আমাদের প্রতিদিন কাজ করতে যেমন সঠিক খাবার দরকার, তেমনই স্কিনেরও দরকার। আর সেই খাবার যোগায় সিরাম। সিরাম হল এমন একটি ওয়াটার বেস ফর্মুলা, যার ফলে স্কিন থাকে ঝলমলে সুন্দর। স্কিনের হারিয়ে যাওয়া প্রান ফেরাতে ভীষণ কাজে দেয় সিরাম।
সিরাম তাড়াতাড়ি স্কিনের গভীরে গিয়ে স্কিনকে ভেতর থেকে সারিয়ে তোলে ও সুন্দর রাখে। ত্বকের বলিরেখা, দাগছোপ, ব্রন, ট্যান এসব সমস্যাকে ঠিক করে। স্কিন টোন সুন্দর করে, উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। তাহলে চলুন দেখেনি বাড়িতেই সহজে কীভাবে বানাতে পারবেন সিরাম।
ফেস সিরাম ১
- ৪ চামচ গ্লিসারিন
- ৩ চামচ লেবুর রস
- ৩ থেকে ৪টি ভিটামিন ই ক্যাপস্যুল
- ২ চামচ গোলাপ জল
এই সমস্ত উপকরণগুলি ভালো করে মিশিয়ে নিন। চেষ্টা করবেন এয়ার টাইট কোন বোতলে রাখতে। তাহলে ভালো থাকবে অনেকদিন। গ্লিসারিন যেন পিওর হয়।
ব্যবহার বিধি
- মুখ আগে ক্লিঞ্জার বা ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
- টোনার ব্যবহার করলে ক্লিঞ্জারের পর টোনার লাগান।
- এরপর সিরাম লাগান। কয়েক ফোঁটাই যথেষ্ট।
- হালকা হাতে একটু ম্যাসেজ করে নিন। কিচ্ছুক্ষণ রেখে দিন।
- ৫ থেকে ১০ মিনিট পর, স্কিন সিরাম ভালো মত টেনে নিলে তারপর ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
এই রুটিনটা রোজই মেনে চলতে পারেন রাতে। এই সিরামটা ফ্রিজে রেখে ৯ থেকে ১০ দিন ব্যবহার করতে পারেন। তারপর আবার বানিয়ে নিন। আর ফ্রিজ না থাকলে সেক্ষেত্রে একদম সব উপকরণ অল্প পরিমাণ নিয়ে অল্প করে বানান। তিন চারদিনের জন্য। সেক্ষেত্রে ঠাণ্ডা জেয়গায় রাখবেন।
ফেস সিরাম ২
- ৫ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল ওয়েল
- ৫ ফোঁটা চন্দনের এসেনশিয়াল ওয়েল।
- ৪ ফোঁটা রোজহিপ এসেনশিয়াল ওয়েল।
- ৫ ফোঁটা জুঁই ফুলের এসেনশিয়াল ওয়েল।
একটা এয়ারটাইট বোতলে সমস্ত এসেনশিয়াল ওয়েল ভালো করে মেশান। ফ্রিজে রেখে এটাও অনেকদিন ব্যবহার করতে পারেন। নাহলে কোন ঠাণ্ডা জেয়গায় রাখুন।
ব্যবহার বিধি
- এটাও ওপরে দেওয়া ব্যবহার বিধি অনুযায়ী ব্যবহার করুণ। অবশ্যই মুখ পরিষ্কার করার পর।
- একটি ড্রপারে করে নিয়ে কয়েক ফোঁটা মুখে দিন।
সিরাম ৩
- ২চামচ অ্যালোভেরা জেল
- ২চামচ গোলাপ জল
- ২-৩টি ভিটামিন ই ক্যাপস্যুল
- ১চামচ আমণ্ড তেল
- স্কিন খুব ড্রাই হলে এরসাথে এক চামচ নারকেল তেল
একটি পাত্রে সব উপকরণ গুলো ভালো করে মেশান। এবার এটা একটা এয়ার টাইট বোতলে ভরে রাখার চেষ্টা করুণ।
ব্যবহার বিধি
- ওপরের ব্যবহার বিধি অনুযায়ী ব্যবহার করুণ।
উপকারিতা
এই প্রতিটা ফেস সিরামই কিন্তু বেশ উপকারী স্কিনের জন্য। এগুলো একদিকে যেমন ড্রাই স্কিনের সমস্যা থেকে আপনাকে মুক্তি দেবে, অন্যদিকে স্কিনও ধীরে ধীরে ভেতর থেকে উজ্জ্বল হবে। স্কিন থাকবে হাইড্রেটেড ফলে শুকিয়ে যাবে না। স্কিন ফিরে পাবে তার প্রান।
এতে প্রতিটাই প্রাকৃতিক উপাদান যেগুলো অনেক বেশী ভালো কাজ করবে। ডার্ক স্পট, ব্রন, ট্যান যেকোনো সমস্যার জন্যই এই সিরাম বেশ উপকারী। কারণ সিরাম স্কিনের ভেতরে গিয়ে কাজ করে। স্কিনের পি এইচ ব্যাল্যান্স ধরে রাখে তার ফলে স্কিন থাকে ভেওর থেকে হেলদি ও প্রানবন্ত।
মনে রাখবেন
- যে সিরামই ব্যবহার করুণ না কেন, মুখ ভালো করে পরিষ্কার করা দরকার।
- অনেকেই ক্লিঞ্জিং মিল্ক ব্যবহার করেন মুখ পরিষ্কার করতে, সেক্ষেত্রে ক্লিঞ্জিং মিল্ক দেবার পর টোনার লাগান।
- টোনারের পর সিরাম।
- আর টোনার ও ক্লিঞ্জিং মিল্ক ব্যবহার না করলে, ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন।
- সিরাম লাগানোর যে পদ্ধতি ওপরে দেওয়া আছে, সেই স্কিন রুটিনটা রোজই পালন করুণ।
- রাতে এই রুটিন মেনে চলা বেশী ভালো। কারণ রাতে ঘুমনোর পরই আমাদের স্কিন কাজ করা শুরু করে। স্কিন নিজেকে সারিয়ে তোলে। ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে সারিয়ে তোলে। নতুন কোষের জন্ম হয়। তাই এই সময়ে সিরাম লাগালে সেটা অনেক ভালো কাজে আসবে।
স্কিন ড্রাই হলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। স্কিন একদম নিষ্প্রাণ দেখায়। এবং তাড়াতাড়ি এজিং চলে আসারও সম্ভবনা থাকে। সেক্ষেত্রে এই সবকটা সিরামই ড্রাই স্কিনের জন্য বেশ উপকারী। দুবার করেও ব্যবহার করতে পারেন এই সিরামগুলি। তবে রাতে অবশ্যই ওপরে বলে দেওয়া ব্যবহার বিধি অনুযায়ী ব্যবহার করুণ। একমাস টানা ব্যবহার করুণ যথেষ্ট উপকার পাবেন।