Search
Close this search box.

আমলকীর ৫টি উপকারী ফেইসপ্যাক

আমলকী খুবই উপকারী ফল এটা সবাই জানে। নানা ধরণের রোগ প্রতিরোধ করতে আমলকীর তুলনা হয় না।

ডায়াবেটিস কমাতে, ব্লাড প্রেশার কমাতে, হজমে সাহায্য করতে-এরকম নানা ধরণের অসুখ সারাতে আমলকীর কার্যকারিতা অনেক বেশি। 

এই ফলের স্বাস্থ্য গুণাগুণ সম্পর্কে তো জানলেন।

কিন্তু আপনি কি জানেন রূপচর্চায় আমলকীর বিশেষ অবদান রয়েছে?

আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরণের সমস্যা সমাধানে আমলকীর উপকারিতা অনেক বেশি। 

আমলকীর পুষ্টিগুণ

আমলকী পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর মধ্যে থাকা উপাদান আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

তাছাড়া এটা আমাদের ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। 

এর মধ্যে থাকা উপাদানগুলো হলো

  • সোডিয়াম
  • পটাশিয়াম 
  • কার্বোহাইড্রেট 
  • প্রোটিন 

আমলকীর তৈরি ফেইসপ্যাক

১) আমলকীর সুদিং ফেইসপ্যাক

প্রয়োজনীয় উপকরণ 
  • আমলকী
  • পেঁপে
পদ্ধতি 
  • কয়েকটি আমলকী নিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ড করে আমলকীর রস আলাদা করে ছেঁকে নিন। 
  • একটি পরিষ্কার বাটি নিন। সেখানে দুই টেবিলচামচ আমলকীর রস নিন। 
  • তাতে একটি পাকা পেঁপে অর্ধেক কেটে ভালোভাবে চটকে নিন। 
  • দুইটি উপকরণ ভালোভাবে মিক্স করে নিন।
  • এবার তুলোর প্যাড মিক্সারে ডুবিয়ে সেটা আপনার পুরো ত্বকে অ্যাপ্লাই করুন। 
  • আপনার ত্বকে সম্পূর্ণ অ্যাপ্লাই করার পর ১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর ধুয়ে ফেলবেন ঠান্ডা পানি দিয়ে। 

আমলকী আর পেঁপে, এই দুটো উপাদানই ত্বকের পিগমেন্টেশন কম করে ত্বক প্রশমিত করে।

এটা ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে ত্বককে হেলদি রাখতে সাহায্য করে।  

ভালো রেজাল্ট পেতে টানা দুই সপ্তাহ একদিন পরপর ব্যবহার করতে হবে।  

২) ট্যান দূর করতে আমলকীর ফেইসপ্যাক

প্রয়োজনীয় উপকরণ 
  • দই
  • মধু
  • আমলকী
পদ্ধতি 
  • কয়েকটি আমলকী ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন। রস ছেঁকে আলাদা করে অন্য একটি পাত্রে রাখুন। 
  • এর মধ্যে এক টেবিলচামচ মধু ও এক টেবিলচামচ দই অ্যাড করুন।
  • সবগুলো উপাদান ভালোভাবে মিক্স করে নিন। 
  • একটি ব্রাশের মাধ্যমে সম্পুর্ণ ত্বক ও গলায়ও অ্যাপ্লাই করুন।
  • ২০ মিনিট আপনার ত্বকে ভালোভাবে বসতে দিন। তারপর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। 

অনেক পুরোনো দিন থেকেই আমলকী রুপচর্চায় ট্যান রিমুভার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

দই, মধু ও আমলকীর প্যাক ট্যান দূর করতে খুব উপকারী।

রেগুলার ব্যবহারের ফলে ত্বকে দীর্ঘদিন ধরে হওয়া সানট্যান ও সানবার্ন দূর হবে।

এই প্যাকটি ত্বক উজ্জ্বল করতেও সমানভাবে উপযোগী।

৩) এক্সফোলিয়েশন 

প্রয়োজনীয় উপকরণ 
  • আমলকী
  • গোলাপজল
  • চিনি
পদ্ধতি 
  • আমলকী অল্প করে ছেঁচে নিতে হবে। দানাদার যেনো থাকে সেইভাবেই ছেঁচে নিতে হবে। 
  • এর সাথে এক টেবিলচামচ চিনি ও এক টেবিলচামচ গোলাপজল অ্যাড করে নিতে হবে। 
  • সবগুলো উপাদান ভালোভাবে মিক্স করে নিন। এবার সম্পুর্ন ত্বকে অ্যাপ্লাই করতে হবে। 
  • আলতো করে ঘষুন পুরো ত্বকে। বিশেষ করে নাকের আশেপাশে ও থুতনিতে ঘষে নিন।
    এতে করে ত্বকে তৈরি হওয়া ডেডসেল রিমুভ হবে। 
  • কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এবং অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করতে হবে।

স্ক্রাব করার ফলে আমাদের ত্বকের মৃত কোষ দূর হবে। যার ফলে ত্বক উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত হবে।

স্ক্রাবারে থাকা গোলাপজল ত্বকে গ্লো ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। 

৪) পিম্পল দূর করতে আমলকীর পেস্ট

প্রয়োজনীয় উপকরণ 
  • আমলকী
পদ্ধতি 
  • কয়েকটি আমলকী ছেঁচে নিন খুব ভালোভাবে। 
  • সাবধানে ছেঁচে খুব ঘন পেস্ট তৈরি করুন যাতে অ্যাপ্লাই করুন পর সেটা ত্বক থেকে পড়ে না যায়। 
  • পিম্পল যে যে জায়গায় রয়েছে সেই সেই জায়গায় অ্যাপ্লাই করুন। 
  • ১৫/২০ মিনিটের মতো রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

আপনি চাইলে সম্পুর্ন ত্বকে অ্যাপ্লাই করতে পারেন।

সম্পুর্ন ত্বকে অ্যাপ্লাই করার ফলে আপনার ত্বকের ফাইন লাইন দূর হয়ে ত্বক পরিষ্কার করে তুলবে।

৫) অ্যান্টি-এজিং ফেইসপ্যাক

প্রয়োজনীয় উপকরণ 
  • আমলকী
  • পানি
  • কটন প্যাড
পদ্ধতি 
  • আমলকী ভালোভাবে ধুয়ে ব্লেন্ড করে নিন। 
  • একটি সুতি কাপড়ের মাধ্যমে ছেঁকে হাত দিয়ে চেপে আমলকীর রস বের করে নিতে হবে। 
  • আইসট্রেতে ঢেলে ফ্রিজে বরফ করে নিন। এটা ত্বকে রাব করে ইউস করতে পারেন।
    অথবা একটি কটন প্যাড আমলকীর রসে ডুবিয়ে নিন।
    সেটা সম্পুর্ন ত্বকে অ্যাপ্লাই করুন। ১৬/২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। 

আমলকীতে রয়েছে অ্যান্টি এজিং উপাদান। এটা ত্বকে বয়সের ছাপ আসতে দেয় না।

বলিরেখা দূর করে ত্বক উজ্জ্বল ও গ্লো করতে সাহায্য করে। 

আমলকীর জুসের উপকারিতা

বাহ্যিকভাবে অ্যাপ্লাই করার ব্যাপারে জেনে নেয়া গেলো। কিন্তু আমলকীর জুসের উপকারিতা না জানলেই নয়। 

  • আমলকীর জুস রেগুলার পান করলে এটা আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
    এতে থাকা ভিটামিন-সি আমাদের শরীরের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করবে। 
  • যাদের মাড়ি থেকে রক্ত বের হয় বা হলদেটে দাঁত নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, তাদের জন্য আমলকীর জুস দারুণ কাজ করবে।
    আমলকীর জুস রেগুলার পান করলে মুখের দাঁতের এই সমস্যাগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। 
  • চোখের সমস্যা যাদের আছে তাদের জন্য এই জুস খুবই উপকারী।
    চোখে কম দেখতে পায় যারা তারা রেগুলার আমলকীর জুস পান করলে চোখের দৃষ্টির উন্নতি হবে। 
  • আমলকীতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটা ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে।
    শরীরে সুগারের মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে রাখে। 
  • যাদের হাড় দুর্বল তাদের জন্য আমলকীর জুস হতে পারে জাদুকরী পানীয়।
    আমলকীর জুস আমাদের শরীরের জন্য এতটাই উপকারী যে এটা আমাদের শরীরের হাড় শক্ত করে, জয়েন্ট পেইন দূর করতে সাহায্য করে।