গরমের দেশে গায়ে ট্যান হবে না তা কি হয়! তা যতই আমরা লকডাউনে ঘরে থাকি আর কম বাইরে যাই, ট্যান একটু বেশি রোদে থাকলেই হয়ে যাবে। আর ট্যান মানেই কালচে ভাব, মরা চামড়া, শুষ্ক ভাব আর অনুজ্জ্বলতা। কিন্তু এই ট্যান তো ঘরে বসে সহজেই দূর করা সম্ভব। দরকার হাতের কাছেই থাকা কিছু জিনিসের ঠিক ঠিক ব্যবহার পদ্ধতি জানা।
১. লেবুর রস আর মধু
লেবুর রসে থাকা স্বাভাবিক ব্লিচিং ক্ষমতা ট্যান সহজেই দূর করে। আর মধু সঙ্গে আনে উজ্জ্বল ভাব।
উপকরণ
- ৩ চামচ পাতিলেবুর রস
- ২ চামচ মধু, অল্প চিনি
পদ্ধতি
লেবুর রস আর মধু একটি পাত্রে নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে নিয়ে হাল্কা হাতে অল্প অল্প চিনি নিয়ে ঘষুন ৫ মিনিট মতো। চিনির খড়খড়ে ভাব স্ক্রাবিং করতে ভাল সাহায্য করবে। তারপর ২০ মিনিট রেখে দিন। এবার পরিষ্কার ঠাণ্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে তিন দিন করুন ভাল ফল পেতে।
২. টম্যাটো আর টক দই
ট্যান দূর করার সঙ্গে সঙ্গে টম্যাটোর মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান মুখের জেল্লা বাড়ায়। সঙ্গে দইতে থাকা ল্যাকটিক প্রপার্টি স্কিন নরম রাখে।
উপকরণ
- কয়েক টুকরো কাঁচা টম্যাটো
- ১ বড় চামচ টক দই
পদ্ধতি
দানা সমেত টম্যাটো নিয়ে নিন। খোসা অবশ্যই ফেলে দেবেন। এর সঙ্গে টক দই মিশিয়ে নিন। মিশিয়ে নেওয়ার সময়ে মনে রাখবেন যেন টম্যাটোর দানা থাকে। এই দানা স্ক্রাব করতে সাহায্য করবে। মিশ্রণটি মুখে ভাল করে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন হাল্কা হাতে। রেখে দিন ২০ মিনিট আর তারপর ধুয়ে ফেলুন মুখ। সঙ্গে সঙ্গেই একটা পার্থক্য বুঝতে পারবেন। এটি সপ্তাহে দুই দিন করতে পারেন।
৩. শশা
শুধুমাত্র শশা নিজেই আপনার সব ট্যান দূর করতে পারে। সঙ্গে এনে দিতে পারে একটা ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা আরামদায়ক ভাব।
উপকরণ
- স্লাইস করা শশা
পদ্ধতি
প্রথমে শশা কয়েক টুকরো করে কেটে নিন। এবার মুখ ভাল করে ধুয়ে মুছে নিন। একটা একটা করে টুকরো নিয়ে মুখে সময় নিয়ে ঘষতে থাকুন। যতক্ষণ না শশার টুকরোগুলি শেষ হয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ ঘষুন। এরপর ১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর ভাল জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এটা সপ্তাহে যত দিন খুশি করতে পারেন।
৪. আলুর রস
শুধু পুড়ে গেলে সেখানে আলুর রস দিলে উপকার হয় এমনটা নয়। ট্যান তুলতেও আলুর রসের জুড়ি মেলা ভার।
উপকরণ
- কয়েক টুকরো কাঁচা আলু
পদ্ধতি
আলু টুকরো টুকরো করে কেটে নিন। একটু থেঁতো করে নিন আলু। তবে একদম থেঁতো করে রস বের করবেন না। খোসা সমেত আলুর ওই শক্ত ভাবটা দরকার। এবার আলু হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে মুখে ঘষুন। ১০ মিনিট ধরে ঘষুন। তারপর অল্প গরম জল নিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এতেই দেখবেন মুখ কত ফ্রেস লাগছে। সপ্তাহে দুই দিন অনায়াসে করতে পারেন।
৫. পাকা পেঁপে আর মধু
উফ! শুনেই মনে হচ্ছে মুখ অনেক উজ্জ্বল হয়ে গেল। পেঁপের মধ্যে থাকা ন্যাচারান এনজাইম খুব সুন্দর করে ব্লিচ করে মুখ। আর সঙ্গে থাকা মধু মুখের ময়েশ্চার ধরে রাখে।
উপকরণ
- কয়েক টুকরো পাকা পেঁপে
- ১ বড় চামচ মধু
পদ্ধতি
পাকা পেঁপে নিয়ে ভাল করে বেটে নিন। এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট এবার মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট মতো হাল্কা হাতে মুখে ম্যাসাজ করুন। তারপর ৩০ মিনিট মতো রেখে দিন। এবার পরিষ্কার ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিলেই ট্যান দূর। সপ্তাহে এক দিন করে করতে পারেন।
৬. মুসুর ডাল বাটা আর অ্যালোভেরা
মসুর ডাল ট্যান দূর করতে অসামান্য কাজ দেয়। আর অ্যালোভেরা নিয়ে তো নতুন করে কিছু বলার নেই।
উপকরণ
- মসুর ডাল ২ বড় চামচ
- ১ চামচ অ্যালোভেরা জেল
পদ্ধতি
মসুর ডাল আগের দিন জলে ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। পরের দিন সেই ডাল বেটে নিন। তবে যেন অল্প অল্প দানা থাকে। এর সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট করে নিন। এই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে হাতে অল্প অল্প জল নিয়ে স্ক্রাব করুন। ১৫ মিনিট স্ক্রাব করার পর মুখ ধুয়ে নিন। তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। মাসে দুই দিন করবেন নিয়ম করে। ফল হাতেনাতে পেয়ে যাবেন।
এই ছ’টি ঘরে তৈরি স্ক্রাবার ব্যবহার করে দেখুন। ট্যান তোলার জন্য এগুলো বেশ ভালো উপাদান।