একটু গরম পড়লেই তৈলাক্ত ত্বক তার খেলা দেখাতে শুরু করে—এরকম অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই আপনাদের যাদের অয়েলি স্কিন আছে, তাদের সকলেরই হয়েছে।
গরম কালে অয়েলি স্কিন এমনিতেই খুব সমস্যার, অল্প ঘামেই মুখ তেলতেলে হয়ে পুরো বারোটা বেজে যায়।
আর চিটচিটে ওই তেলে আপনাকেও দেখতে লাগে ক্লান্ত। তাই গরম পড়লেই আপনি নিশ্চয়ই ঘন ঘন মুখ ধুতে শুরু করেন?
আসুন জেনে নেয়া যাক কীভাবে মুখ ধোয়া উচিত।
সঠিকভাবে মুখ ধোয়ার নিয়ম
মুখ তো গরমকালে বেশি করে ধোয়ার অভ্যাস আমাদের। আর আপনার যেহেতু অয়েলি স্কিন, তাই ফ্রেশ থাকার জন্য যখন তখন মুখ ধুলেই নিশ্চয়ই আপনার ভালো লাগে!
আর ব্যাগেও আপনি নিয়ে ঘোরেন আপনার পছন্দের ফেস ওয়াশ। ব্যাস। ইচ্ছে হলেই বের করে তাই দিয়ে মুখ ধুয়ে নিলেই হলো!
কিন্তু জানেন কি, ওই যখন তখন ইচ্ছে মতো মুখ ধোয়াই কিন্তু আপনার স্কিনের কাল হয়ে উঠতে পারে। কেন? জেনে নিন।
বারবার মুখ ধোয়া উচিত না
মানছি আপনার অয়েলি স্কিনের অতিরিক্ত তেল, ময়লা দূর করার জন্য ফেশ ওয়াশ দিয়ে ভালো করে মুখ ধোওয়া উচিত।
কিন্তু তাই বলে আপনি আবার বেশি ফেসওয়াশ ব্যবহার করে ফেলছেন না তো?
স্কিন স্পেশালিষ্টরা কিন্তু বলে থাকেন, সাধারণত আপনার ত্বক যেমনই হোক না কেন, দিনে দুই থেকে তিনবার ফেশওয়াশ দিয়ে মুখ ধুলেই যথেষ্ট।
তাই যতই আপনার অয়েলি স্কিন হোক না কেন, আর যতই তেল হয়ে থাকুক না কেন, ঘুম থেকে উঠে আর বাইরে থেকে ঘরে ফিরলে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
কিন্তু যখন খুশি তখন—ঘন ঘন ফেসওয়াশ ব্যবহারেই কিন্তু বিপদ। নিশ্চয়ই ভাবছেন, এ আবার কেমন কথা শোনালাম আপনাদের?
মাত্রাতিরিক্ত ফেসওয়াশ ব্যবহার করবেন না
মনের আনন্দে তো ফেসওয়াশ দিয়ে যখন তখন মুখ ধুলেন। ফেসওয়াশ দেওয়ার ফলে মুখে জমে থাকা তেল আর ময়লাও দিব্যি দূর হয়ে গেলো।
কিন্তু জানেন কি, আপনার মুখে থাকা ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজারও কিন্তু ফেস ওয়াশ দিলে চলে যায়। আর মুখ তখন খানিক ড্রাইও হয়ে যায়।
আপনার মুখের স্বাভাবিক অয়েলি ভাবের থেকে সরে মুখ যখনই এক্সট্রা ড্রাই হয়ে যায়, তখনই কিন্তু শুরু হয় সমস্যা।
আপনার মুখ এসময় ত্বকের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য এক্সট্রা তেল উৎপাদন করতে শুরু করে।
আর অতিরিক্ত তেলতেলে ত্বক মানেই বুঝতে পারছেন? ব্রণর সমস্যা এক্কেবারে পাকাপোক্ত!
ব্রণ দূর করার প্রথম ধাপ হচ্ছে সঠিকভাবে মুখ ধোয়া।
তাই বলে আপনাকে দিনে বারবার মুখ ধুতে হবে না। এটি আবার হিতে বিপরীত হতে পারে।
সকালে-দুপুরে-রাতে নিয়ম করে বার তিনেক মুখ পরিষ্কার করলেই চলবে।
ঠান্ডা পানি ব্যবহার না করে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। মুখ মুছতে নরম তোয়ালে ব্যবহার করবেন।
সাবান ব্যবহার না করে ভালো কোম্পানির ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
কখনোই ব্রণে নখ দিয়ে খোঁচাখুঁচি করবেন না। এমন করলে দাগ পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি।
প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল খান। পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
নিয়মিত ঘুম প্রয়োজন। অনিদ্রায় যেমন ব্রণের প্রবণতা বাড়ে, তেমনি অতিরিক্ত ঘুমের কারণেও ব্রণ হতে পারে।
দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করতে চেষ্টা করুন।
নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার রাখতে ফেসওয়াশ ব্যবহার করা জরুরি।
তবে ব্যবহারের আগে বুঝে নিতে হবে কোন ধরনের ত্বকে কোন উপকরণে ভালো ফল মিলবে।
যেভাবে সামলাবেন তৈলাক্ত ত্বক
বাতাসের দূষণ আর রোদ থেকে তেলতেলে ত্বক খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যাদের ত্বক একটুতেই তেলতেলে হয়ে যায়, তাদের দিনে ২–৩ বার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।
ফেসওয়াশ ব্যবহারের আগে দেখে নিন তাতে শসাযুক্ত আছে কি না। কারণ এই ধরনের ত্বকের জন্য শসাযুক্ত ফেসওয়াশ ভালো। এতে ত্বক সতেজ থাকবে।
খেয়াল রাখবেন
আগেই বলেছি আপনার ত্বক হাজার অয়েলি হলেও দিনে দুই থেকে তিনবারের বেশি ফেসওয়াশ দেবেনই না।
আর পারলে মাত্রাতিরিক্ত সাবান এর ব্যবহার অ্যাভয়েড করার চেষ্টা করুন।
তাহলে এবার তো জানলেন অয়েলি ত্বকের জন্য দিনে কতবার ফেস ওয়াশ করা উচিত। সেই মতো ত্বকের যত্ন নিন, আর তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যাগুলোকে বিদায় জানান।