চুলের একাধিক সমস্যায় কমবেশি সকলেই ভুক্তভোগী। চুল পড়া, ডগা ফেটে যাওয়া, রুক্ষ-শুষ্ক ভাব, লালচে রঙ হয়ে যাওয়া এইসব তো রয়েইছে। চুলের আর একটি গুরুতর সমস্যা হল রিসিডিং হেয়ারলাইন। নারী, পুরুষ নির্বিশেষে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
রিসিডিং হেয়ারলাইন আসলে কী?
রিসিডিং হেয়ারলাইন হল মাথার তালু বা স্ক্যাল্পের সামনের দিকের অংশ থেকে চুল উঠে ফাঁকা হয়ে যাওয়ার সমস্যা। অর্থাৎ মাথার ক্রাউন এরিয়ার চুল পাতলা হয়ে যায়। এই রিসিডিং হেয়ারলাইনের সমস্যা দেখা দিলে কপাল চওড়া হয়ে যেতে পারে পারে। চওড়া হতে পারে চুলের সিঁথির অংশ। মূল কথা হল মাথার সামনের অংশের চুল পাতলা হয়ে টাক পড়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। উল্লখিত সমস্যা গুলোর মধ্যে যেকোনও একটি আপনার দেখা দেয় তাহলে সময় থাকতেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন এবং অবশ্যই পরামর্শ নিতে হবে একজন বিশেষজ্ঞের। এছাড়াও প্রতিদিনের জীবনশৈলীতে কিছু নিয়ম মেনে চলাও প্রয়োজন।
কেন দেখা দেয় চুলের এই সমস্যা
রিসিডিং হেয়ারলাইন বা স্ক্যাল্পের ক্রাউন এরিয়া থেকে চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার সমস্যা বয়স বাড়লে অর্থাৎ এজিংয়ের কারণে দেখা যায়। এছাড়াও জিনগত ভাবে এই সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি চুলের সঠিকভাবে যত্ন না হলে এবং খাওয়া দাওয়ার অভ্যাস সঠিক না থাকলেও রিসিভিং হেয়ারলাইনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
রিসিডিং হেয়ারলাইনের সমস্যা দূর করার জন্য আপনি নিজে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন সেগুলো একনজরে দেখে নেওয়া যাক
খাদ্যাভ্যাস- চুলের যেকোনও সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রেই সবার আগে দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে নজর দেওয়া প্রয়োজন। পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ফল, সবুজ শাকসবজি, ড্রাই ফ্রুটস এইসব খাবারের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেলস, প্রোটিন। এই উপকরণগুলি চুলের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অয়েল ম্যাসাজ- চুলে নিয়মিত তেল ম্যাসাজ করতে হবে। এর জন্য নারকেল তেল, আমন্ড অয়েল, অলিভ অয়েল এইসব ব্যবহার করতে পারেন। মাথায় তেল ম্যাসাজ করলে আপনার স্ক্যাল্পে ভালভাবে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এছাড়াও খুলে যাবে হেয়ার ফলিকলগুলির মুখ। তার ফলে নতুন চুল গজাতে পারে। এছাড়াও চুলে তেল ম্যাসাজ করলে চুলের গঠন সুদৃঢ় ও মজবুত হবে।
শ্যাম্পু বেছে নিতে সাবধান- চুলে কোন ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করছেন তার উপরেও আপনার চুলের স্বাস্থ্য নির্ভর করবেন। শ্যাম্পু নির্বাচন করার সময় অবশ্যই দেখা নিন তা সালফেট এবং প্যারাবিন মুক্ত কিনা। কন্ডিশনারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এইসব রাসায়নিক ছাড়া শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ব্যবহার করে চুল এবং স্ক্যাল্পের দুইয়ের স্বাস্থ্যই ভাল থাকবে।
বাইরে বের হলে প্রয়োজন সুরক্ষা- রাস্তাঘাটে বেরোলে চুলকে রক্ষা করতে হবে রোদ, ধুলোবালি সবকিছু থেকেই। সম্ভব হলে পাতলা স্কার্প বা ওড়না জাতীয় কিছু চুলে বেঁধে নিন। আর রাস্তায় বেরোলে চুল খোলা না রাখাই ভাল। দূষণের চুলের মারাত্মক ক্ষতি হয়। একধাক্কায় বাড়তে পারে চুল পড়ার সমস্যা। উল্লিখিত পরামর্শগুলি তো বছরভর মেনে চলা প্রয়োজন। তাহলে চুলের অবস্থা অনেকটাই ভাল থাকবে। তবে সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার ব্যাপারে দেরি করলে চলবে না।