীয় হার্ব মিশিয়ে ফোটান। তারপর ঠান্ডা করুন।
- ধীরে ধীরে অল্প করে নিয়ে স্ক্যাল্প এর উপর স্নানের ১ঘন্টা আগে মালিশ করুন। তারপর গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- এন্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান চুলের গোড়ায় খুশকি জমতে দেবেনা । চুলকে করবে আরো রেশমী।
- অয়েল ম্যাসাজে সূর্যরশ্মি বা ধূলাবালির কারণে চুলের পুষ্টির যে ক্ষতি হয় তা পূরণ হয়। চুল আগের থেকে হয় নমনীয়।
মাথা যন্ত্রনা থেকে সুরাহা:
- যদি আপনি মাথা ধরার সমস্যায় ব্যতিব্যস্ত হন তবে তেল লাগানোর উপযুক্ত সময় হলো সন্ধ্যে ৬টার পর।
- আয়ুর্বেদিক মতে, মাথাযন্ত্রনা নিয়ন্ত্রণ করে বাত। যা কিনা বায়বীয় উপাদান । এবং সন্ধ্যার সময় এর প্রভাব সর্বোচ্চ হয়। তাই এই সময় চুলে তেল দেবার জন্য আদর্শ।
ঘুমে প্রশান্তি:
- চরক সংহিতাতে বর্ণিত -সারাদিনের ধকল কাটিয়ে উঠতে ঘুমানোর একঘন্টা আগে তেল মাখলে তা খুবই শান্তি ও স্বস্তি প্রদান করে।
- তিলের তেল এক্ষেত্রে খুবই উপযোগী।অকালপক্কতা, মাথা ধরা রোধ করতে তিল তেলের সমকক্ষ কেউ নেই।
- নারকেল তেলকে প্রথমে মাঝারি উত্তাপে ফুটিয়ে নিন। তারপর ঠান্ডা করে সেটা আলতো ভাবে মাথায় বুলিয়ে নিতে পারেন। সারাদিনের ক্লান্তি, গ্লানি দূর হয়ে যাবে। আরও ভালো হবে যদি গোলমরিচ এর গুঁড়ো মিশিয়ে দেন। এটি সাইনাস এর যেকোনো রোগ এর ক্ষেত্রে কার্যকরী।
- এছাড়াও অলিভ, আমন্ড এর তেল এর সাথে আয়ুর্বেদিক তেল মিশিয়ে লাগাতে পারেন।
তবে জ্বরে ব্যবহার করবেন না:
- জ্বর হলে মাথায় তেল দেবেন না। কারণ এইসময় আমাদের দেহ ত্বকের নিচের প্রণালী গুলি উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।
- তাই স্ক্যাল্পে তেল দিলে এইসময় গভীরে না পৌঁছে ব্লকেজ তৈরি করে । যা মাথা ভারাক্রান্ত করবে।
- এছাড়াও এইসময় তেল দিলে সর্দিকাশি বাড়াবে বই কমাবেনা।