Search
Close this search box.

ঘরোয়া পদ্ধিতে হেয়ার স্মুথিং করার উপায়

উজ্জ্বল, ঝলমলে, স্বাস্থ্যকর চুল পাওয়া আপনার তো ড্রিম, তাই না! কিন্তু এই সব পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়। চুলের ধরণ, চুল কত লম্বা, চুলের ঘনত্ব এই সব কিছুর ওপর নির্ভর করে আপনার চুলের স্বাস্থ্য। আর এই সবকিছুর ওপর নির্ভর করে আপনার চুলের জন্য কেমন এক্সপার্ট ট্রিটমেন্ট লাগবে। চুলের বিশেষ ট্রিটমেন্টগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হেয়ার স্মুথিং।

হেয়ার স্মুথিং কী

হেয়ার স্মুথিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্রিটমেন্ট চুলের জন্য। আপনার চুল যদি খানিক কোঁকড়ানো, ঢেউ খেলানো হয় সেক্ষেত্রে হেয়ার স্মুথিং আপনার জন্যই। এই রকম চুলের ক্ষেত্রে কিন্তু হেয়ার স্ট্রেটনিং খুব একটা কাজে দেয় না।

মূলত হেয়ার স্মুথিং পার্লারে বিশেষজ্ঞের অধীনে করা হয়, কিন্তু ঘরেও কিছু নিয়ম মেনে আপনি হেয়ার স্মুথিং করতে পারেন। এই বিশেষ ট্রিটমেন্ট আপনার চুলের কার্লি ভাব নরম রাখে, উজ্জ্বল রাখে। চুলের ‘লক’ ভাব আরও সুন্দর করে তোলে। সবচেয়ে বড় কথা, এই ট্রিটমেন্ট একবার করলে ৬ মাস পর্যন্ত কাজ দেয়।

ঘরে কীভাবে করা যেতে পারে

  • ঘরে করার ক্ষেত্রে দু’রকম ভাবে আপনি এটি ব্যবহার করতে পারেন। এক হলো, পার্লারের স্টাইলে আপনি ঘরে এটি করতে পারেন।
  • দুই হলো, ঘরোয়া ভাবে ঘরের জিনিস দিয়ে এই ট্রিটমেন্ট করতে পারেন। আমরা এখানে দুটি নিয়মই বলবো।

১. ঘরে বসে পার্লারের টাচ

এক্ষেত্রে আপনার যা যা লাগবে

কেরাটিন সলিউশন, ব্লো ড্রায়ার, মাইল্ড শ্যাম্পু, ফ্ল্যাট আয়রন, মোটা দাঁতের চিরুনি, হেয়ার মাস্ক।

পদ্ধতি

  • প্রথমে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। তারপর ব্লো ড্রায়ার দিয়ে চুল অল্প শুকিয়ে নিন। এতে চুলের সমস্ত ভিজে ভাব ভালো করে শুকিয়ে যাবে।
    এবার চুলকে চার ভাগে ভাগ করে নিন। প্রত্যেক ভাগে কেরাটিন সলিউশন ভালো করে লাগিয়ে নিন।
  • এবার মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিয়ে ১০ মিনিট মতো হাল্কা করে। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • বাজার থেকেই আগেই আপনি একটি ভালো হেয়ার মাস্ক কিনে এনেছেন। এবার সেই মাস্ক মাথায় লাগিয়ে নিন আর ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
    আর অবশ্যই তারপর একটা শাওয়ার ক্যাপ ব্যবহার করুন। ২০ মিনিট পর উষ্ণ জল দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন।
  • তারপর অবশ্যই ব্লো ড্রায়ার আর ফ্ল্যাট আয়রন ব্যবহার করে মাথায় এই ট্রিটমেন্টের উপকারিতা লক করে নিন।

মনে রাখতে হবে কিছু জিনিস

ঘরে এভাবে স্মুথিং করলে কিছু নিয়ম কিন্তু আপনাকে মানতে হবে।

  • অন্তত তিন দিন চুলে কোনও রকম পিন ব্যবহার করা যাবে না।
  • এই ট্রিটমেন্টের পর অন্তত তিন দিন শ্যাম্পু করা যাবে না। আর শ্যাম্পু করবেন মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে।
  • ১৫ দিন চুলে তেল দেবেন না এই ট্রিটমেন্ট করার পর।
  • চুল কন্ডিশিং করতে ভুলবেন না।

২. ঘরোয়া পদ্ধতিতে স্মুথিং

ঘরের উপকরণ দিয়ে কীভাবে এই স্মুথিং করা যায় দেখে নিন।

ক. নারকেল দুধ আর লেবুর রস

উপকরণ

হাফ কাপ নারকেল দুধ, ১ চামচ পাতিলেবুর রস।

পদ্ধতি

নারকেল দুধে লেবুর রস দিয়ে ভালো করে মেশান। এই মিশ্রণ ফ্রিজে সারা রাত রেখে দিন। পরের দিন এই মিশ্রণ চুলে, স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিন আর শাওয়ার ক্যাপ লাগিয়ে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার একটা মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। অবশ্যই উষ্ণ জল ব্যবহার করুন। সপ্তাহে এক দিন এটি করুন।

খ. ডিম, মধু আর অলিভ তেল

উপকরণ

ডিমের সাদা অংশ, ১ চামচ মধু, ১ চামচ অলিভ তেল।

পদ্ধতি

তিনটে জিনিস ভালো করে আগে মিশিয়ে নিন। একটা স্মুথ পেস্ট তৈরি হবে। এই পেস্ট এবার চুলে, স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট মতো অপেক্ষা করে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে শ্যাম্পু করে নিন। এটাও সপ্তাহে এক দিন করে করলে ভালো ফল পাবেন।

গ. কলার হেয়ার প্যাক

উপকরন

একটা কলা, তিন চামচ অলিভ তেল।

পদ্ধতি

আগে একটা পাকা কলা ভালো করে চটকে নিন। এর মধ্যে এবার খানিক অলিভ তেল নিয়ে ভালো করে একটা প্যাক মতো তৈরি করে নিন। তারপর ভালো করে এই প্যাক স্ক্যাল্পে, চুলে মেখে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শ্যাম্পু করে নিন ৩০ মিনিট পর। সপ্তাহে দু’দিন করলে খুব ভালো কাজ দেবে।

ঘ. দই আর ডিমের প্যাক

উপকরণ

দই ৩ চামচ, একটা ডিম পুরো, নারকেল তেল ২ চামচ, ক্যাস্টর অয়েল ১ চামচ, অর্ধেক লেবুর রস, কর্নফ্লাওয়ার।

পদ্ধতি

প্রথমে দই নিয়ে তাতে ডিম দিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এর মধ্যে অন্য উপকরণগুলো দিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এবার ঘনত্ব বাড়াবার জন্য অল্প কর্নফ্লাওয়ার দিন। এই মিশ্রণ চুলে লাগিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা। তারপর শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে এক দিন তো অবশ্যই করতে হবে।

এইতো কিছু সহজ পদ্ধতি। এবার চুলের পারফেক্ট স্টাইল করুন চুলের স্বাস্থ্য বজায় রেখেই।