অন্য সব টাইপের স্কিনের তুলনায় অয়েলি স্কিনের যত্নে সময় একটু বেশি লাগে। কারণ এই টাইপের স্কিনে গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার না হলে ব্রণের সমস্যা বেড়ে যায়, ত্বকে জালাপোড়া ভাব হয়, স্কিন ইনফেকশন দেখা দেয় ইত্যাদি। আর অতিরিক্ত তেল চিটচিটে ভাব কমিয়ে স্কিনকে সারাদিন তরতাজা রাখা আরো কঠিন কাজ।
নিয়মমাফিক ক্লিনজিং-টোনিং-ময়েশ্চারাইজিং ও ব্যালেন্সড নিউট্রিউশন অয়েলি স্কিনের আদর্শ ট্রিটমেন্ট। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে তৈলাক্ত ত্বকের আরেকটি সহজ সমাধান হচ্ছে শিট মাস্ক। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে এই ধরণের ফেস মাস্ক বিখ্যাত হওয়ার পর সারাবিশ্বে শিট মাস্কের কদর বেড়েই চলেছে। কোরিয়ান মহিলারা শিট মাস্ককে ত্বকের জন্য আদর্শ প্রোডাক্ট বলে মনে করেন।
আজকের আয়োজনে থাকছে শিট মাস্কের আদ্যোপান্ত ও অয়েলি স্কিনের জন্য ঘরে বানানো ১০ রকমের শিট মাস্ক সম্পর্কে বিস্তারিত।
শিট মাস্ক কী?
- শিট মাস্ক হচ্ছে পাতলা একটি পর্দা যা মুখের ত্বকে ব্যবহারের উপযোগী করে বানানো হয়।
এই মাস্ক সাধারণত প্যাকেটে একটি বিশেষ ধরণের তরলে ভেজানো থাকে।
তরল পদার্থটা আসলে এক ধরণের সেরাম, এতে ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান (হায়ালিউরোনিক এসিড, ভিটামিনস) থাকে। - বাজারে বিভিন্ন ধরণের ত্বকের জন্য মানানসই বিভিন্ন রকমের শিট মাস্ক কিনতে পাওয়া যায়।
শিট মাস্কের বিশেষত্ব হল, এটা দিয়ে খুব দ্রুত ত্বকের যত্ন নেয়া যায়।
আবার এই জাতীয় মাস্ক ব্যবহারে ত্ব শুকিয়ে যায় না বললেই চলে। - অন্যান্য ফেস মাস্ক প্রস্তুত করতে সময় লাগে, আবার সেগুলো ব্যবহারের পর আলাদা করে সেরাম ব্যবহার করতে হয়।
কিন্তু সেরামে ডোবানো একটা শিট মাস্ক দিয়েই ত্বকের উত্তম পরিচর্যা করা সম্ভব।
অবশ্য ঘরে বানানো শিট মাস্কে আলাদা করে সেরাম ব্যবহার করা লাগতে পারে। - ত্বকের যত্ন নেয়ার সময় পাচ্ছেন না? চটজলদি একটা শিট মাস্ক মুখে লাগিয়ে রাখলেই অনেকটা স্কিন কেয়ার করে ফেললেন।
কিন্তু এটাই শেষ না। মাস্ক ব্যবহারের পরেও নিয়ম করে স্ক্রাবিং এবং এক্সফোলিয়েটিং করতে হবে। - শোষণ ক্ষমতা ও ফেব্রিক অনুসারে শিট মাস্কের দাম ভিন্ন হয়।
সুতি কাপড় ও নন-উভেন ফাইবারের বানানো মাস্ক দামে সস্তা হলেও এগুলোর সেরাম শোষণ ক্ষমতা ভালো হয় না।
অবশ্য কোয়ালিটির দিক থেকে নন-উভেনের চাইতে সুতি কাপড়ের মাস্ক ভাল। - হাইড্রোজেল ও বায়ো-সেলুলোজ মাস্ক দামে যেমন ভালো, তেমন শোষণ ক্ষমতা বেশি এবং লাগানোও বেশ সহজ।
বায়ো-সেলুলোজ শিট মাস্ক জেল দিয়ে বানানো হয়। এটা একদম মুখের শেইপে বানানো থাকে এবং ত্বকে সেটও হয়ে যায় সুন্দরভাবে।
আর হাইড্রোজেল মাস্ক দুই ভাগে বিভক্ত থাকে। এতে করে মুখের উপর ও নিচে সহজেই লাগানো যায়। - শিট মাস্ক মুখের স্ট্যান্ডার্ড মাপে পাওয়া যায়। এটা লাগানোর সময় কপাল থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে নিচে নামতে হয়।
কেউ কেউ পুরো মুখ জুড়ে মাস্ক ব্যবহার করেন আবার কেউ কেউ চোখ, নাক ও ঠোঁটের অংশ কেটে ব্যবহার করেন।
তবে বাজারের মাস্কগুলো চোখ, নাক ও ঠোঁটের অংশে গোল করে কাটা থাকে।
শিট মাস্কের উপকারিতা
- ত্বককে হাইড্রেট করে।
- ত্বকের শুষ্কতা রোধ করে।
- নরম, মসৃণ ও কোমল ত্বক নিশ্চিত করে।
- ত্বকের সেবাম কন্ট্রোল করে ও ইরিটেশন কমায়।
কিছু কিছু শিট মাস্ক তাৎক্ষণিক কুলিং ও সুদিং ইফেক্ট এনে দেয়। - এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে বানানো শিট মাস্কে থাকে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও উপকারী এসিড।
যা ত্বককে টানটান রাখে ও বলিরেখা কমায়। - বাজারের শিট মাস্ক ব্যয়বহুল, স্কিনের সাথে স্যুট না-ও করতে পারে।
ঘরে বানানো শিট মাস্কে খরচ কম পড়ে, আবার মিশ্রণটা নিজের স্কিন অনুযায়ী ইচ্ছেমতো বানানো যায়।
তাই ঘরোয়া শিট মাস্ক সাশ্রয়ী হয়।
ঘরে কিভাবে শিট মাস্ক বানানো যায়?
- ঘরে আপনি টিস্যু পেপার বা পরিষ্কার সুতি কাপড় দিয়ে অনায়াসেই শিট মাস্ক বানাতে পারবেন।
তবে এক্ষেত্রে টিস্যুর চাইতে সুতি কাপড় ব্যবহার করলে ভাল হয়।
কারণ টিস্যু পেপার মিশ্রণে ভেজালে অল্পতেই ছিঁড়ে যাবে। - সুতি কাপড় নিয়ে প্রথমে আপনার মুখের শেইপে গোল করে কেটে নিন।
তারপর মুখের উপর বসিয়ে চোখ, নাক আর ঠোঁটের অংশটা মাপমতো গোল করে কেটে নিলেই প্রস্তুত হোমমেইড শিট মাস্ক।
এরপর শুধু মিশ্রণ ডুবিয়ে ব্যবহারের পালা। - আপনি চাইলে ওয়েট কটন ওয়াইপও ব্যবহার করতে পারেন।
ব্যবহারের আগে ওয়েট ওয়াইপটা ধুয়ে পানি ঝরিয়ে এরপর মাপমতো কেটে নিবেন।
এখন কথা বলব অয়েলি স্কিনের জন্য ঘরে বানানো ১০ রকমের শিট মাস্ক নিয়ে।
১. শসার শিট মাস্ক
যা যা লাগবে
- শসা (মাঝারি সাইজের) – আস্ত ১টি
- পরিষ্কার পাতলা সুতি কাপড়ের মাস্ক
যেভাবে মাস্ক বানাবেন
প্রথমে শসা ছিলে থেঁতলে রস বের করে নিন। এবার এই রসে সুতি কাপড়টা ডুবিয়ে রাখুন।
তারপর এটাকে ফ্রিজে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রাখুন।
ফ্রিজ থেকে নামিয়ে মুখের উপর কাপড়টা ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখুন।
২০ মিনিট পরে মাস্ক ফেলে স্বাভাবিক ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
এরপরে তৈলাক্ত ত্বকের উপযোগী সেরাম বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
উপকারিতা
শসা ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে, ময়েশ্চারাইজ করে, যেকোন ধরণের চুলকানি বা জ্বালাভাব কমায়।
সেই সাথে ত্বককে রাখে শান্ত ও কোমল। নিয়মিত শসার শিট মাস্ক ব্যবহারে অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব কমে যায়।
২. চাল ধোয়া পানির শিট মাস্ক
যা যা লাগবে
- লাল/সাদা চাল – ১ মুঠো
- পানি – ১ মুঠো চালে যতটুকু লাগে তার দ্বিগুণ
- পরিষ্কার পাতলা সুতি কাপড়ের মাস্ক
যেভাবে মাস্ক বানাবেন
প্রথমে চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। এরপরে এই চাল দ্বিগুণ পরিমাণ পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন।
এবার এই পানিতে কাপড়টা ভিজিয়ে ৩০ মিনিট ফ্রিজে রেখে দিন।
৩০ মিনিট পরে মাস্কটা বের করে মুখের উপর ১৫-২০ মিনিট রাখুন।
এরপরে পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং সেরাম/ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
উপকারিতা
চালের পানির শিট মাস্ক মূলত ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ব্যবহৃত হয়।
এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-এজিং উপাদান।
বয়সের ছাপ কমানোর পাশাপাশি এই মাস্ক ত্বককে রাখে টানটান ও চিরযৌবন।
৩. গ্রিন টি-র শিট মাস্ক
যা যা লাগবে
- গ্রিন টি ব্যাগ – ৫টি
- লেবুর রস – ২-৩ ফোঁটা
- পানি – প্রয়োজনমতো
- পাতলা সুতি কাপড়
যেভাবে মাস্ক বানাবেন
গ্রিন টি-র শিট মাস্ক বানাতে হলে প্রথমে গরম পানিতে টি ব্যাগগুলো ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন, অর্থাৎ চা টা বানিয়ে নিতে হবে। চা ঠান্ডা হতে দিন, এরপর এতে লেবুর রস দিয়ে একটু নেড়ে নিন। এখন চায়ে কাপড়টা ভিজিয়ে ফ্রিজে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে দিন। ফ্রিজ থেকে বের করে সম্পূর্ণ মুখে কাপড়টা ২০ মিনিট বিছিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পরে মুখ ধুয়ে সেরাম/ময়েশ্চারাইজার লাগান।
উপকারিতা
পলিফেনল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ গ্রিন টি ত্বকের জ্বালাপোড়া এবং ব্রণ উঠা কমায় এবং ত্বকের গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করে।
৪. গোলাপজল-গ্লিসারিনের শিট মাস্ক
যা যা লাগবে
- গোলাপজল – ১ টেবিল চামচ
- গ্লিসারিন – ১ টেবিল চামচ
- পরিষ্কার সুতি কাপড়
যেভাবে মাস্ক বানাবেন
গোলাপজল আর গ্লিসারিন একসাথে মিশিয়ে সুতি কাপড়টা ভিজিয়ে নিন, এটা ফ্রিজে রাখতে হবে না।
ভেজানো হয়ে গেলে কাপড়ের মাস্কটা মুখে ২০ মিনিট রেখে দিন।
২০ মিনিট পরে মাস্ক ফেলে আরো ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। ১৫ মিনিট পরে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
আলাদা করে সেরাম/ময়েশ্চারাইজার লাগানোর দরকার নেই।
উপকারিতা
গ্লিসারিন ত্বককে হাইড্রেট করে। আর গোলাপজলের আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ক্ষমতা, যা সূর্যের বেগুনি রশ্মি থেকে হওয়া জ্বালাপোড়া কমায়।
এবং র্যাডিক্যাল ড্যামেজ রোধ করে ত্বককে রাখে সুস্থ-সবল।
৫. অ্যালোভেরা-ক্যামোমাইলের শিট মাস্ক
যা যা লাগবে
- অ্যালোভেরা জেল (তাজা) – আধা চা চামচ
- ক্যামোমাইল এসেনশিয়াল অয়েল – ১-২ ফোঁটা
- গ্রিন টি – ২-৪ টেবিল চামচ (২/৩টি গ্রিন টি ব্যাগ গরম পানিতে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে চা বানিয়ে নিতে হবে)
- পাতলা সুতি কাপড়ের মাস্ক
যেভাবে মাস্ক বানাবেন
কাপড় বাদে সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে কাচের প্লেটে রাখুন।
এবারে কাপড়ের মাস্কটা মিশ্রণে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এই মাস্কটা ফ্রিজে রাখা লাগবে না।
১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখার পরে মাস্কটা মুখে সর্বনিম্ন ১৫ মিনিট বা সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।
৩০ মিনিট পরে মাস্কটা খুলে আবার ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এই সময়টায় মুখে হালকা মাসাজ করতে পারেন।
১৫ মিনিট পরে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্ক ব্যবহারের পরে সেরাম/ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার দরকার নেই।
উপকারিতা
অ্যালোভেরার হাইড্রেটিং ও ময়েশ্চারাইজিং ইফেক্ট ত্বকের আর্দ্রতার ব্যালেন্স ঠিক রাখে।
এতে রয়েছে প্রচুর অ্যামিনো অ্যাসিড, যা ত্বকের কোমলভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৬. মধু-রোজহিপ অয়েলের শিট মাস্ক
রোজহিপ সিড অয়েল হচ্ছে বুনো গোলাপের বীজ ও ফল থেকে তৈরিকৃত তেল।
এটা সাধারণ গোলাপের পাপড়ি থেকে বানানো তেলের চাইতে একদম আলাদা।
যা যা লাগবে
- বিশুদ্ধ পানি – ১ কাপের চার ভাগের এক ভাগ (ডিস্টিলড ওয়াটার হলে ভাল হয়)
- মধু – আধা চা চামচ
- রোজহিপ অয়েল – ৫-৬ ফোঁটা
- পরিস্কার সুতি কাপড়
যেভাবে মাস্ক বানাবেন
একটা বাটিতে রোজহিপ অয়েল, মধু আর বিশুদ্ধ পানি একসাথে মিশিয়ে কাপড়ের মাস্কটা ভিজিয়ে নিন এবং মুখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।
২০ মিনিট পর মাস্ক সরিয়ে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
উপকারিতা
রোজহিপ অয়েলে আছে ক্যারোটিনয়েড আর টোকোফেরল যা ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া কমানো সহ যাবতীয় সমস্যার সমাধান করে।
এর অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান একজিমা ও ডার্মাটিটিসের মত জটিল চর্মরোগের অব্যর্থ ওষুধ।
৭. ক্যামোমাইল-ল্যাভেন্ডারের শিট মাস্ক
যা যা লাগবে
- ক্যামোমাইল ফুল (শুকনো) – ১ টেবিল চামচ
- পানি – ১ কাপ
- ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল – ২-৩ ফোঁটা
- পাতলা সুতি কাপড়ের টুকরা
যেভাবে মাস্ক বানাবেন
প্রথমে পানি ফুটিয়ে তাতে ক্যামোমাইল ফুল ৫ থেকে ১০ মিনিট ভিজিয়ে চা তৈরি করে নিন।
তবে যদি সরাসরি সমপরিমাণ রেডিমেইড ক্যামোমাইল টি পান তাহলে সেটা ব্যবহার করতে পারেন৷
চা ঠান্ডা হওয়ার পরে এতে ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। এবার এতে মাস্কটা ডুবিয়ে ১০ মিনিট ফ্রিজে রাখুন।
মুখে লাগানোর আগে কাপড় চিপে বাড়তি রসটুকু ফেলে দিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখার পর ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
সিরাম/ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে না।
উপকারিতা
এমনিতে ল্যাভেন্ডার যেকোন কাটাছেঁড়া সারিয়ে তোলার জন্য বিখ্যাত।
ল্যাভেন্ডারের শিট মাস্ক স্নায়ুকে আরাম দেয় এবং ত্বককে রিফ্রেশড রাখে। ক্যামোমাইল টি ন্যাচারাল ক্লিনজার ও ব্লিচের কাজ করে।
এছাড়াও এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও হিলিং উপাদান ত্বকের যেকোন ক্ষত সারিয়ে তোলে কম সময়ের মধ্যে।
৮. তরমুজের শিট মাস্ক
যা যা লাগবে
- তরমুজের রস – ৩-৪ টেবিল চামচ
- অ্যালোভেরা জেল (তাজা) – ১ টেবিল চামচ
- সুতি কাপড়ের মাস্ক
যেভাবে মাস্ক বানাবেন
তরমুজের রস আর অ্যালোভেরা জেল একসাথে মিশিয়ে ১৫ মিনিট ফ্রিজে রেখে দিন।
১৫ মিনিট পরে ফ্রিজ থেকে বের করে কাপড়ের মাস্কটা ৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন।
এরপর কাপড় চিপে বাড়তি রস ফেলে দিয়ে মুখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।
২০ মিনিট পরে মাস্কটা সরিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন যাতে রসটা মুখে ভালোভাবে বসে যায়।
এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
উপকারিতা
এই শিট মাস্কটা ব্যবহার করলে ত্বকে তাৎক্ষণিক একটা কুলিং ফিলিং পাবেন।
আপনার রোদে পোড়া চেহারা দ্রুত ঠিক করার জন্য এই মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।
তরমুজে থাকা লাইকোপেন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া আটকায়।
৯. দুধ-গোলাপজল-মধুর শিট মাস্ক
যা যা লাগবে
- দুধ – ১ টেবিল চামচ
- গোলাপজল – ২ চা চামচ
- মধু – ১ চা চামচ
- অ্যালোভেরা জেল – ১ চা চামচ
- পাতলা সুতি কাপড়
যেভাবে মাস্ক বানাবেন
সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে কাপড়ের মাস্কটা ভিজিয়ে নিন।
এরপর এই মাস্ক মুখে ১ ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন। ১ ঘন্টা পরে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
দুধ-মধুর এই শিট মাস্ক একমাত্র রাতে ঘুমানোর আগেই ব্যবহার করবেন, অন্য সময়ে না।
উপকারিতা
দুধ ও মধুতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে ও গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করে ত্বককে রাখে মসৃণ ও কোমল।
ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে এবং মৃত কোষ পুনরুদ্ধার করতে মধুর তুলনা নেই।
১০. সামুদ্রিক শ্যাওলার শিট মাস্ক
যা যা লাগবে
এই শিট মাস্কটার জন্য যে জিনিসটা প্রধান তা হল জাপানিজ ‘নরি’ নামক সামুদ্রিক শ্যাওলা। অনলাইনেই কিনতে পাবেন এই শ্যাওলা।
- ‘নরি’ শ্যাওলার শিট – ৪-৫ টি
- গ্রিন টি ব্যাগ – ২টি
- পানি – ২ কাপ
যেভাবে মাস্ক বানাবেন
প্রথমে পানি গরম করে ১৫ মিনিট টি ব্যাগ ভিজিয়ে চা তৈরি করে নিন এবং ঠান্ডা করে প্লেটে ঢালুন।
এবার এতে একটা একটা করে সামুদ্রিক শ্যাওলার শিট ভিজিয়ে নিন। এবার শিটগুলো মুখে লাগিয়ে নিন।
শিটগুলো লাগানোর সময়ে নাকের ও মুখের অংশ মাপমতো কেটে নিবেন।
১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখার পরে মাস্ক সরিয়ে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং সেরাম/ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
উপকারিতা
সামুদ্রিক শ্যাওলা ত্বকের জন্য কার্যকরী উপাদান।
বিভিন্ন কসমেটিকস প্রস্তুত করতে সামুদ্রিক শ্যাওলা বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়।
এতে থাকা বিভিন্ন বায়োঅ্যাক্টিভ কমপাউন্ড ত্বকে পুষ্টি জোগায় এবং ত্বককে সুস্থ রাখে।
সতর্কতা
- শিট মাস্ক কখনোই ময়লা মুখে ব্যবহার করবেন না। ব্যবহারের আগে অবশ্যই মুখ ভালোমতো পরিষ্কার করে নিবেন।
- ঘরে বানানো শিট মাস্ক একবার বানিয়ে দিনের পর দিন ব্যবহার না করাই ভাল। অর্থাৎ মিশ্রণ ও কাপড় দুটোই প্রতিবার নতুন করে বানিয়ে নিতে হবে।
- সুতি কাপড় বাদে অন্য কাপড় ব্যবহার করলে ত্বকে রিঅ্যাকশন দেখা দিবে। নরম ও পাতলা সুতি কাপড় মাস্কের জন্য ভালো হবে।