Search
Close this search box.

দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে যা যা করা উচিৎ

চোখ আমাদের শরীরের সবচেয়ে সেন্সিটিভ একটা অংশ।

এটি আমাদের শরীরের অতি জরুরি একটি অংশ যার যত্ন নেয়া আমাদের জন্য আবশ্যক।

আমাদের চোখ খুবই স্পর্শকাতর এবং অত্যন্ত মূল্যবান।

আমরা নিজেদের অজান্তেই কিছু ভুলের মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার জন্য দায়ী। 

আমাদের সারাদিন কাটে নানা ব্যস্ততায় যার অধীকাংশ কাটে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস এর উপর।

বিভিন্ন ধরনের গেইম থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেইসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম বা মেসেঞ্জার, এসবের মধ্যেও কাটে আমাদের সারাদিন।

যার দিকে দিনের পর পর কাজ করা ও ব্যবহার করার মাধ্যমে আমরা আমাদের দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে নিয়ে আসছি। 

কিন্তু আমরা সেই অনুযায়ী আমাদের চোখের যত্ন নিতে পারছি না বা করছি না বলা যেতে পারে।

কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললেই আমাদের চোখের যত্ন নেয়া সম্ভব।  সেইগুলো জেনে নেয়া যাক।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করার উপায়

১. সমস্ত প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান গ্রহণ করা

আপনার খাবারের মধ্যে এখনি যোগ করুন কিছু রঙ-বেরঙের সবজি ও ফল যেমন পালং শাক, লাল শাক, গাজর, বিট রুট, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।

এছাড়াও ওমেগা ৩, ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। এই খাবারগুলো ভিটামিন, পুষ্টি, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। 

এই জাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে এটি আমাদের চোখের জন্য অত্যাধিক পুষ্টি সরবরাহ করে যা আমাদের চোখের বেশিরভাগ সমস্যা এবং দৃষ্টি-সম্পর্কিত সমস্যাগুলি প্ররিরোধ ও কমাতে সহায়তা করে।

২. সবসময় প্রতিরক্ষামূলক চশমা পরুন

চোখ যেহেতু খুবই সেন্সিটিভ অংশ তাই আমাদের প্রতিদিনের কাজে কর্মে প্রতিরক্ষামূলক চশমা পরা উচিৎ।

কেউ আঙ্গিনায় কাজ করা অবস্থায় বা যখন খেলাধুলা করছে সেই সময় গুলোতে আঘাত বা ময়লা ঢুকে যাওয়ার রিস্ক থাকে।

তাই এসব ঝুঁকি এড়াতে সর্বদা প্রতিরক্ষামূলক চশমা পরা ভালো। 

বিশেষ করে পলিকার্বোনেট থেকে তৈরি চশমা ব্যবহার করুন। এগুলি কঠিন এবং আপনার চোখকে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে পারে।

৩.  সানগ্লাস পরিধান করা 

সানগ্লাস কেবল স্টাইল এর জন্য নয় বরং আপনাকে  ক্ষতিকারক ইউভিএ (UVA) এবং ইউভিবি (UVB) রশ্মির হাত থেকে আপনার চোখকে সুরক্ষিত করতে এগুলি একটি বিশাল ভূমিকা পালন করে।

সূর্যের রশ্মির জন্য আমাদের চোখে অনেকগুলি দৃষ্টি-সম্পর্কিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

যেমন ম্যাকুলার ক্ষয় এবং ছানি পরা।

সানগ্লাস পরলে, এটি কমপক্ষে ৯৯ শতাংশ ইউভিএ এবং ইউভিবি রশ্মি গুলিকে ব্লক করে চোখ কে প্রটেকশন দেয়।

তাই সানগ্লাস পড়া খুবই জরুরি। 

৪. যখন তখন চোখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকুন 

চোখে যখন তখন বা হুট হাট হাত দেয়া যাবে না। কারণ এটি আপনার চোখকে সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

আপনার চোখ জ্বালা করে এমন কিছু আপনার দৃষ্টি প্রভাবিত করতে পারে।

হাতে নানা রকমের জীবাণু বা ময়লা থাকতে পারে যা চোখ স্পর্শ করলে সেটা চোখের জন্য ক্ষতিকর।

আপনার চোখ স্পর্শ করার আগে আপনাকে অবশ্যই আপনার হাত পরিষ্কার করতে হবে।

এছাড়াও, আপনার চোখটি জোরে জোরে ঘষবেন না। এর ফলে কর্নিয়াল ঘর্ষণ বা স্ক্র্যাচ কর্নিয়া হতে পারে।

যদি আপনার চোখে কিছু পড়ে যায় তবে সেগুলি জীবাণুমুক্ত স্যালাইনের দ্রবণ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

পানির ঝাপটা দিয়েও দূর করা সম্বব। 

৫. পর্যাপ্ত ঘুম

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে সেটা চোখের উপর খুব প্রভাব ফেলতে পারে।

সারাদিন চোখের উপর যে ক্লান্তি যায় সেটা দূর করতে প্রয়োজনীয় ঘুম দরকার। 

কিন্তু সেটা চোখ না পেলে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আর ধীরে ধীরে দৃষ্টি শক্তি কমার ও আশংকা দেখা যায়। 

৬. বেশি বেশি পানি পান করতে হবে

পানি হচ্ছে সকল রোগের ঔষধ। চোখ কে ভিতর থেকে পরিষ্কার ও এর দৃষ্টি ভালো রাখতে  হলে অবশ্যই বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। 

৭. ধুমপান না করা

ধুমপান স্বাস্থের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি এটি চোখের দৃষ্টি শক্তি কমাতেও তেমন ই প্রভাব ফেলে।

সিগারেট এর ধোয়া চোখকে শুষ্ক করে দেয় ফলে জ্বালা ভাব, ছানি পড়া ও চুলকানোর মত অসুবিধা দেখা দেয়।

যারা চেইন স্মোকার তাদের চোখে ছানি পড়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি।

এমনকি ৫-১০ বছর বা তার বেশি ধরে যারা ধূমপান করছেন বা তামাকজাত দ্রব্য চিবোচ্ছেন, তাদের চোখের স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে।

সেক্ষেত্রে অন্ধত্ব ও হয়ে যাওয়ার প্রবণতা খুব বেশি। 

৮. সবুজ গাছপালা দেখা

চোখের দৃষ্টির জন্য খুব ভালো কাজ করে সবুজ গাছপালার রঙ।

সকালে উঠে সবুজ গাছপালার দিকে বিরতি দিয়ে দিয়ে তাকিয়ে থাকলে চোখের দৃষ্টি ভালো হয়।  

৯. ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস কম ব্যবহার করা

যতটুকু সম্ভব ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস কম ব্যবহার কর‍তে হবে।

এর ক্ষতিকর রশ্মি চোখের দৃষ্টি শক্তি ককিয়ে আনতে পারে ও খুব তাড়াতাড়ি চোখের অন্যান্য সমস্যা নিয়েও হাজির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ও রয়েছে।

আই ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করার সময় চোখ পিট পিট বেশি করতে হবে আর কিছুক্ষণ পর পর দূর দৃষ্টিতে অন্যদিকে তাকিতে থাকতে হবে। 

১০. মেক-আপ ব্যবহারে সাবধানতা

মেক আপ করার সময় যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যাতে কোন ভাবেই মেক আপ চোখের ভিতর না চলে যায়।

কেমিক্যাল বেইজড হওয়াতে এটা চোখের জন্য ক্ষতিকর।

তাই মেক আপ করা ও সেটা তুলে ফেলার সময় ও খুব যত্নের সাথে তুলে ফেলতে হবে।  

১১. চোখের ব্যায়াম করা

চোখের ব্যায়াম করা চোখের জন্য খুব ভালো। কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চোখের কিছু মুভমেন্ট চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।