Search
Close this search box.

মুখে বরফ লাগানোর নিয়ম

এই গরমে ত্বকের যত্নে বেশ কার্যকরী একটি উপাদান হলো বরফ।

বহু বছর আগে থেকেই ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা হতো বরফ।

যুগে যুগে এই প্রথাটি রূপ সচেতন নারীদের কাছে আরো বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

বরফের বিশুদ্ধ পানি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। বিশেষ করে ত্বকের জন্য এটি আরও বেশি উপকারী।

শরীর থেকে সব টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে পানি।

আইসকিউব বা বরফও ঠিক একই কাজ করে এবং আমাদের ত্বককে পরিষ্কার করে।

ত্বকে বরফ ব্যবহার-এর উপকারিতা 

প্রচণ্ড তাপদাহে বা অধিক গরমে অনেক সময় ত্বক ঝলসে যাওয়া কিংবা ত্বক জ্বালাপোড়া করে।

এক্ষেত্রে বরফের কয়েকটি টুকরো হাতে নিয়ে বা কাপড়ে মুড়িয়ে ত্বকে ঘষে নিতে পারেন।

তবে বাহিরে থেকে আসার ২০-৩০ মিনিট পর এটি ব্যবহার করতে হবে তার আগে না৷ 

অনেক সময় ত্বক আর্দ্রতা হারিয়ে শুষ্ক হয়ে যায়। তখন মুখমন্ডলের টিস্যুগুলোতে পানির অভাব দেখা দেয়। 

ত্বকের মরা কোষ দূর করতে ও আর্দ্রতা বজায় রাখতে বরফ অত্যন্ত কার্যকরী।

ত্বককে টানটান রাখতে বরফ কিন্তু খুব ভালো কাজ করে

একটি পরিষ্কার কাপড়ে বরফ নিয়ে স্কিনে রাব করতে পারেন।

এতে করে ত্বক অনেক বেশি ঠান্ডা হবে এবং রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যাবে। ফলে ত্বক টানটান হয়ে উঠবে। 

ত্বক এক্সফোলিয়েট করার জন্য বাইরের কোনও কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে না চাইলে বরফ হতে পারে আপনার পছন্দের উপকরণ।

এক্ষেত্রে বাড়িতে দুধ দিয়ে তৈরি আইসকিউব ব্যবহার করতে পারেন।

দুধে ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকার কারণে তা ডেড স্কিন পরিষ্কার করে, ত্বক হয় উজ্জ্বল ও মসৃণ৷ 

শসা গ্রাইন্ডারে দিয়ে পেস্ট করে নিন। এরপর লেবুর রস মিশিয়ে বরফ করে রাখুন।

রোদ থেকে ফিরে এই বরফ লাগালে রোদা পোড়া ভাব দূর হবে সেই সাথে ত্বক ঠাণ্ডা হবে।

অ্যালোভেরা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ভালো একটি ময়েশ্চারাইজার।

আর তুলসিপাতার উপকারের কথা আলাদা করে বলার কিছু নেই।

অ্যালোভেরা রসের সাথে তুলসি পাতা বেটে বরফ তৈরি করুন। সপ্তাহে ৩ থেকে ৪দিন লাগাতে পারেন।

মেকআপ করার আগে ত্বককে প্রস্তুত করে নেয়ার প্রয়োজন

সেক্ষেত্রে দুই টুকরো বরফ পাতলা সুতি কাপড়ে নিয়ে মুখ, গলা ও ঘাড়ের অংশে ১০ মিনিট ম্যাসাজ করে নিলেই ত্বক একদম কোমল ও নরম হয়ে উঠবে।

এরপর মেকআপ ব্যবহার করলে, মেকআপ অনেক দীর্ঘসময় স্থায়ী হবে।

ফেসিয়াল থ্রেডিংয়ের পর অনেকেরই মুখে র‌্যাশ হয়। মুখে মিনিট পাঁচেক বরফ ঘষে নিলেই র‌্যাশ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।

আইব্রো বা আপারলিপ থ্রেড করার আগে ওই অংশে কিছুক্ষণ বরফ চেপে ধরুন। এতে ব্যথার অনুভূতি কম হবে।

ব্রণ ও রোদে-পোড়া দাগ কমাতে পুদিনাপাতা পেস্ট করে পানির সাথে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি বরফ করে সেটা স্কিনে ম্যাসাজ করতে পারেন।

ত্বকের পোর মিনিমাইজ করতে বরফের জুড়ি নেই। নিয়মিত ত্বকে বরফ ব্যবহার করলে ত্বকের 

পোরসগুলো ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসে। যার ফলে স্কিনকে অনেক বেশি স্মুথ এবং মসৃণ দেখায়। ত্বকে লালচে র‍্যাশ থাকলে বরফ ঘষলে র‍্যাশ দূর হয়ে যায় ।

আমাদের ত্বকের অকাল বার্ধক্যের একটা বড় কারণ হলো বলিরেখা

আইস কিউব বা বরফ মুখে ঘষলে মুখে যেমন সহজে বলিরেখা হয় না, তেমনিই হয়ে থাকলে তা কমে যায়।

অক্সিজেনের অভাবেই ত্বকের চামড়া কুঁচকে যায়। বরফ সেই অক্সিজেনের জোগান দিয়ে স্কিন আবার টানটান করে।

অনেক সময় গরমের কারণে চোখে ব্যথা, চুলকানি ও জ্বালাপোড়া শুরু হয়। এমন পরিস্থিতিতে বরফের টুকরো দিয়ে চোখে ম্যাসাজ করতে পারেন। 

অনেক সময় ঘুম থেকে ওঠার পর কিংবা ঘুম কম হলে ত্বক কিছুটা ফুলে থাকে। অনেক সময় ক্লান্তির কারনে চোখের নিচে ফোলা ভাব থাকে। 

এই সমস্যার সমাধান হতে পারে বরফ। ত্বক বা চোখের নিচ ফুলে থাকলে কিছুক্ষণ বরফ দিয়ে ম্যাসাজ করুন। ফোলা ভাব অনেকটাই চলে যাবে। 

আন্ডারআর্মের দুর্গন্ধ রোধ করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন বরফ। লেবুর রস দিয়ে বরফ তৈরী করে সপ্তাহে ২-৩ দিন আন্ডারআর্মে ব্যবহার করুন।

এতে করে বাড়তি ঘাম এবং দুর্গন্ধ  নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 

বর্তমানে গ্রিন টি ভীষণ জনপ্রিয় একটি পানীয়। 

শুধু ফিট থাকতেই নয় অনেকে ত্বক ভালো রাখতেও নিয়মিত পান করেন গ্রিন টি।

এই গ্রিন টি ঠান্ডা করে জমিয়ে ব্যবহার করুন ত্বকে। ত্বক সতেজ করে তুলতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে গ্রিন টি। 

গরমকালে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটা হয় তা হলো বাম্পস। বাম্পস মূলত কপালের উপরে ছোট ছোট পিম্পল-এর মত হয়।

সোজা কথায় বলতে গেলে অনেকটা ঘামাচির মতো। এগুলো মূলত প্রচণ্ড গরমের কারণে হয়ে থাকে।

তাই এর জন্য প্রয়োজন স্কিনটাকে একটু ঠান্ডা রাখা।

বাম্পস এর জন্য একটি পরিষ্কার কাপড়ে ১-২ টুকরো বরফ নিয়ে স্কিনে রাব করুন দিনে একবার এবং রাতে একবার ঘুমাতে যাওয়ার আগে। 

ত্বকে বরফ ব্যবহারের সতর্কতা  

অনেকেই ভাবে বরফ ব্রন দূর করে, কিন্তু বরফ ব্রণের প্রদাহ আরো বাড়ায় ।  

ত্বকের যত্নে যেমন বরফ খুবই ভালো, আবার মাত্রাতিরিক্ত বরফ ঘষলেও সেটা ভালো ফল দেয় না ।

ত্বকে অল্প সময়ের জন্য গতিশীলভাবে বরফ ব্যবহার করতে হবে। নয়তো অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় ত্বকে পোড়াভাব দেখা দিতে পারে।

মুখে বরফ লাগানো ভালো, তবে বেশিক্ষণ করলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।

এটি ত্বকে চুলকানি এবং রেডনেস এর সৃষ্টি করতে পারে। ত্বকে সরাসরি বরফ ব্যবহার করবেন না।

একটি কাপড়ে পেঁচিয়ে ব্যবহার করবেন। না হলে এর ফলে ফ্রস্ট বাইট হতে পারে। যার কারণে ত্বকে ডেড সেলস তৈরি হয়।

এছাড়াও অতিরিক্ত বরফ ব্যবহারে ঠোঁটে এবং মুখে র‍্যাশ এর সৃষ্টি হতে পারে। ড্রাই স্কিন হলে বরফ ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।