বর্ষা শেষ হলেই আবার সূর্য মামার দেখা মিলবে।
তবে বৃষ্টির ফাঁকে ফাঁকে যে সূর্যের প্রখরতা দেখা দেয় সেটাও কিন্তু কম নয়।
হয়ত ত্বক বাচাঁতে ব্যস্ত হয়ে যাবেন।
কিন্তু সকালের রোদে ভয় নেই।
সূর্যরশ্মিতে থাকে আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি।
যা ত্বকে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।
তাছড়াও বয়সের ছাপ বৃদ্ধি করে।
ত্বক পুড়ে যায়, ট্যান পরে।
তবে কিছু উপায় আছে।
মেনে চললে এইগুলো এড়ানো সম্ভব।
কিন্তু আমরা কথা বলতে চাচ্ছি সকালের রোদ নিয়ে।
সকালের রোদ যা খুব প্রখর হয় না এবং খুব মিষ্টি।
সকালের রোদের উপকারিতা আছে অনেক।
এর উপকারিতা আমাদের অনেকেরই অজানা।
যার ফলে আমরা এর উপকারিতা থেকে অনেকেই বঞ্চিত।
তাই আজ আমরা সকালের রোদের উপকারিতা সম্পর্কে জানবো।
মুড ভালো রাখতে বা ডিপ্রেশন কমাতে
সূর্যরশ্মি ও অন্ধকার আমাদের ব্রেইনে হরমোন নিঃসরণে ট্রিগার করে।
সূর্যরশ্মি আমাদের ব্রেইনে একধরনের হরমোন নিঃসরণ করে। এর নাম ‘সেরোটনিন’।
সেরোটনিন নামক এই উপাদান আমাদের ভালো ও ফোকাস রাখতে সাহায্য করে।
যার ফলে আমাদের মুড ভালো থাকে।
অন্যদিকে রাত আমাদের ব্রেইনে একধরণের হরমোন নিঃসরণ করেন। যার নাম ‘মেলাটনিন’।
এটি আমাদের ঘুমাতে সাহায্য করে।
আপনি যখম এই আলো কম পাবেন তখন সেরোটনিনের মাত্রা কমে আসবে।
আর অবশ্যই মেলাটনিনের মাত্রা বেড়ে যাবে।
যার ফলে সেই ব্যাক্তি সিরিয়াস ডিপ্রেশনে চলে যাবে।
তাই সকালের রোদ পাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
অবাক হচ্ছেন? অবাক হলেও এটা সত্যি যে সকালের রোদ ওজন বাড়তে দেয় না।
যারা সকালের উজ্জ্বল আলোর সংস্পর্শে বেশি সময় থাকেন, তাদের ওজন বাড়ার ঝুঁকি কম।
যার ফলে ওজন কমে আসে।
সকালের রোদ অনেকটা মিষ্টি হয়। যার কারণে এই রোদ সহ্য করার ক্ষমতা থাকে।
সকালের রোদ আপনার উচ্চতা ও বয়স অনুযায়ী ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
আর দিনের অন্য সময়ের উজ্জ্বল আলো বা কড়া রোদ ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে।
তাছাড়াও অন্য সময়ের কড়া রোদে থাকা উচিত না।
চুল পড়া রোধে
চুল পড়ার জন্য অন্যতম একটি কারণ হতে পারে আপনার শরীরে ভিটামিন-ডি এর অভাব।
আমাদের শরীরের সিংহভাগ ভিটামিন-ডি পাওয়া হয় সকালের রোদের আলো থেকে।
তাই সকালের রোদের সংস্পর্শে আপনি না এলে ভিটামিন-ডি’র ঘাটতি পড়ে।
যার ফলে চুল পড়ে যাওয়া ও ড্যামেজ হয়ে যায়।
তাই সকালের নরম রোদ কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট গায়ে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে।
এতে আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-ডি পাবে। আর চুল পড়া বন্ধ হবে।
হাইপার টেনশন থেকে মুক্তি করতে সাহায্য করে
কেউ সকালের রোদের আলোর সংস্পর্শে আসলে শরীরের নাইট্রিক অক্সাইড মুক্ত হতে থাকে।
যা আমাদের শরীরের নাইট্রিক অক্সাইড এর ঘাটতি মেটায়।
নাইট্রিক অক্সাইড আমাদের রক্তচাপ কমায়।
কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
গুরুত্বপূর্ণ নিউট্রিয়েন্ট বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
ভিটামিন-ডি এর প্রধান উৎস হলো সকালের রোদ।
আর এই ভিটামিন-ডি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
ভিটামিন-ডি আমাদের ইমিউন সিস্টেম উন্নত করতে সহায়তা করে।
শরীরের কোষ এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
দেহকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
হাড় গঠনে সাহায্য করে
ভিটামিন-ডি হলো শরীরের হাড় গঠনের অন্যতম উপাদান।
রোদের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি ত্বকে ভিটামিন ডি এর উপস্থিতিতে হাড়ে ক্যালসিয়াম যোগায়।
যা বাচ্চাদের হাড় গঠনে সহায়তা করে।
অনেক সময় ক্যালসিয়াম বা ভিটামিন ডি এর অভাবে বাচ্চাদের হাড় গঠন সঠিকভাবে হয় না।
এর ফলে ভবিষ্যতে নানারকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।
নিয়মিত ভিটামিন ডি গ্রহণ আর্থ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিসের মত রোগগুলোর ঝুঁকি কমায়।
ত্বক গ্লো করতে সাহায্য করে
আমরা সবাই জানি সূর্যের আলোয় আমাদের ত্বক কতটা ড্যামেজ হয়।
মেছতা, স্কিন বার্ন ইত্যাদি নানা ধরণের সমস্যা দেখা দিতে থাকে।
কিন্তু সকালের রোদের সংস্পর্শে আপনার ব্লাড প্রেশার কমে যায়।
আর এই আল্ট্রা ভায়োলেন্ট রশ্মিই আমাদের চেহারার গ্লো বাড়িয়ে দেয়।
দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে
ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এর ফলে দৃষ্টি শক্তি কমে আসে।
ভিটামিন-ডি৩ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধে একটি মূল কারণ।
সূর্যরশ্মি থেকে এই ভিটামিন পাওয়া যায়।
বয়ষ্কদের প্রতিদিন অন্তত ১০-১৫ মিনিট রোদ পোহানো উচিত।
এতে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে।
ঘুম ভালো হতে সাহায্য করে
শরীরের সিরোটনিনের মাত্রা ভালো মতো বজায় থাকলে আমাদের ঘুমের জন্য ভালো।
কারণ তাতে মেলোটনিন ও সিরোটনিনের একটি ভারসাম্য বজায় থাকে।
এই ভারসাম্যের ব্যাঘাত ঘটলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে।