এদেশের এই প্রচন্ড গরম আবহাওয়ায় এমনিতেই ত্বকের উপর নানা বিরূপ প্রভাব ফেলে।
তার পাশাপাশি সূর্যের প্রখর রশ্মিতে পুড়িয়ে দিচ্ছে আমাদের সেন্সেটিভ ত্বক।
এদেশের আর্দ্র আবহাওয়ায় ঘামছেও প্রচন্দ মানুষ, যার ফলে দেখা দিচ্ছে পানি-স্বল্পতা।
বাইরের বাতাসে ভেসে বেড়ানো ধূলা বালি, এই ঘাম এবং রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বক- এসবের সমন্বয়ে মুখে হাতে পায়ে দেখা দিচ্ছে নানা রকম র্যাশ।
এই র্যাশ একটা সময়ে সেরে গেলেও , পিছনে ফেলে যাচ্ছে কালো কালো ছোপ, যা নষ্ট করে দিচ্ছে শখের স্কিনটাকে।
কিভাবে অর্গানিক উপায়ে , ক্ষতিকর কেমিক্যাল এভোয়েড করে, চেহারা এবং হাত পায়ের ত্বকের পূর্বের গ্লো ফেরত পাওয়া যাবে, তা নিয়েই গ্ল্যামোজেনের আজকের আয়োজন।
মসুরের ডাল এবং এর উপকারিতা
মসুরের ডালে রয়েছে ভেজিটেবল প্রোটিন এবং প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি।
একারণে শুধুমাত্র খাদ্য হিসেবেই নয়, বরং রূপচর্চার কাজেও অনেক প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই ডাল।
ফার্মান্টেশন করে, এই ডালের স্টার্চটুকুকে প্রতিদিন ব্যবহারে, তাৎক্ষণিক পরিবর্তন দেখবেন না কেমিক্যালের ব্লিচের মতো।
তবে মাসখানেক ব্যবহারে নিজেই টের পাবেন ত্বকের পরিবর্তন।
ত্বক আগের থেকে অনেক বেশি গ্লো করবে।
কালো স্পট, সান বার্নের জন্য কালো ছোপ পড়া ত্বক অনেক ফ্রেশ হবে। সেই সাথে সিম্পল বা র্যাশ ওঠাও আগের থেকে কমে যাবে।
নিয়মিতভাবে মাস ছয়েক ব্যবহারে আপনি নিজেই নিজের স্কিনকে চিনতে পারবেন না যে গত গ্রীষ্মেও এই স্কিন কেমন বাজে কন্ডিশনে ছিল!
এবং কেমিক্যাল সেরামগুলো ব্যবহার করা থামিয়ে দিলে ত্বকে যে উইড্রল ইফেক্ট পড়ে, তা এই ন্যাচারাল উপয়াদানে তৈরি সেরাম ব্যবহারের ক্ষেত্রে হবে না।
মসুরের ডালের সেরাম
উপকরণঃ
১. ৫ টেবিল চামচ মসুরের ডাল
২. এলোভেরা জেল
৩. গ্লিসারিন
৪. গোলাপজল
৫. ভিটামিন ই ক্যাপসুল
৬. লেবুর রস
প্রস্তুতিঃ
১. প্রথমে ৫ টেবিল চামচ পরিমাণ ডাল পাত্রে নিয়ে, পরিমাণমতো পানিতে ডুবিয়ে সারা-রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে।
২. সকালে সেই পানিসহ ডালটা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করতে হবে আর সামান্য কিছু পানি এড করে।
৩. এরপর পুরো দ্রবণতা পানি ছাঁকার ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে একটা পাত্রে রসটা রাখতে হবে।
৪. ৩ টেবিল চামচ এলোভেরা জেল নিয়ে দ্রবণটার সাথে ভালোমতো গুলিয়ে নিতে হবে। যেন ভালো করে মিশে যায়, আলাদা দানা দানা না থাকে।
৫. এরপর ২ টেবিল চামচ লেবুল রস, ৩ টা ভিটামিন ই ক্যাপসুল, ২ চামচ গ্লিসারিন এবং ২ চামচ গোলাপ জল দিয়ে ভালো করে গুলিয়ে মিশাতে হবে ।
৬. মিশ্রণটি একটা ঢাকনিসহ পাত্রে ঠান্ডা করতে হবে।
ব্যাস হয়ে গেল মসুরের ডালের সেরাম।
ব্যবহারবিধিঃ
প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে, মুখ- হাত- পা ভালো করে ধুয়ে এরপর এই সেরামটা লাগাতে হবে। সকালে অবশ্যই ধুয়ে ফেলতে হবে।
এই সেরামটা নরমাল ফ্রিজে রাখতে হবে।
নিয়ম করে সব সময় ফ্রিজে রাখলে এবং এলোভেরা গাছের বদলে, বাজারের কৌটায় ওয়েল প্রিজার্ভড এলোভেরা জেল ব্যবহার করলে, এই মিশ্রণটি ২ সপ্তাহ টানা ব্যবহারের মতো মেয়াদ পাবেন।
তবে রেগুলার ইউজে, ২ সপ্তাহের আগেই ফুরিয়ে যাবে।
নারী – পুরুষ উভয়েই এই সেরাম ব্যবহার করতে পারবেন।
বাজারের কেমিক্যাল জাতীয় ক্রিমে প্রচুর পরিমাণে ব্লিচ এবং মার্কারি থাকে।
এগুলো ব্যবহারের সাথে সাথে আপাতঃদৃষ্টিতে ত্বককে ব্রাইট এবং দাগহীন দেখালেও এর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে।
সুদূর ভবিষ্যতে স্কীন ক্যান্সার সহ কিডনি ফেইলরের সমূহ সম্ভাবনাও রয়েছে।
তাই এসকল ক্ষতিকর কেমিক্যাল সমৃদ্ধ প্রডাক্টের বদলে, ন্যাচারাল হার্বাল প্রডাক্ট ব্যবহার করা বেশি নিরাপদ।
এই হার্বাল প্রডাক্টগুলো ব্যবহারের সুফল কিছুটা দেরীতে প্রকাশ ফেলেও, এটার দ্বারা ক্ষতির পরিমাণ শূণ্যের কাছাকাছি হয়, যদি না এলার্জি থাকে সেই নির্দিষ্ট প্রডাক্টে।
আর গ্ল্যামোজেন বরাবরই স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে কাজ করে আসছে।
আর সে লক্ষ্যেই ছিল আজকের আয়োজন।