নখ পরিস্কার রাখার উপায়

নেলপেইন্ট, নেল আর্ট এর রকমারী কারুকার্যে মুগ্ধ হয়ে আমরা নখকে রাঙিয়ে নিয়েই সৌন্দর্যবিন্যাস এর কাজপাট চুকিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে যাই।

কিন্তু এসব বাহ্যিক চাকচিক্যের নীচে যে কোমল নখের স্বাস্থ্য রয়েছে সেটা অনুধাবনের প্রয়োজনবোধ করি না।

ঘরের নানা কাজে ব্যস্ত থাকা এবং অবহেলার দরুণ নখের রং হলদেটে হওয়া বা নখ পাতলা হয়ে ভেঙে যাওয়া চলতে থাকে।

দেখবেন সামান্য পরিচর্যা ও সহজ নিয়ম অনুসরণ করলেই আপনার নখের চেহারার আমূল পরিবর্তন হয়ে বদলে যাবে আপনার হাতের তথা সামগ্রিক রূপমাধুর্য।

তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে আর আপনাদের জানাই আকর্ষণীয়, নিখুঁত ও ধবধবে লম্বা নখ এর অধিকারী হবার গোপন কৌশল।

ময়েশ্চারাইজার

মুখের আর্দ্রতা বজায় রাখতে আমরা ময়েশ্চারাইজার এর দ্বারস্থ হয়েই থাকি।

কিন্তু এটা জেনে খুশি হবেন আপনার ড্রেসিং টেবিল এর এই সরঞ্জাম কিন্তু নখ এর মসৃণতা ও জেল্লা ধরে রাখতে পারে।

রাতে শুতে যাবার আগে নিয়মিত ধার বরাবর ম্যাসাজ করুন নখে।

টুথপেস্ট

টুথপেস্ট কেবল দাঁত-ই ঝকঝকে করে না। একটা ব্রাশ এ অল্প টুথপেস্ট নিয়ে আলতোভাবে ঘষে নখের চারধারে লাগিয়ে দিন।

জল দিয়ে ধুয়ে নিয়ে দেখুন আগের চেয়ে অনেকটাই স্মুথ হয়েছে দেখবেন।

লেবু ও বেসন

নখে যদি আপনার ছোপ ও দাগ ধরে যায় বারবার এবং সেটা নাছোড়বান্দা হয়। তবে এই ঘরোয়া ট্রিটমেন্ট আপনার জন্য কথা দিচ্ছি।

একটা পাত্রে এক কোয়া লেবুর রস ও চিমটি খানেক বেসন নিয়ে পেস্ট বানিয়ে নখে লাগান। ফল বুঝবেন কম সময়েই।

বেকিং সোডা

বেকিং সোডাকে প্রাকৃতিক ব্লিচার বলা হয়। নখের ব্লিচিং করে এটি নখকে পরিপক্ক ও বাইরের আঘাত ও দূষণ থেকে মুক্তি দেয়।

গরম জলে সোডা মিশিয়ে একটা থিক মিশ্রণ বানিয়ে নখের কোণে লাগিয়ে ফেলুন। মিনিট খানেক পর জল দিয়ে ধুয়ে নিন।

এটি নখের ভেতরে জমা নোংরা নিমেষে দূর করে।

অলিভ অয়েল

নখের আকার সুন্দর ও নজরকাড়া করতে চান? তবে অলিভ অয়েল ছাড়া আপনার গতি নেই।

একটা কটন বাড অলিভ তেলে ডিপ করে নখের পুরোভাগে লাগিয়ে নিন।

এটি নখের কিউটিকলকে নরম করার পাশাপাশি নখে ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস জমে সংক্রমণ এর সম্ভাবনা কমায়।

নারকেল তেল ও ইউজ করতে পারেন চাইলে।

কমলা লেবুর রস

কমলার রস খেতেই টেস্টি নয় নখের পরিচর্যায় খুবই কার্যকরী ভূমিকা নেয়।

২ টেবিলচামচ কমলার রস এর সাথে কিছুটা ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিন।

ভালো করে ফেটিয়ে নিয়ে নখের উপর এপ্লাই করুন। এতে নখ দৃঢ় ও শক্ত হবে ও চট করে ভেঙে যাবে না।

নখ দ্রুত বাড়াতে

যদি আপনি নখ খুব জলদি বড় ও ধবধবে চান একদম আধখানা চাঁদ এর মতো তবে আপেল সিডার ভিনিগার ১ টেবিলচামচ, ১ টেবিলচামচ রসুনবাটা একসাথে মিশিয়ে লাগান। একসপ্তাহেই গ্রোথ চোখে পড়বে।

নখ যদি ভেঙে যায়?

নখের নানা অসুখ হয় এনিমিয়া বা রক্তাল্পতা থেকে বা জলের সংস্পর্শে বেশি এলে নখ ভেঙে যাবার প্রবণতা দেখা দেয়।

এর জন্য দরকার সঠিক স্ক্রাবিং ঠিক মুখের মতোই। দই, অ্যালোভেরা জেল ও চালের গুঁড়ো একসাথে মিশিয়ে ধীরে ধীরে নখে লাগান।

নখ বড়ও হবে আর ভেঙে যাবার গতিক দেখতে পাবেন না।

নখের যত্নে আবশ্যক বিধি

নিদির্ষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে নখের যত্নে।

নিম্নলিখিত কিছু বিষয়ে একটু সাবধানী হয়ে চললে দেখবেন আপনার নখের লাবণ্য ও পরিচ্ছন্নতা হবে প্রশ্নাতীত।

  • নখ ছোট ছোট করে কাটবেন। কারণ ত্বকের মতোই নখেও মৃতকোষ জমা হয়। নিয়মিত ছোট করে কাটলে সেই ডেডসেলস দূর হয়ে যায়, ইনফেকশন ও নোংরা কম জমে।
  • কাটার আগে গরম জলে নখ চুবিয়ে নরম করে নেবেন।
  • নখের পুষ্টির দরকার হয় শরীরের মতোই। তাই খাবারের সাথে প্রোটিন, আয়রণ,ক্যালসিয়াম,আয়োডিন, ওমেগা ৩, ভিটামিন বি ও সি যুক্ত ফলমূল,সবজি ও খাবার রাখুন।
  • নখের সাদাভাব ধরে রাখতে ডেনটিউর ক্লিনার ট্যাবলেট ইউজ করতে পারেন।
  • নেলপলিশ পরার আগে নখে বেসকোট লাগিয়ে নেয়া মাস্ট।
  • ঘুমোতে যাবার আগে নখে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নিন। নখের খসখসে ভাব দূর হবে ও চকচকে ও দেখাবে।
  • নেলপলিশ তোলবার পর শ্যাম্পু,নুন,লেবুর রস মাখিয়ে নিন একটা পাত্রে। সেটায় হাতের নখ ১০মিনিট ডুবিয়ে রাখুন তারপর বাকি কাজ সারুন।

যা যা করবেন না

  • দাঁত দিয়ে নখ কাটবেন না।
  • নখ কাটার সময় নেলকাটার ছাড়া আর কিছু ব্যবহার করবেন না।
  • ঘন ঘন নেল ফাইলার ব্যবহার না করাই শ্রেয়।
  • ম্যানিকিউর করালে সেটা নিয়ন্ত্রিত হয় সেটা খেয়াল রাখুন।
  • এসিটন যুক্ত নেলপলিশ রিমুভার ব্যবহার করবেন না। এটা নখের গোড়া দুর্বল করে ও বাতাস চলাচল করতে দেয় না নখের মধ্যে।