আপনি যদি স্বাস্থ্যকর এবং ত্রুটিমুক্ত ত্বক চান তাহলে আপনার ত্বকের ধরণটি জানা জরুরি।
আপনার ত্বক সাধারণ, শুষ্ক, তৈলাক্ত, মিশ্র নাকি সংবেদনশীল-সেই ধরণটি জানলে আপনাকে সঠিক পণ্যগুলি নির্বাচন করতে এবং ত্বকের যত্নের সঠিক পদ্ধতি বুঝে নিতে সহায়তা করবে।
তবে কীভাবে বুঝবেন আপনার ত্বকের ধরণটি কী, তার জন্য রয়েছে কিছু সহজ উপায়।
১. টিস্যু দিয়ে ত্বকের ওপর আলতো করে চাপ দিন
আপনার মুখ ধুয়ে নেওয়ার ঘন্টা খানেক পর একটি টিস্যু দিয়ে আপনার টি-জোনটিতে আলতো করে চাপ দিন।
কিছুক্ষণ পর যদি দেখেন টিস্যুটি তেলতেলে হয়ে গিয়েছে তাহলে বুঝবেন আপনার তৈলাক্ত বা মিশ্র প্রকৃতির ত্বক।
টি-জোনের মধ্যে আপনার কপাল এবং নাক অন্তর্ভুক্ত।
এই অঞ্চলটিকে টি-অঞ্চল বলা হয় কারণ আপনার নাকের ওপরের অংশটি এবং আপনার ভ্রুগুলির উপরে আপনার কপালের অংশটি ইংরেজি অক্ষর “টি” -এর মতো দেখায়।
২. আপনার ত্বকটি কেমন অনুভূত হয় তা লক্ষ্য করুন
যদি ড্রাই স্কিন হয়, তাহলে আপনার ত্বক ক্লিনজিং-এর পরে টাইট লাগবে।
অন্যদিকে তৈলাক্ত ত্বক ধুয়ে ফেলার ঠিক পরেই ততোধিক পরিষ্কার অনুভূত হবে।
আর যদি মিশ্র প্রকৃতির ত্বক হয় তবে, আপনার টি-জোনটি পরিষ্কার অনুভূত হবে।
তবে আপনার গাল টাইট থাকবে। সংবেদনশীল ত্বকে নির্দিষ্ট কিছু ক্লিনজার লাগালে রিঅ্যাকশন হতে পারে, ত্বকে চুলকানি বা ফুসকুড়ি হতে পারে।
যদি সংবেদনশীল ত্বক থাকে তবে আপনার মুখটি লাল হয়ে উঠবে, চুলকানি অনুভূত হবে বা কিছু ফেসিয়াল প্রোডাক্ট ব্যবহারের ফলে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।
আপনার যদি তৈলাক্ত ত্বক হয়, তাহলে যতই দিন গড়াতে থাকবে ততই ত্বকে তৈলাক্ত এবং চিটচিটে ভাব অনুভূত হবে।
আপনি যদি লক্ষ্য করেন যে আপনার ত্বক এই এর কোনওটির সঙ্গে মিলছে না, কোনও এই ধরণের সমস্যা দেখা দিচ্ছে না, তাহলে বুঝবেন আপনার নর্ম্যাল স্কিন।
এমনটা হলে আপনি কিন্তু ভাগ্যবান।
তবে আপনার যে কোনও বয়সে পিম্পল বা ব্রণর সমস্যা দেখা দিতে পারে, বিশেষত আপনার যদি অয়েলি স্কিন হয়।
৩. আয়নায় নিজের ত্বকটা ভাল করে দেখুন
যদি আপনার মুখের সমস্ত জায়গায় লাল, ফোলাভাব লক্ষ্য করেন তবে আপনার ত্বক সম্ভবত শুষ্ক অথবা সংবেদনশীল।
আপনার গোটা মুখটাই যদি চকচকে হয় তবে অপনি তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী।
৪. ত্বকের ওপর থাকা ছিদ্র বা পোরসের আকারটা দেখুন
আপনার যদি নর্মাল স্কিন হয় তবে আপনার পোরসগুলি দৃশ্যমান হবে, তবে বড় হবে না।
এবার আয়না থেকে কয়েক ধাপ পিছনে যান।
যদি আপনি এখনও আপনার ত্বকের ওপর থাকা ছিদ্রগুলি দেখতে পান তবে আপনি তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী।
যদি আপনার ছিদ্রগুলি একেবারেই দৃশ্যমান না হয় তবে আপনার ড্রাই স্কিন।
অন্যদিকে আপনার মুখে যদি একাধিক ছিদ্র আকারের থাকে তাহলে আপনার ত্বক শুষ্ক, তৈলাক্ত এবং সাধারণ ত্বকের সংমিশ্রণ ঘটে, যাকে বলা হয় কম্বিনেশন স্কিন।
৫.আপনার ত্বকের ওপর একটা চিমটি কাটুন
নানা অবাক হওয়ার কিছু নেই এ থেকেও বোঝা যেতে পারে আপনার ত্বকের ধরণ।
ত্বকের ওপর তাৎক্ষণিক কোনও চাপ প্রয়োগের পরে যদি আপনার ত্বক সহজেই কুঁচকে যায় তবে আপনার ত্বক শুষ্ক বা মিশ্র প্রকৃতির।
তৈলাক্ত ত্বক সেক্ষেত্রে অনেক বেশি স্মুদ হবে।
৬. একজন ভাল চর্ম বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন
একজন চর্ম বিশেষজ্ঞ বা ডার্মেটোলজিস্ট-এর কাছ থেকে এবিষয়ে সবচেয়ে ভালো ব্যাখ্যা আপনি পেতে পারবেন।
আপনি কী ধরণের ত্বকের অধিকারী, তা নির্ধারণের জন্য একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ আপনার ত্বকের ধরণ সম্পর্কিত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর আপনাকে দিতে পারবেন।
সেইসঙ্গে তাঁরা আপনার ত্বকের ধরণ এবং সেইমতো ত্বকের চাহিদা বুঝে আপনার শুষ্ক, তৈলাক্ত, সংবেদনশীল, সংমিশ্রণ বা ব্রণজনিত ত্বকের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি বাতলে দিতে পারেন।
যদি অনেক চেষ্টার পরেও ত্বক সম্পর্কিত নানা সমস্যায় ভোগেন তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া শ্রেয়।