Search
Close this search box.

আইস কিউব ফেসিয়াল করার উপায়

গরম হোক বা খরা রৌদ্রের দাবদাহ, তাৎক্ষনিক স্বস্তি পেতে আমরা কিন্তু খুলে বসি রেফ্রিজারেটর এর ডোর। সাথেসাথে মুখেচোখে এসে লাগে ঠান্ডা হাওয়ার পরশ যা জুড়িয়ে দেয় মন প্রাণ। তার মধ্যে রাখা বরফ এর কুচি আমরা পানীয় ও খাবারে ব্যবহার করে থাকি ঠিকই কিন্তু সেটা যে ফেসিয়াল উপকরণ হয়ে উঠতে পারে একথা বোধয় ভেবে দেখি না।

চলুন দেখে নিই আপনার বেহাল ত্বককে সুস্থ ও সতেজ রাখার নতুন ঠিকানা যা এবার থেকে পাকা জায়গা করে নেবে আপনার রোজকার রূপচর্চার রুটিনে।

আইস ফেসিয়াল কি?

নাম শুনেই বোঝা যায় যে বরফ বেসড এই ফেসিয়াল যেটা একধরনের ঠান্ডা অনুভুতিদায়ক থেরাপি যা আন্তর্জাতিক স্তরে ক্রায়ো থেরাপি নাম খ্যাত। এই ফেসিয়ালে আপনার স্কিন ন্যাচরালি হিল হয় এবং পুনর্যৌবন ফিরে পায়।

একদিকে কোনো কেমিক্যাল উপাদান থাকে না তাই এর জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে অন্যদিকে এটি সময় সাশ্রয়ী আর খরচসাপেক্ষ ও নয়।

আইস ফেসিয়াল বানানোর এর কিছু আইডিয়া

আইস ফেসিয়াল এর জন্য ভিড় ঠেলে পার্লার এ ছুটোছুটি নিষ্প্রয়োজন। বাড়ি বসেই মনের আরামে আপনি ইটা ট্রাই করতে পারেন।

প্রথম পদ্ধতি

উপকরণ

ফ্রিজারে রাখার আইস ট্রে ও পরিমান মত জল

প্রণালী

ট্রে-তে পরিমান মত জল ঢেলে ভর্তি করে নিয়ে ফ্রিজে বেশ খানিকক্ষণ রেখে জমাট বেঁধে গেলে টুকরো গুলো মুখে ঘষে ব্যবহার করতে পারেন। যাদের কাছে সময় কম তারা চটজলদি উপায়ে মুখ রিফ্রেশ করে নিতেই পারেন।

দ্বিতীয় পদ্ধতি

উপকরণ

শসা ও গোলাপ জল

প্রণালী

শসার খোসা ছাড়িয়ে টুকরো করে কেটে ফেলুন। তার সাথে মেশান গোলাপজল বা রোজ ওয়াটার। এরপর অল্প তাপে মিশ্রন টিকে সেদ্ধ করে নিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে ছাকনি নিয়ে স্কুইস করে ছেঁকে নিয়ে মিশ্রনটা কিউব ট্রেতে ঢেলে ফ্রিজার এ জমিয়ে বরফ এ পরিনত করুন।

তৃতীয় পদ্ধতি

উপকরণ

১ কাপ পরিমান দুধ, ১ কাপ নারকোল তেল ও ১ কাপ পরিমান চাল ধোয়া জল।

প্রণালী

একটা ডাবল রো যুক্ত ট্রে নিন। তারপর একটি রো তে দুধ ও নারকোল তেল সমপরিমানে মিশিয়ে সেই সল্যুসন ঢালুন। তার পাশের ট্রেতে দুধ ও চাল ধোয়া জল সমপরিমানে মিশিয়ে সেটা দিয়ে পূর্ণ করুন। এবার রেখে দিন জমাট বাঁধার জন্য। দুধ এর প্রধান গুন হলো এটি প্রাকৃতিক এক্সফলিয়েটর এর কাজ করে ডেড স্কিনসেল তুলে দিতে সাহায্য করে।

চতুর্থ পদ্ধতি

উপকরণ

১ কাপ পরিমান ডাবের জল ও ১ স্লাইস অ্যালোভেরা।

প্রণালী

অ্যালোভেরার একটা স্টিক নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে জেল বের করে নিন। সেটার থিকনেস কমাতে ছাকনি দিয়ে ছেঁকে নিন। তার সাথে মেশান ডাবের জল পরিমান মত। ফ্রিজারে দিন জমার জন্য। এলোভেরা ও ডাবের সুথিং প্রপার্টিজ ব্রনর প্রকোপ কমায় এবং স্কিনকে ব্যাকটেরিয়ার হাত থকে রক্ষা করে ।

পঞ্চম পদ্ধতি

উপকরণ

গ্রিন টির নির্যাস ১ কাপ ও ২ টেবিলচামচ এসেনসিয়াল অয়েল।

প্রণালী

গ্রিন টির সাথে এসেনসিয়াল অয়েল মিশিয়ে মিশ্রনটা রেফ্রিজারেট করলেই কেল্লা ফতে।এই বরফ এ প্রচুর এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে সাথে থাকে ক্যাফেইন যা স্কিনের নানা সমস্যার উপসমে ভীষনভাবে কার্যকরী।

আইস ফেসিয়াল এর ব্যবহার বিধি

  • আইস ফেসিয়াল ট্রাই করার আগে কিছু আবশ্যিক নিয়ম আছে যেগুলি মেনে চললে এটার ম্যাজিকাল এফেক্ট আরও বেশি ফলপ্রসু হয়ে থাকে।
  • ফেসিয়াল এর আগে মুখ ফেস ওয়াশ দিয়ে ভালকরে পরিস্কার করে নেবেন।
  • সরাসরি কিউব মুখে নেবেন না। একটা পরিছন্ন সুতির টাওয়েলে মুড়ে বরফ মুখে এপ্লাই করবেন।
  • ম্যাসাজ করবেন চক্রাকারে ভালো রেজাল্টস পেতে। ততক্ষন করবেন যতক্ষণ বরফ সম্পূর্ণ গলে না যায়।
  • ফেসিয়াল এর শেষ স্টেপ ভুলবেন না। সেটা হলো ময়েশ্চারাইজার এর প্রয়োগ।ময়েশ্চারাইজার এর বোতলটিকে এর জন্য কিছুক্ষণ গরমজলের মধ্যে রেখে ঈস্দুষ্ণ করে করে নিয়ে লাগাবেন।
  • যাদের ঠান্ডার ধাত বা এজমার সমস্যার আছে তাদের এই ফেসিয়াল না করাই ভালো হবে।

ফেসিয়াল এর হাইলাইট পয়েন্ট

ফেসিয়াল করার সময় মুখের বিশেষ কিছু অংশের প্রতি খেয়াল দিতে হয় যাতে সেই জায়গা গুলোর দীপ্তি বাড়ে ও যত্ন সঠিকভাবে হয়। মিনিমাম ২মিনিট সময় দেবেন ফেসিয়াল করার সময়।

  • জ-লাইন
  • ঠোঁট
  • নাক
  • গাল
  • কপাল

কেন এই আইস ফেসিয়াল?

  • আইস ফেসিয়াল রুক্ষ বিবর্ণ ত্বকের বন্ধু। কালচে ফ্যাকাশে বা সানবার্নে পোড়া দাগছোপ দূর করে, ত্বকের ক্লান্তি কমায়।
  • অনিদ্রা বর্তমান যন্ত্রজীবনের সঙ্গী। চোখের নিচে সবারই ডার্ক সার্কেলের গ্রহন লেগেই থাকে সেই জন্য। কাপড়ে পেঁচিয়ে চোখের তলায় ফেসিয়াল করুন এতে চোখের সতেজতা ও আসবে সাথে ফোলাভাব ও কমবে।
  • একদিকে এটি যেমন ত্বকের সংক্রমন ঠেকায় তেমনি জ্বালা বা প্রদাহের আক্রমন থেকেও বাঁচায়।
  • ত্বকে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। সঞ্চালন বাড়লে ত্বকের পোরস গুলি ছোট হয় ফলে মসৃনতা বহুগুনে বেড়ে যায়।
  • ত্বকের টিস্যুর মেরামত করে যার ফলে অকালবার্ধক্য দূর হয়। রিঙ্কেলের চান্স থাকেনা।
  • সারাদিন এর খাটাখাটনির পর আপনার ত্বকের তেল ও ম্যাড়মেড়েভাব দূর করবে এই ফেসিয়াল। জেল্লার সাথে সাথে গালে ছড়িয়ে দেবে সজীব গোলাপী আভা।
  • এটি লোমকুপের জমে থাকা ময়লা নিষ্কাসন করে ও টানটান রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে ব্রণ ও ব্লাকহেডস হবার আশঙ্কা নির্মূল হয়।