ম্যানিকিওর এবং পেডিকিওর তো অনেকেই করেন। পার্লারে গিয়ে কয়েক ঘণ্টা কাটালেই একেবারে চকচকে হয়ে বেরিয়ে আসা যায়। কিন্তু সত্যি বলতে নিয়মিত পার্লারে গিয়ে যে খরচ হয় এবং এর জন্য যে সময়টা ব্যয় করতে হয়, তার কোনওটাই অনেক সময় করে ওঠা সম্ভব হয় না। তার উপর লকডাউন তো আছেই।
তবে নিয়মিত হাত-পা-নখের যত্ন নেওয়ার জন্য আপনার কিন্তু পার্লারে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আজ আপনাদের জানাবো সহজ ৭টি স্টেপ এবং সঙ্গে কিছু টুলস- যা দিয়ে আপনারা বাড়িতেই খুব সহজে ম্যানিকিওর এবং পেডিকিওর করে ফেলতে পারবেন।
এর জন্য আপনাদের যে যে জিনিসগুলি লাগবে
- নন অ্যাসিটোন নেইল পলিশ রিমুভার
- কটন বল
- নেইল ফাইল
- বাফিং ব্লক
- অরেঞ্জউড স্টিক
- কিউটিকল অয়েল
- ময়েশ্চারাইজার
- নেইল পলিশ (বেস কোট, কালার, টপ কোট)
পদ্ধতিগুলো ধাপে ধাপে
১. একটা পরিষ্কার ক্যানভাসে শুরু করুন
শুরু করার আগে নিশ্চিত করুন যে আপনার হাত এবং পায়ের নেইল পলিশ রিমুভ করা রয়েছে।
এক্ষেত্রে অবশ্যই একটি নন-অ্যাসিটোন রিমুভার ব্যবহার করবেন, কারণ অ্যাসিটোন থাকলে তা নখের জন্য ভাল নয়।
একটা ক্লিপার অথবা ফাইলের সাহায্যে আলতো করে আপনার নখগুলি শেপ করে নিন, ঠিক যতটা বড় রাখতে চান সেইমতো।
এরপর একটা বাফিং ব্লকের সাহায্যে আপনার নখের উপরিভাগকে স্মুদ বানিয়ে নিন। এতে করে নখের ওপর কোনও হলুদ ছোপ থাকলে সেই দাগ উঠে যাবে।
বিভিন্ন টেক্সচার দেওয়া বাফিং ব্লক বাজারে উপলব্ধ। ভালো শাইন পেতে স্মুদ বাফিং সাইডটি ব্যবহার করুন।
২. ভিজিয়ে রাখুন এবং স্ক্রাব করুন
২ থেকে ৩ মিনিটের জন্য হাত এবং ৫ মিনিটের জন্য পা-টা ভিজিয়ে রাখুন। এবার এক্সফোলিয়েট করার সময়।
এর জন্য ১ টেবিল চামচ চিনি এবং ১ টেবিল চামচ বেবি অয়েল জেল একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে মরা, শুষ্ক কোষগুলি আলতো করে তুলে ফেলুন।
এর চমৎকার সুগন্ধ এবং কোমলতা আপনার ত্বককে রেশমের মতো অনুভূতি দেবে। স্ক্রাবিং করে ধুয়ে নিন এবং শুকিয়ে ফেলুন।
৩. কিউটিকলসের যত্ন নিন
আপনার কিউটিকলগুলিতে কিছুটা কিউটিকল অয়েল মাখিয়ে নরম করুন। বাজার চলতি যেকোনও ভাল কিউটিকল অয়েল আপনারা বেছে নিতে পারেন।
এটি ব্যবহারে আপনার কিউটিকলগুলি সুন্দর এবং নরম হয়ে যাবে। এরপর সেগুলিকে একটি অরেঞ্জউড স্টিক দিয়ে হালকা করে উপরের ঠেলুন।
এই টুলটি দিয়ে আপনারা নখের নীচে জমে থাকা ময়লাও পরিষ্কার করে ফেলতে পারেন। এরপর আসে সবথেকে রিল্যাক্সিং পার্ট, আর সেটা হল মাসাজ।
এখন একটি ভিটামিন সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার নিন আর মাসাজ করুন বিশেষত আপনার পায়ের গোড়ালি এবং হাতও পায়ের কিউটিকলে।
এর পরের ধাপে যাওয়ার আগে তেল এবং ময়শ্চারাইজার তুলতে নন-অ্যাসিটোন পলিশ রিমুভারের সাহায্যে নেইল বেডটা পরিষ্কা করে নিন।
৪. অবশ্যই অ্যাপ্লাই করুন বেসকোট
যে কোনও ধরণের বেস কোট অ্যাপ্লাই করুন এবং একটি একবার পালতা কোট দিলেই যথেষ্ঠ।
৫. নেইল পলিশ
এরপর নখে ২ কোট নেলপলিশ অ্যাপ্লাই করুন। এক কোট শুকিয়ে যাওয়ার পরে তবেই আর এক কোট অ্যাপ্লাই করুন।
প্রফেশনাল লুক পেতে, সবার প্রথমে নখের মাঝখানে পলিশ লাগান, তারপর দু-পাশে লাগিয়ে নিন।
নেইল পলিশের লেয়ার যতটা সম্ভব পাতলা রাখুন। মোটা করে কখনওই পরবেন না।
এতে করে নেইল পলিশ লং লাস্টিং হবে এবং শুকিয়ে যাবে খুব দ্রুত।
৬. টপ কোট জরুরি
সব শেষে টপ কোট অ্যাপ্লাই কারাটা খুবই জরুরী। এটি যেমন নখে আলাদা একটা সাইন যোগ করে, তেমনই কোনও ত্রুটি থাকলে এটি সহজে তা লুকিয়ে ফেলতে সাহায্য করবে।
এর জন্য মাত্র একটি কোট অ্যাপ্লাই করলেই চলবে। বিশ্বাস করুন এি একটি কোট কিন্তু অনেকটাই তফাত এনে দেয়।
৭. রিল্যাক্স করুন আর কোনওকিছু স্পর্শ করবেন না
এবার জাস্ট সোফায় বসে বসে রিল্যাক্স করুন। সঙ্গে সঙ্গে কোনও কাজ করা বা কোনওকিছু স্পর্শ করতে যাবেন না।
পিকচার পারফেক্ট লুক পেতে গেলে কয়েক ফোঁটা নেইল পলিশ ড্রাইং ড্রপস অ্যাপ্লাই করুন, যদিও এটা একেবারেই অপশনাল।
ব্যাস এভাবেই আপনারা পেয়ে যেতে পারেন প্রফেশনাল পেডিকিওর এং ম্যানিকিওর, তাও আবারা বাড়িতে বসেই।