ব্যস্ত জীবনে প্রত্যেক মানুষই একে অপরের থেকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত।
ফলে মানসিক চাপ এবং অনিদ্রা খুবই পরিচিত সমস্যা।
প্রত্যেককেই নিজ কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়।
আর সেই কারণেই কেবল বয়স্কদের নয়, আজকাল অল্প বয়সে চুল পেকে যাচ্ছে।
এইসব প্রতিরোধে মানুষ আজকাল অনেক বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকেন, তবে এতে কিন্তু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে।
এমন পরিস্থিতিতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তেল এবং শ্যাম্পু বানানো সঠিক মনে করেন, কারণ এর মধ্যে একটুও কেমিকেল থাকে না।
এবং এই তেল আপনার চুলকে মজবুত আর ঘন কালো বানাতে সাহায্য করে।
এমন কিছু তেলের কথা বলব যা অ্যাপ্লাই করলে আপনার পাকা চুল কালো হতে শুরু করবে।
১) আমলা পাউডার এবং নারকেল তেল
প্রথমেই বলে রাখি আমলায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে, যা আপনার চুলের কোলোজেন ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও, যা চুলের ফলিকলগুলিকে মেরে ফেলে।
- এরজন্য আপনি ২ চাচামচ আমলা পাউডার, ৩ চামচ উষ্ণ নারকেল তেলে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
তেল ঠান্ডা রলে তা চুলের গোড়ায় লাগান। এরপর তেলটি ১ ঘণ্টা চুলের গোড়ায় বসতে দিন।
এরপর সালফেট নেই এমন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। - এই তেলটি সপ্তাহে কমপক্ষে ২-৩ বার প্রয়োগ করুন।
এই তেল আপনার চুল কালো করতে সাহায্য করবে।
২) কারি পাতা এবং নারকেল তেল
আপনার চুল কালো করতে প্রয়োজন মেলানিন, আর যা ভরপুর পরিমাণে পাওয়া যায় কারি পাতায়।
তাছাড়া কারি পাতা ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ এবং নতুন চুল গজাতেও খুবই কার্যকরী।
- এই তেল তৈরির জন্য একটি প্যানে ৩ চামচ নারকেল তেল এবং ৫-৬টি কারি পাতা দিয়ে দিন।
মিশ্রণটি কালো রঙ না হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। - এরপর নামিয়ে নিয়ে তেল ঠান্ডা হতে দিন। এরপর সারা চুলে এবং চুলের গোড়ায় এই তেল ম্যাসাজ করে নিন।
প্রায় ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। এই প্রক্রিয়াটি সপ্তাহে কমপক্ষে ২-৩ বার করুন।
৩) নারকেল তেল এবং লেবুর রস
লেবুতে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন সি এবং ফসফরাস, যা চুলের ফলিকলে থাকা পিগমেন্টেশন বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- এই তেলটি তৈরি করতে ২ চাচামচ লেবুর রসের সঙ্গে ২ চামচ উষ্ণ নারকেল তেল মেশান।
তারপরে চুলের গোড়ায় ভালো করে এই তেল লাগান। - এইভাবে রেখে দিন প্রায় ১ ঘন্টা পর্যন্ত। তারপরে চুল ধুয়ে ফেলুন।
আর এই পদ্ধতিটি আপনার সপ্তাহে দু’বার মেনে চলুন।
৪) সর্ষের তেল এবং ক্যাস্টর অয়েল
চুলকে স্বাস্থ্যকর রাখতে আমাদের প্রয়োজন জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় উপাদান যা সর্ষের তেলে পাওয়া যায়।
একইসঙ্গে আপনি ক্যাস্টর অয়েলে পাবেন প্রোটিন, যা চুলকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
- এই তেল তৈরি করতে ২ চামচ সর্ষের তেলের সঙ্গে ১ চামচ ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে হালকা গরম করুন।
এরপর তেলটি ঠান্ডা হওয়ার পর ১০ মিনিটের জন্য চুলে মাসাজ করুন। - কমপক্ষে ৩০-৪৫ মিনিটের জন্য তেলটি চুলে মাথায় রাখুন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে কমপক্ষে ২-৩ বার এই পদ্ধতিটি মেনে চলুন।
এই তেল আপনার চুলে শক্তি যোগাবে এবং উজ্জ্বলও করবে।
৫) তিলের তেল এবং গাজরের রস
তিলের তেল চুল কালো করতে খুবই কার্যকর।
এছাড়া মেথি পাউডারও চুলের রঙ কালো করতে সাহায্য করে।
- এই তেল তৈরির জন্য ১০০ মিলি তিলের তেল এবং ১০০ মিলি গাজরের রস এবং ৫০ গ্রাম মেথি পাউডার একসঙ্গে মিশিয়ে নিন।
এবার মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে ভালো করে ঝাঁকিয়ে নিন।
এবার মিশ্রণটি ১০ দিন সূর্যের আলোকে রাখতে হবে। - এরপর এই নির্যাসটি চুলের গোড়ায় ভালো করে ম্যাসাজ করুন এবং এক ঘণ্টা এইভাবে মাথায় রেখে দিন।
- এরপর চুল সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই তেলটি কমপক্ষে টানা এক মাস ব্যবহার করতে হয়।
৬) কালোজিরা এবং অলিভ অয়েল
নবজাতক শিশুর জন্য অলিভ অয়েল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তবে অলিভ অয়েল কিন্তু সাদা চুল কালো করার ক্ষেত্রে বিশেষ কার্যকর।
- এই তেলের মধ্যে এক টেবিলচামচ কালোজিরা মিশিয়ে ওই তেল চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন ১০-১৫ মিনিট, যাতে তেল চুলের গোড়ায় পৌঁছে যেতে পারে।
- এবার ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন এবং ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে নিন। আপনি এই পদ্ধতিটি রোজ অ্যাপ্লাই করতে পারেন।
৭) হেনা পাতা এবং নারকেল তেল
মেহেন্দির বাদামী রঙ আপনার গোড়ায় পৌঁছে গিয়ে আপনার চুলকে সাদা হওয়ার হাত থেকে বাধা দেয়।
শুধু তাই নয়, এটি আপনার মনকেও শান্ত করে।
- এর জন্য প্রথমে একটি প্যানে নারকেল তেলকে হালকা গরম করে নিয়ে তাতে ৩-৪টি হেনা পাতা যোগ করুন।
এরপর গাঢ় বাদামী রঙ না আসা পর্যন্ত মিক্স করতে থাকুন। - তেল ঠান্ডা হয়ে এলে চুলে ম্যাসাজ করুন। কমপক্ষে ৪৫ মিনিট মাথায় রাখুন।
এবার সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
১০ দিনের মধ্যে আপনি দেখতে পাবেন যে, আপনার চুল কালো হতে শুরু করেছে।