Search
Close this search box.

স্বাস্থ্যকর ও ফিট থাকার জন্য পরিমিত ঘি ও তেল-এর ব্যবহার

বিজ্ঞান বলছে আমরা দৈনিক যে ক্যালোরি অর্জন করি তার ২০-৩০% আসা উচিত ফ্যাট জাতীয় খাদ্য থেকে।

এর থেকে ফ্যাট এর পরিমাণ বেশি হলে সেটা অতিরিক্ত হয়ে আমাদের দেহ কোষের প্রাচীরে জমা হয় এবং রক্ত সঞ্চালনে বাধা দেয়। 

অতিরিক্ত ফ্যাট গ্রহণ এবং ব্যায়ামের অভাব হার্টএটাক, ব্রেস্টক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হাইপার টেনশন এবং জয়েন্ট পেনের মতো রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

কিন্তু এইসব রোগের ভীতি আপনাদের খাদ্যে ঘি ও তেলের উপস্থিতি কমাতে পারবে না।

মনে রাখবেন খাদ্যাভ্যাসে ফ্যাটের সঠিক ব্যালেন্স আমাদের এনার্জির যোগান দেয়, ওজন কমায় এবং স্বাস্থ্যকর অনুভূতি নিয়ে আসে।

কিছু অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাট আছে যা আমাদের নার্ভাস সিস্টেম, ব্রেন এবং হরমোন উৎপাদনের জন্য জরুরি।

ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ ও হরমোন কোষে কোষে পৌঁছতে সহায়তা করে। যেটার অভাবে আমাদের প্রভূত ক্ষতি হতে পারে।

ডাক্তারের অভিমত ঘি তেলের ব্যাপারে

  • ডাক্তারী পরামর্শ মতো ২-৩ টেবিল চামচ তেল ও ২ টেবিল চামচ শুদ্ধ ঘি রোজকার ডায়েটে কার্যকরী ভূমিকা নেয়।
  • বিখ্যাত ডায়েটিসিয়ান রজুকা দিবাকর এর মতে, সাধারণ ফিল্টার্ড বা কোল্ড প্রেসার্ড বাদাম ,সর্ষে, তিল ও নারকেল তেল রান্নার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে কিন্তু রিফাইন্ড অয়েল নৈব নৈব চ।
  • ঘি সঠিক পরিমানে ব্যবহৃত হলে তা এন্টি-এজিং ও ফ্যাটবার্নিং উপাদান হিসেবে কাজকরে।
  • বাঙালী রান্নায় যথেষ্ট ঘি তেল এর ব্যবহার হয়ে থাকে। পরোটা, লুচি, কচুরি, সিঙ্গাড়া, তেলেভাজা ও নানান ভাজাভুজিকে টেস্টি বানানোর জন্য এগুলো ইউজ করেই থাকি।
  • বর্তমানে রেস্টুরেন্টে খাবার হ্যাবিট চমক প্রদভাবে বেড়ে গেছে। পিৎজা, বার্গার ও ফ্রেঞ্চফ্রাই এর প্রতি লোভ অতিরিক্ত ঘি ও তেলের ইনটেক ও বাড়াচ্ছে।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন

  • ঘি-তেল ছাড়া খাবার এর তালিকা পছন্দ করুন।
  • জাঙ্ক ফুডস তত বর্জন করুন।
  • নিজের নিয়ম নির্ধারণ করুন যে একমাত্র উৎসব-পার্বনেই ডিপ ফ্রায়েড জিনিস গুলি চেখে দেখবেন তাছাড়া নয়।

রোস্টেড গ্রেভি ভেজিটেবলস রেসিপি

  • এই লেখার মূল উদ্দেশ্য হলো আপনাদের দৈনিক ডায়েটে লো ফ্যাট যুক্ত খাদ্য সংযুক্ত করে সার্বিক ঘি-তেলের অধিগ্রহণ কমানো এবং স্বাস্থ্যকর থাকা।
  • সেইজন্য আপনাদের একটি মজাদার রেসিপি শেয়ার করছি যাতে মাত্র ২ টেবিল চামচ বাটার ব্যবহার করা হয় এবং এর স্বাদ কোনো রিচগ্রেভির চেয়ে কমনা। আলুর দম ও চানা মসলাতেও এই গ্রেভি ইউজ করে দেখতে পারেন।

উপকরণ

  • ৫০০ গ্রাম পনির
  • টমেটো ৭টা
  • পেঁয়াজ ৪টা
  • কাজু ২০-২৫টা
  • রসুন ১০-১২টা
  • আদা ১টা
  • কাঁচামরিচ ২টা
  • দারচিনি ২টা
  • এলাচ ২টা
  • লবঙ্গ ৩টা
  • কালো গোলমরিচ ১০টা
  • ২ টেবিলচামচ বাটার
  • ২ কাপ পানি
  • ১ টেবিল চামচ কাশ্মিরি লঙ্কার গুঁড়ো
  • লবন পরিমাণ মতো
  • গার্নিশিং এর জন্য ধনেপাতা

পদ্ধতি

  • কড়াইতে ২ কাপ জল ও বাটার ২ চামচ দিয়ে গরম হতে দিন। ৫ মিনিট পর তাতে সমস্ত সব্জিগুলো দিন এক এক করে।
  • ১০ মিনিট ধরে সেগুলো বয়েল হতে দিন এবং সেই সময়ে মসলা গুলো ক্রাশ করে নিন।
  • সবজি সেদ্ধ হয়ে এলে সেগুলো ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। এবার কড়াই আবার বসিয়ে অল্প তেল দিয়ে ফোটান ও তেল গরম হলে সব্জির পেস্ট দিন। জল মেশাতে পারেন গ্রেভির থিকনেস কেমন চান তার উপর।
  • এবার ক্রাশড মসলা ছড়িয়ে দিন ও কাঁচালঙ্কা গুলো চিরে ফেলে দিন এবং ২০ মিনিট মতো ফোটান।
  • গ্রেভির থেকে সুন্দর গন্ধ বেরোলে তাতে পনির এর টুকরো যোগ করুন আর লবন ছড়িয়ে দিন। এরপর আরো ৫-৭ মিনিট নেড়ে রান্না করুন।
  • তারপর উপর থেকে ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে গরম গরম সার্ভ করুন পনির গ্রেভি আমরা অনেক সময় পরোটা তেলে ভেজে খাই যার মধ্যে অনেকটা ঘি ও তেল থাকে। সেটা না করে আমরা যদি প্যানে বেক করে পরোটা খাই তার উপর খানিক ঘি দিয়ে তবে ক্ষতি অনেক কম হয়। লেচি গুলো কম মোটা বানান। স্টাফিং দিলে তা যেন বেশি ভারী না হয় ও চাটনি ও দই দিয়ে খেতে পারেন।

খাবারে ঘি তেল কাঁট ছাঁট করার টিপস

  • সকাল সকাল দুধ ফুটিয়ে রেখে সারাদিন তা সংরক্ষণ করুন রেফ্রিজারেটর এ।এতে তার ক্রিম অনেকটা ঝরে যাবে। এরপর সেটা দিয়ে দই বানালে তা আপনার শরীরে অনেক লেস ফ্যাট নিয়ে আসবে।
  • ধোঁকা, ফ্রায়েডমোমো, কচুরি, কাটলেট ও পাকোড়ার মতো ডিপ ফ্রায়েড আইটেম গুলোর থেকে স্টিমড ডিশ যেমন ইডলি, ধোসা, ঢোকলা বা আপাম খেতে পারেন।
  • ভেজ উপমা, পোহা, খিচুড়ি, ওটস, উত্তপম এর মত ডিশ রাঁধুন ব্রেকফাস্ট এরজন্য।
  • বাদাম, মুগডাল, ছোলা, রাজমা ইত্যাদি ব্যবহার করে নানা চাট সহ স্ন্যাকস বানাতে পারেন পরিবারের জন্য যা হবে সুস্বাদু ও কম তেলতেলে।হালকা মসলা বা স্প্রাউট স্প্রিংকল করেও খেতে পারেন।
  • খাবারে ডিপিং হিসেবে ধনেপাতার চাটনি বা তেল বিহীন আচার আনতে পারেন।
  • ফ্রায়িং প্যানে জিরে ও হিং ছড়িয়ে কম ঘি ও তেলে ভেজে নিতে পারেন। তার উপর মশলা ছড়িয়ে খেতে পারেন।
  • কম তেলে রান্নায় স্বাদ আনতে কালো মরিচ, পুদিনা, রোস্টেড পেঁয়াজ, রসুন ও জিরে ব্যবহার করুন।

আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার

  • এপিটাইজার মেকার কিনুন ননস্টিক ওয়ালা যাতে ডালডা ম্পলিং, পাকোড়া, টিক্কি, কোফতা বানাতে পারবেন।
  • কোন ফেকসন মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করুন বেকড সবজি, সিঙ্গারা, পনির, চিপস ও ধোসা নামমাত্র তেলে বানানোর জন্য।
  • এয়ারফ্রায়ার ও ওটিজি দিয়ে সুস্বাদু চিকেনটিক্কা, স্যান্ডউইচ বা মিটগ্রিল অথবা চপ ইত্যাদি সহজেই বানিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন।