Search
Close this search box.

কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারের সম্পূর্ণ গাইডলাইন

বর্তমানে চোখে বিভিন্ন কালারের কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করে থাকেন নারী-পুরুষ সবাই।

যদিও নারীরা এক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন। কনের সাজ থেকে শুরু করে ঘরোয়া সাজেও আজকাল সবাই কন্টাক্ট লেন্স পরে চোখের সৌন্দর্য বাড়াচ্ছেন।

গত কয়েক দশকে এর গুণগত মান যেমন অনেক বেড়েছে; তেমনই এর ব্যবহার ও জনপ্রিয়তাও দ্বিগুণ বেড়েছে।

যেহেতু লেন্সটি সরাসরি চোখের কন্টাক্টে থাকে, তাই এর নাম কন্টাক্ট লেন্স।

কেউ চোখের সৌন্দর্য বাড়াতে ব্যবহার করেন কন্টাক্ট লেন্স; কেউ আবার চোখের সমস্যায় ব্যবহার করেন।

ছানি অপারেশনে যে কৃত্রিম লেন্স (আইওএল) লাগানো হয়, সেটা চিরদিনের জন্য চোখের ভেতরে বসানো হয়।

তাই কন্টাক্ট লেন্সের সঙ্গে কৃত্রিম লেন্সের কোনো মিল নেই।

ভুলে গেলে চলবে না যে, কন্টাক্ট লেন্স একটা স্পর্শকাতর ‘মেডিকেল ডিভাইস’।

স্টেরিলাইজ করা ছোট্ট পাত্রে বিশেষ তরলের মধ্যে রাখা এই লেন্স মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে নিজেই দূষিত হয়ে যেতে পারে।

কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সমস্যা লেন্সের নয়, বরং যাঁরা এই লেন্স ব্যবহার করেন তাঁদের নিজেদের!

চোখের চিকিৎসকের পরামর্শ এবং লেন্স ব্যবহারের নিয়ম-কানুন ঠিকঠাক না মানার কারণেই সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারকারীরা।

আসুন কন্টাক্ট লেন্স সম্পর্কে সঠিকভাবে জানি এবং বুঝে নিই এটি ব্যবহারের গাইডলাইন।

কন্টাক্ট লেন্সের ধরন

হার্ড, সেমি সফট ও সফট এবং ডিসপোজ্যাবল: এই চার ধরনের লেন্সই মূলত ব্যবহৃত হয়।

হার্ড লেন্স

এক ধরনের স্বচ্ছ প্লাস্টিক হলো হার্ড লেন্স। এই লেন্সের ভেতর দিয়ে অক্সিজেন আসতে পারে না।

সে জন্য চার ঘণ্টা পরপর খুলে ধুয়ে আবার পরতে হয়। হার্ড লেন্স আবার টেকে বেশি, দামে কম এবং অনেক পরিষ্কার।

সেমি সফট লেন্স বা আরজিপি লেন্স

সেমি সফট লেন্স অক্সিজেন পরিবহনে সক্ষম। তাই কর্নিয়ার সুস্থতায় কোনো অসুবিধা হয় না। অন্য সব দিক দিয়ে এতে হার্ড লেন্সের মতো সুবিধা।

সফট লেন্স

সফট লেন্স মূলত প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থ। তবে এর জলীয় অংশের পরিমাণ বেশি হওয়ায় বেশ নরম হয়। তাই বেশ আরামদায়ক।

এটি হার্ড লেন্সের তুলনায় আকারেও বড়। তাই সহজে খুলে পড়ে যায় না।

তবে খুব নরম হওয়ায় সহজে ছিঁড়ে বা ভেঙে যেতে পারে।

এই লেন্সের দাম বেশি, টেকেও কম, খোলার পরপর সলিউশনে ডুবিয়ে রাখতে হয়।

ডিসপোজেবল লেন্স

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে ডিসপোজেবল লেন্স। এটি এক ধরনের সফট লেন্স। তবে ব্যবহার করা যায় সর্বোচ্চ এক দিন থেকে এক বছর পর্যন্ত।

কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার বিধি 

কন্ট্যাক্ট লেন্স এর সংস্পর্শে আসার যে কোন অবস্থাতে হাত ধুয়ে নিয়ে পরিষ্কার থাকা আবশ্যক!

এটি ব্যবহারের সময় হাত যেন স্যানিটাইজড থাকে সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।

নতুবা আপনার বিপদ আপনি নিজেই ডেকে আনবেন।

যেভাবে প্যাকেট থেকে লেন্স বের করতে হয়

কন্ট্যাক্ট লেন্সের প্যাকেজিং অনেক সময় নতুনদের জন্যে অসুবিধের কারণ হয়ে দাঁড়ায় ইন্ট্যাক্ট প্যাকেট থেকে লেন্স বের করে আনতে।

কন্টাক্ট লেন্সের মূলত দুই ধরনের প্যাকেজিং হয়

  • Vial (ভায়াল) মানে গ্লাস বোতল প্যাকেজিং

এই প্যাকেজিং-এ বোতলের ক্যাপের গায়ে মার্ক করা থাকে।

ক্যাপটা উপর দিকে প্রেশার দিলেই এলুমিনিয়ামের সিল ভেঙ্গে যাবে তারপর আস্তে আস্তে সাবধানে বাকি অংশগুলো ছাড়িয়ে নিতে হবে।

খেয়াল রাখতে হবে যেন হাত কেটে না যায়, বেশ শার্প হয় ভাঙ্গা অংশগুলো। প্রয়োজনে হাতে কোন কাপড় দিয়ে ধরবেন।

  • Blister (ব্লিস্টার) মানে প্লাস্টিকের প্যাকেজিং  

প্যাকেটের একদিকে একটু খোলাই থাকে যেন ধরা যায়। এই অংশ ধরে আস্তে আস্তে টান দিলেই খুলে যাবে।

কন্টাক্ট লেন্স কিট বা কেইসে স্টোর করার পদ্ধতি

কন্ট্যাক্ট লেন্স অনেক সফট। এটা সাবধানে ব্যবহার করতে হয় যেন ছিড়ে না যায়।

এবার আসা যাক লেন্স প্যাকেট থেকে বের করার ব্যপারে। প্লাস্টিকের প্যাকেট থেকে খুব সহজেই লেন্সটা ধরে বের করা গেলেও।

বোতল থেকে লেন্সটা বের করা একটু কসরত করা লাগে।

২ ভাবে বোতল থেকে লেন্স বের করা যায়

  • Tweezer – টুইজার দিয়ে ধরে বের করা যায়।
    টুইজারের পায়ে রাবার লাগানো থাকে তাই এটা দিয়ে ধরলে ছিড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। 
  • Cotton Bud – সহজ একটা উপায় হচ্ছে কটন বাড ব্যবহার করা।
    একটা কটন বাড দিলেই সেটায় লেপ্টে চলে আসবে, এবং লেন্সটাও ছিড়ে যাবে না।

প্যাকেট থেকে বের করার পর লেন্সগুলো কিটে রাখতে হবে

ইন্ট্যাক্ট প্যাকেটের যে সল্যুশনস দেওয়া থাকে সেগুলো ফেলে দিয়ে, পর্যাপ্ত পরিমান নতুন সল্যুশনস দিয়ে ৪/৫ ঘন্টা রেখে দেওয়া ভালো।

নতুন অবস্থায় লেন্সের কোন লেফট / রাইট নেই,  তাই যে কোন একটা অংশে রাখলেই হবে; পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য মার্ক দেখে নিতে হবে।

উল্লেখ্য- লেন্সগুলো কিটে রাখার আগে, কিটগুলো এবং অন্যান্য জিনিসপত্র গরম পানিতে জীবানুমুক্ত করে নেয়া উচিত। 

কন্টাক্ট লেন্স চোখে পরার সময় যে বিষয়গুলোতে খেয়াল রাখতে হবে

আপনার সুবিধেমতন চোখে লেন্স পরতে পারবেন।

আঙুল ব্যবহার করে চোখে বসানো যায়, তবে আবার অনেকের কাছে সেটা আনইজি লাগলে লেন্স অ্যাপ্লিকেটর ব্যবহার করা যাবে।

আসুন জেনে নিই ধাপে ধাপে লেন্স পরার উপায়  

  • প্রথমেই এক হাতের মধ্যমায় লেন্স তুলে নিই। এবং এই হাতের অনামিকা আঙুল দিয়ে চোখের নিচের পাতা টেনে ধরি।
    যদি দেখি লেন্সটা লেপ্টে যাচ্ছে তাহলে অন্য হাতের পিঠে আলতো করে ধরে সল্যুশন কমিয়ে নেই। 
  • যারা অ্যাপ্লিকেটর ব্যবহার করবেন তাদের জন্যে একই নিয়মে পরতে হবে।
  • এরপর অন্যহাতের আঙুলগুলো দিয়ে চোখের উপরের পাতা টেনে ধরি। এতে করে চোখে লেন্স বসাতে সুবিধা হবে। 
  • এরপর সরাসরি নিজের আঙুলের দিকে না তাকিয়ে অন্যদিকে তাকাই। এবং আস্তে আস্তে লেন্সটা চোখের সাদা অংশে বসিয়ে দিই।
  • বসানোর পর কয়েকটা পলক দিলে লেন্স বসে যাবে সেট হয়ে।
  • চোখে ঠিকমতন সেট না হলে / ভিশন ঠিক না থাকলে চোখের ভিতরে থাকা অবস্থাতেই অল্প অল্প ঘুরিয়ে সেট করে নিতে হবে।

কন্টাক্ট লেন্স চোখ থেকে খোলার উপায়

দুই দিক থেকে চোখের পাতা টেনে ধরে। তর্জনী এবং মধ্যমা দিয়ে চিমটি করে ধরে বের করে আনি লেন্স। 

কন্টাক্ট লেন্স এর পরিচর্যা এবং পরবর্তীতে ব্যবহারের উপযোগী করে রাখা

অন্যান্য জিনিসের মতো কন্ট্যাক্ট লেন্সও ব্যবহারের পর পরিষ্কার করে রাখতে হয়।

নয়তো লেন্সে রোগজীবানু জমবে, ফাংগাস পরবে।

এজন্যে অল্প একটু সল্যুশনস হাতের তালুতে নিয়ে তাতে লেন্সকে তর্জনী দিয়ে পরিষ্কার করে তারপর নতুন করে সল্যুশনস দিয়ে রাখতে হবে। 

ক্যাপ ভালোমতন আটকে রাখতে হবে। যেন কেইস কাত হলে সল্যুশনস পরে না যায়।

আবার ক্যাপ ভালমতন এঁটে না থাকলে সল্যুশনস শুকিয়ে যায়। 

মাঝে মধ্যে চেক করতে হবে যে সব ঠিকঠাক মতন আছে কিনা।

সল্যুশনস কমে গেলে নতুন করে পরিমাণমত সল্যুশনস দিয়ে দিলেই হবে।

মনে রাখতে হবে, সল্যুশনস যেন শুকিয়ে না যায়। সল্যুশনস শুকিয়ে গেলে লেন্স শক্ত হয়ে ফেটে গিয়ে নষ্ট হয়ে যাবে।

লেন্স ব্যবহার না করলে সল্যুশনস চেঞ্জ করার তেমন একটা প্রয়োজন নেই। 

আসুন জেনে নিই, লেন্স সম্পর্কিত কিছু কমন প্রশ্নের উত্তর।

লেন্স পরলে চোখ থেকে পানি পড়ে এবং চোখ জ্বালা করে কেন?

চোখ অনেক সংবেদনশীল। পানি পরা বা জ্বালাপোড়া এমনটা অনেকেরই হয়ে থাকে। স্বাভাবিকভাবে ১-২ মিনিট এমন অবস্থা থাকতে পারে।

উলটো লেন্স পরলেও এমনটা হতে পারে। কিন্তু যদি এমন যদি হয় যে জ্বালা কমছেই না অথবা পানি পরা থামছেই না, তাহলে লেন্স খুলে রেখে দিন। 

লেন্স উল্টো কিংবা সোজা সেটা বুঝবো কী করে?

অনেক সময় লেন্স উলটো না সোজা সেটা বোঝা যায় না। কয়েকটা পদ্ধতি খেয়াল রাখলে সহজেই ধরে ফেলা যায়।

সাধারণত, লেন্সের যে দিকটা একটু উজ্জ্বল চকচকে সে দিকটা চোখের বাইরের দিকে থাকবে।

আর অপেক্ষাকৃত কম উজ্জ্বল বা ম্যাট দিকটা থাকবে চোখের ভিতরের অংশে। 

আবার উল্টো লেন্স চোখে পরলে চোখ জ্বালা করতে পারে। এর থেকেও বোঝা যেতে পারে।

কিন্তু যদি কালার ছাড়া লেন্স হয়? এক্ষেত্রে সঠিকভবে থাকলে লেন্সটা ধরলে পুরোপুরি বোল রাউন্ড শেইপ লাগবে।

আর যদি উলটো থাকে তাহলে মাথার দিকটা হালকা বেকে যাবে।

অন্যের ব্যবহার করা লেন্স পরা যাবে?

না। এটা করা উচিত হবে না। এতে করে ইনফেকশন ছড়াতে পারে।

সল্যুশনস এর পরিবর্তে অন্য কিছু ব্যবহার করা যাবে?

লেন্সের জন্যে অনুমদিত সল্যুশনস ছাড়া অন্য কিছু কখনোই ব্যবহার করা যাবে না। এমনকি পানি-ও না।  

কন্টাক্ট লেন্স কখনোই কোনো পানিতে ভেজানো ঠিক না।

কারণ পানিটা নিজেই সংক্রমিত হয়ে অতি ক্ষুদ্র জীবাণু লেন্সে লেগে থেকে কর্নিয়ার আলসার সৃষ্টি করতে পারে।

আর একটা ক্লিনার পাওয়া যায়, লেন্স ক্লিনার নামে। কনফিউশন এখানে থাকে যে লেন্স ক্লিনার বলতে কন্ট্যাক্ট লেন্সের জন্য ব্যবহার উপযোগী। কিন্তু না, ওই লেন্স ক্লিনার মানে হচ্ছে চশমার গ্লাস ক্লিনার।

তাই কখনো ভুল করেও লেন্সের জন্যে অনুমদিত সল্যুশনস ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার করবেন না।

লেন্স চোখে রেখে কীকী করা যাবে না?

  • লেন্স চোখে রেখে ঘুমানো যাবে না। 
  • গোসল করা যাবে না, সাঁতার কাটা যাবে না, চোখে পানির ঝাপটা দেওয়া যাবে না। মোট কথা, লেন্সকে পানি থেকে দূরে রাখতে হবে।
  • তীব্র তাপমাত্রা থেকে দূরে থাকতে হবে। যেমন- চুলার কাছে যাওয়া যাবে না। সেখানে প্রচুর তাপমাত্রা থাকে। লেন্স নরম প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থ থেকে তৈরি, গলে যেতে পারে।
     
  • তেমনিভাবে প্রখর রোদ এভোয়েড করতে হবে লেন্স পরা অবস্থায়। তীব্র রোদে এমনিতেই ঘোরাঘুরি করা স্বাস্থ্যের জন্যে বিপদজনক। তা সবকিছুর জন্যেই বিরূপ প্রভাব দেয়৷ 
  • বিয়ে বাড়ির হেভি লাইটিং-এ সাবধান থাকতে হবে। নরমালি ছবি তোলার জন্যে যে ফ্ল্যাশলাইট সেটা লেন্সের জন্য সমস্যা করে না। কিন্তু কিছু লাইট আছে যেগুলো অনেক তাপ জেনারেট করে, সেগুলোর দিকে কনস্ট্যান্ট কাপড়ের উপর ধরে রাখলে কাপড়েই আগুন ধরে যাবে। হ্যালোজেন লাইট নামে পরিচিত এগুলো। অনেক ক্যামেরাম্যান ওগুলো জ্বালিয়েই রাখে মুখের দিকে তাক করে। এমনটি দেখলে তাদের বারন করা এই বলে যে, বেশিক্ষণ একটানা ধরে রাখা যাবে না, যাতে বেশি হিট জেনারেট না হয়। 

কখন লেন্স পরবেন? মেকআপ নেয়ার আগে না পরে?

মেকাপ নেওয়ার আগেই লেন্স পরে নেয়া ভালো।

মেকআপ-এর শেষে কিংবা মাঝে লেন্স চোখে পরতে করতে গেলে লেন্সে মেকআপ লাগতে পারে, যেহেতু লেন্স ব্যবহারে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার একটি বিষয় আছে।

অথবা মেকআপও নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।

কতক্ষণ লেন্স পরে থাকা যাবে?

একদিনে একটানা ৮-১০ ঘন্টা লেন্স পরা যেতে পারে। তবে এটা নির্ভর করছে অভ্যাস এর উপর।

কতদিন ব্যবহার করা যাবে কন্ট্যাক্ট লেন্স এবং সল্যুশনস?

ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন মেয়াদের কন্ট্যাক্ট  লেন্স হয়, যেমন –  ১দিন / ১সপ্তাহ / ১মাস / ৩মাস / ৬মাস / ১বছর। এটাকে লেন্সের Disposal Time বলে।

প্যাকেট খোলার পর থেকে এই টাইম কাউন্ট করতে হয়।

ধরা যাক – আজকে একটা লেন্স আনপ্যাক করলেন; সেটা আগামী ১২ মাস পর মেয়াদউত্তীর্ণ হবে (যদি সেটা Yearly Disposal হয়)। 

একটা কনফিউশান এবং ভুল ধারনা কাজ করে এই নিয়ে যে- লেন্সের প্যাকেটে যে এক্সপায়ার ডেট মুদ্রিত থাকে সেটাই লেন্সের ব্যবহারের সময়সীমা বা Disposal Time-  কিন্তু না, দুটো আলাদা বিষয়।

এটা বিশেষ করে চোখের ড্রপের বোতলে দেখবেন, Expire Date ২০২৫ কিন্তু বোতলের সিল খোলার ১ মাস পর আর ব্যবহার করবেন না।  

পাওয়ার লেন্স এর জন্যে পাওয়ার কিভাবে নির্ধারণ করবেন?

বছরে অন্তত ২ বার চক্ষু পরীক্ষা করা উচিত। কারণ অনেক সময় আমাদের চোখের পাওয়ার বাড়ে/কমে। 

অনেকের পাওয়ার স্টেবল হয়ে যায়, মানে এক জায়গায় এসে আটকে যায় আর বাড়ে কমে না। তবুও বছরে অন্তত ১ বার চোখের পাওয়ার চেক করানো উচিত।

কন্ট্যাক্ট লেন্সের পাওয়ারটা, মূল চশমার পাওয়ার থেকে সবসময় এক্সাক্ট সেইম হয় না।

বেশিরভাগ সময়ই মূল চশমার থেকে কিছুটা কমিয়ে নিতে হয় এডজাস্টমেন্টের জন্যে।

অভিজ্ঞ কাউকে আপনার চশমার পাওয়ার কার্ড দেখিয়ে লেন্সের জন্যে পাওয়ার করাবেন।

অথবা ডাক্তার থেকে লেন্সের জন্যে পাওয়ার কত সেটা লিখিয়ে নিবেন।

বয়স যদি ১৮ বছরের কম হয় তাহলে কি লেন্স ব্যবহার করা যাবে?

চোখ একইসাথে খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং সেনসিটিভ। লেন্স ব্যবহার করার আগে প্রাপ্তবয়স্ক হলে খুবই ভালো।

তবে আপনি যদি অপ্রাপ্তবয়স্ক হন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে লেন্স ব্যবহার করবেন।  

কাদের জন্য কন্টাক্ট লেন্স প্রযোজ্য নয়?

  • যাদের চোখে অ্যালার্জি আছে, তারা ব্যবহার করবেন না।
  • বেশি ধুলাবালির মধ্যে যারা কাজ করেন তারা পরবেন না লেন্স।
  • মানসিক ভারসাম্যহীন থাকলে।
  • চোখের যত্নে যারা উদাসীন থাকেন, তারাও পরবেন না।
  • যাদের চোখ বারবার লাল হয় বা পানি পড়ে।
  • যাদের ড্রাই আই সিনড্রোম আছে বা শুকনো চোখ অথবা যাদের চোখে মিউকাসের পরিমাণ বেশি তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়।
  • ডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যে যারা ইনসুলিন গ্রহণ করেন; তাদের জন্য কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার কেরা উচিত নয়।

খেয়াল রাখা জরুরি

  • কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারকারীদের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খুবই জরুরি।
  • চোখে লেন্স লাগানো বা খোলার আগে হাত ভালো করে পরিস্কার করে শুকিয়ে নিতে হবে। নখের আঁচড় যেন না লাগে।
  • সর্বোচ্চ ৮-১০ ঘণ্টা লেন্স পরে থাকতে পারবেন। তবে ভুল করেও লেন্স পরে ঘুমাবেন না।
  • খেয়াল রাখতে হবে ডান ও বাম দিকের লেন্স যেন গুলিয়ে না ফেলেন।
  • লেন্স পরা অবস্থায় চোখ ঘষা বা রগড়ানো যাবে না।
  • তীব্র তাপমাত্রা থেকে দূরে থাকতে হবে। যেমন- চুলার কাছে যাওয়া যাবে না। তীব্র রোদে যাওয়া যাবে না। হেভি লাইটিং যেটা তাপ উৎপন্ন করে, সেটার সামনে যাওয়া যাবে না।
  • ভুলেও কন্টাক্ট লেন্স থুতুতে ভিজিয়ে রাখা যাবে না বা থুতুর সংস্পর্শে আনা যাবে না। কেননা মুখের ভেতর এবং থুতুতে বহু ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই ব্যাকটেরিয়ার অনেকগুলোই আমাদের পরিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় হলেও চোখের জন্য নয়।
  • চোখে আইলাইনার বা মাশকারা ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই আগে লেন্স পরে নিয়ে তারপর চোখের মেকআপ করতে হবে।
  • অনলাইনে কন্টাক্ট লেন্স কেনার সুযোগ বেড়েছে। কিন্তু সাবধান, ভালো কোয়ালিটি এবং অথেনটিক প্রোডাক্ট ছাড়া পার্চেস করবেন না।
  • চোখ লাল হয়ে গেলে, ব্যথা হলে বা ময়লা জমলে লেন্স পরা বন্ধ করে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
  • মনে রাখবেন কন্টাক্ট লেন্স নিয়মিত ব্যবহার করা গেলেও; এটি সম্পূর্ণ বিপদমুক্ত নয়। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করা উচিত নয়।