মাথার চুলই, তার ব্যক্তিত্বের পরিচয়। ঘন, কালো, সুন্দর চুল, প্রায় সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
চুলের যত্ন নিতে এই তিনটি ঘরোয়া তেলই যথেষ্ট।
আমলকির তেল
ভিটামিন সি-এর আধিক্য থাকায়, আমলকি চুলের জন্য দারুণ উপকারী।
এই কারণেই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে আমলকির এত গুনোগান।
যেভাবে তৈরি করবেন
১০০ গ্রাম আমলাগুরো একটা পাত্রে নিয়ে তাতে বেশ খানিকটা জল মিশিয়ে ফুটাতে থাকুন।
কিছুক্ষণ পর দেখবেন তাপমাত্রায় জলের পরিমাণ প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে।
এবং আমলকির একটা ঘন মিশ্রণ তৈরি হয়েছে।
সেটাকে ছেকে নিয়ে আলাদা একটি পাত্রে রাখুন।
এরপর আর একটা পাত্রে ২৫০ গ্রাম নারিকেল তেল এবং তিলের তেলের একটি মিশ্রণ তৈরি করে, তাতে ২০ গ্রাম আমলা গুঁড়ো আরো মেশান।
আমলকির ঘন মিশ্রণটাও এতে যোগ করুন। এখন তাপ কমিয়ে এই সমগ্র উপকরণগুলি কে ফোটাতে থাকুন যতক্ষণ না পর্যন্ত পেস্ট-টি ঘন না হয়।
সুগন্ধের জন্য চাইলে, এতে লেমন এসেনশিয়াল অয়েল খানিকটা, মেশাতে পারেন।
ঠান্ডা হবার পর এই অয়েলটি-কে আপনার চুলের গোড়ায়, আঙ্গুলের সাহায্যে ভালো করে মিনিট কুড়ি মেসেজ করুন।
অতঃপর ১ ঘন্টা ওয়েট করুন। এখন, ভালো যে কোন শ্যাম্পু সাহায্যে চুল ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে অন্তত পক্ষে তিন দিন, এটি ব্যবহার করুন।
পেঁয়াজের তেল
পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে সালফার থাকে যা চুল পড়া রোধ করে এবং নতুন গজাতে সাহায্য করে।
যেভাবে তৈরি করবেন
প্রথমেই ৫ টি মাঝারি সাইজের পিয়াজ কেটে নিন। এর সঙ্গে সমপরিমাণ নারকেল তেল ও ২ চা চামচ কালোজিরা দিয়ে মিশ্রণটিকে ফুটিয়ে নিন।
ততক্ষণ পর্যন্তই ফোটাবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত পেঁয়াজের কালার গোল্ডেন ব্রাউন না হয়।
এবারে মিশ্রণটি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে একটি পরিষ্কার ছাঁকনির সাহায্যে কাচের বাটিতে ছেঁকে তেল বের করে নিন।
এই তেল, অতঃপর স্কাল্পে, আঙুলের সাহায্যে যত্ন সহকারে ১৫ মিনিট ধরে মেসেজ করুন।
ম্যাসাজ শেষ হবার এক ঘন্টা পরে নর্মাল ওয়াটার এ চুল ধুয়ে ফেলুন।
এক্ষেত্রে মনে রাখবেন, শ্যাম্পু কোন ভাবেই ইউজ করা যাবে না।
সপ্তাহে অন্ততপক্ষে তিন দিন এই পদ্ধতিতে তেল-টি ইউজ করুন।
নিম তেল
নিম তেল ব্যবহারে খুশকি দূর হয়, চুল নরম, সিল্কি এবং লম্বা হয়। অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ হয়।
যেভাবে তৈরি করবেন
প্রথমেই আপনি একবাটি নিম পাতা নিন, ওই নিমপাতা গুলিকে বাটুন। অতঃপর সমপরিমাণ নারকেল তেল নিয়ে ওই বাটা নিমপাতা সঙ্গে মেশান।
এবারে ওই মিশ্রণটিকে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ফুটিয়ে নিন।
এই মিশ্রণটি ততক্ষণ পর্যন্তই ফোটাবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ঐ মিশ্রণটি মধ্যে কোন জলীয় অংশ থাকবে না।
এখন একটি পরিষ্কার সাদা কাপড়ের সাহায্যে মিশ্রণটি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে, ছেঁকে তেল বের করে নিন। ব্যাস আপনার তেল তৈরি।
অতঃপর আঙ্গুলের সাহায্যে মিনিমাম ১৫ মিনিট ধরে মেসেজ করুন।
ম্যাসাজ শেষ হয়ে যাবার এক থেকে দেড় ঘন্টা পরে, নর্মাল ওয়াটার-এ, কম ক্ষারযুক্ত শ্যাম্পু সাহায্যে, আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে অন্তত পক্ষে তিন দিন এই তেল ব্যবহার করুন।