ত্বক, চুল বা হাত বা পায়ের যত্ন তো নিয়েই থাকেন কিন্তু হাতের ও পায়ের নখের যত্ন নিচ্ছেন কি?
আপনার শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মত নখের যত্ন নেওয়াও কিন্তু জরুরি। অনেক সময় অতিরিক্ত পানি বা সাবানের ব্যবহার আমাদের নখ খারাপ করে দেয়।
এছাড়া বাড়িতে রান্না করার সময় মশলা, তেল ইত্যাদি লেগেও নখ খারাপ হতে পারে।
তাই বলে কি কাজকর্ম বন্ধ করে বসে থাকবেন? আপনার মুশকিল আসান করতেই আজকের আয়োজন।
এই লেখাটি পড়লে আপনি ঘরে বসেই নখের যত্ন নিতে পারবেন।
নখের সমস্যা অনেক সময় মারাত্মক হতে পারে। কিন্তু আপনি বুঝবেন কী করে?
আসুন দেখে নিন কী কী ধরনের সমস্যা হলে আপনাকে সাবধান হতে হবে।
এই সমস্যাগুলো হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত—
- নখের স্বাভাবিক রঙ পরিবর্তন
- নখ সোজা না বেড়ে নিচের দিকে বাড়লে বা স্বাভাবিক শেপ পরিবর্তন
- নখ অতিরিক্ত মোটা বা পাতলা হয়ে যাওয়া
- চামড়া থেকে নখ আলাদা হয়ে যাওয়া
- নখের চারপাশ দিয়ে রক্তপাত হলে
- নখের চারপাশ ফুলে ওঠা বা ব্যথা অনুভব হওয়া
নখ ভালো রাখার জন্য কী কী বিষয় মেনে চলা উচিত আসুন এবার সে বিষয়ে কিছু জেনে নেওয়া যাক—
- আপনার নখ সবসময় পরিষ্কার ও শুকনো রাখা উচিত
- সময় মত ও নিয়মিত নখ কাটা উচিত
- কখনো নখ ভেঙ্গে গেলে সেটি সেই সময়ই নেলকাটার দিয়ে কেটে ফেলা উচিত
- অতিরিক্ত পানি বা সাবান ব্যবহার করার ফলে আমাদের নখ রুক্ষ হয়ে যায় তাই নিয়মিত নখে ময়্স্চারাইসার লাগানো উচিত
- কোনরকম ক্ষতিকারক নেইল কেমিকাল ব্যবহার না করাই ভালো
- দাঁত দিয়ে নখ কাটা অত্যন্ত খারাপ স্বভাব, এটি আপনার নখের সাথে আপনার শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে
- নখ টেনে তোলা একেবারেই উচিত নয়
- নখের কোনো রকম সমস্যা গাফিলতি করা উচিত নয়
- নেইল রিমুভার ব্যবহার কম করা উচিত
এই বিষয় গুলি মাথায় রাখার সাথে সাথে আসুন এবার দেখে নিন কিছু ঘরোয়া উপায় যা আপনার হাত ও পায়ের নখের খেয়াল রাখতে সাহায্য করবে—
১. লেবু
লেবুতে থাকা ভিটামিন সি আপনার নখের হলদে ভাব দূর করে এবং প্রাকৃতিক ভাবে উজ্জ্বল করে তোলে।
লেবুর রসের সাথে অলিভ অয়েল মিশিয়ে একটু হালকা গরম করে তাতে আপনার নখ চুবিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
এছাড়া হাত ও পায়ের নখে লেবু দিয়ে হালকা ঘষে জল দিয়ে ধুয়ে ময়্স্চারাইসার লাগিয়ে নিন।
নিয়মিত লেবুর ব্যবহার আপনার নখের যে কোনো রকম সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম।
২. নারিকেল তেল
নারিকেল তেল নখ কে ময়্স্চারাইস করে, এটি নখের স্বাভাবিক বৃদ্ধি তে সাহায্য করে।
এছাড়া নখের যে কোনো ফাংগাল ইনফেকশন সহজেই সরিয়ে তোলে।
নারকেল তেল ও মধু হালকা গরম করে হাতে ও পায়ের নখে ভালো করে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করুন।
এতে ব্লাড সার্কুলেশন স্বাভাবিক থাকে এবং আপনার নখ ভালো থাকে।
৩. বায়োটিন
বায়োটিন বা ভিটামিন এইচ আমাদের নখের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
তাই বায়োটিন যুক্ত খাবার যেমন ডিম, শশা, টমেটো, দুধ, আলমন্ড, গাজর, সয়াবিন ইত্যাদি নিয়মিত খাওয়া উচিত।
৪. ডিমের কুসুম ও দুধ
প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের অভাবে আমাদের নখে নানা ধরনের সমস্যা হয়।
তাই এই দুটি উপাদান আমাদের নখের যত্ন নিতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে ডিমের কুসুম ও দুধের মিশ্রন অত্যন্ত কার্যকরী।
এই দুটি উপাদান মিশিয়ে হাতে ও পায়ের নখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
পরে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। এতে নখের হলদে ভাব দূর হয় ও নখ ভালো থাকবে।
৫. পেট্রোলিয়াম জেলি
পেট্রোলিয়াম জেলি সবথেকে সহজ উপায় আপনার নখ ভালো রাখার।
রাতে শুতে যাবার আগে ভালো করে পেট্রোলিয়াম জেলি বা ভেসলিন হাতে ও পায়ের নখে লাগিয়ে নিন। কিছু দিনের মধ্যেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
মনে রাখবেন আপনার সুন্দর নখ কিন্তু আপনার হাত ও পায়ের সৌন্দর্য্য কে বাড়িয়ে তোলে। তাই নখের যত্ন নেওয়া খুব জরুরি।
খারাপ বা অসুস্থ নখের অবহেলা আপনার পক্ষ্যে মারাত্মক হতে পারে।
তাই এখন থেকে বাড়িতে বসেই নখের যত্ন নিতে এই ঘরোয়া উপায় গুলি ব্যবহার করুন।