Search
Close this search box.

কোরিয়ান গ্লাস স্কিন কেয়ার রুটিন

কোরিয়ান বিউটির একটি খুবই জনপ্রিয় টার্ম আছে যা গ্লাস স্কিন নামে পরিচিত। 

বিশেষ করে যাদের স্কিন একদম ফ্ললেস, সেই টাইপ স্কিনকেই গ্লাস স্কিন বলে। যেমন একনে ফ্রি, টান টান ত্বক, সংকুচিত পোরস, দাগমুক্ত ত্বক ইত্যাদি।  

সফট গ্লোয়িং ত্বক সবাই পেতে চায়। তাই গ্লাস স্কিনের এই টার্মটা খুব ট্রেন্ডে রয়েছে খুব। তার জন্য ফলো করতে কিছু পদ্ধতি ও মেনে চলতে হবে নিয়ম। খাদ্যাভাসে আনতে হবে কিছু পরিবর্তন।  

স্টেপ বাই স্টেপ গ্লাস স্কিন রুটিন

কোরিয়ান বিউটি টার্মে টেন স্টেপ স্কিন কেয়ারের কথা বলা হয়। ১০টি স্টেপের মাধ্যমে তারা তাদের ত্বকের যত্ন নিয়ে থাকে। অনেকে গ্লাস স্কিন বলতে শুধু এটাও বুঝে থাকেন। 

ডাবল ক্লিনজিং

আমাদের ত্বক পলিউশনের কারণে মারাত্বকভাবে ড্যামেজ হচ্ছে দিন দিন। আমাদের ত্বকে ময়লা আটকে আমাদের ত্বক নষ্ট করে ফেলে। পরবর্তীতে সেটা পিম্পলে রূপান্তর হয়। তাই ডাবল ক্লিনজিং করা উচিৎ। এটা কোরিয়ান বিউটি টার্ম এর প্রথম ধাপ। প্রথমে একটি অয়েল ক্লিনজার দিয়ে সম্পূর্ণ ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। তারপর ফোমিং ক্লিনজারের মাধ্যমে ডাবল ক্লিনজিং করে নিতে হবে। 

এক্সফোলিয়েট

এক্সফোলিয়েট হলো ক্লিনজারের পরবর্তী ধাপ। এক্সফোলিয়েটের মাধ্যমে ত্বকের মৃত কোষ দূর হয়।

তাছাড়াও আমাদের অনেকের ত্বকে ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস রয়েছে। এক্সফোলিয়েট সেইগুলো দূর করতে সাহায্য করে। 

টোনার

টোনার আমাদের ত্বকের পিএইচ লেভেলের ভারসাম্য বজায় রাখে। এবং পরবর্তী ধাপের জন্য আমাদের ত্বক প্রিপেয়ার করে তোলে। 

এসেন্সিয়াল অয়েল 

এসেন্সিয়াল অয়েল হলো এমন ওয়াটার বেইজড অয়েল যা আমাদের ত্বক ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে।

এটা শুধু আমাদের ত্বক ময়েশ্চারাইজই করে না বরং আমাদের ত্বকের গ্লো বৃদ্ধি করে তোলে। 

সিরাম বা ফেইস অয়েল

গ্লাস স্কিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে সিরাম। সিরাম সাধারণত খুব লাইটওয়েট হয় যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ।

সিরাম আমাদের ত্বকের এজিং ও ফাইন লাইনস দূর করতে সাহায্য করে। 

কিন্তু সিরাম পছন্দ করার ক্ষেত্রে এমন সিরাম বেছে নিতে হবে যেখানে ভিটামিন বা হ্যালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত।

কারণ ভিটামিন যুক্ত সিরাম বা হ্যালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত সিরাম ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। 

ময়েশ্চারাইজার

ময়েশ্চারাইজার আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। আমাদের ত্বক হাইড্রেটেড রাখতে ময়েশ্চারাইজারের কোনো তুলনা হয় না।

হাইড্রেটেড রাখার পাশাপাশি আমাদের ত্বক করে তোলে স্মুথ ও বাউন্সি। 

সানস্ক্রিন 

আমাদের ত্বককে সূর্যের আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করা খুবই প্রয়োজন।

কারণ সূর্যের আলট্রা ভায়োলেট রশ্মির মাধ্যমে আমাদের ত্বকে নানা ধরণের সমস্যা হয়ে থাকে।

আমাদের ত্বক প্রটেক্ট করার জন্য সানস্ক্রিন অত্যাবশকীয় উপাদান। দিনের বেলা এমনকি রাতের বেলায়ও আমাদের সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। 

ফেইস মাস্ক

ফেইস মাস্ক বাছাই করার ক্ষেত্রে ভালো ক্লে মাস্ক বাছাই করা বুদ্ধিমামের কাজ হবে।

ক্লে মাস্ক আমাদের ত্বক ঠান্ডা করে তোলে। পোরস মিনিমাইজ করতে, ইচিং সমস্যা সমাধানে ও ড্রাইনেস দূর করতে ক্লে ফেইস মাস্ক খুবই কার্যকরী। 

আই ক্রিম

রাতেরবেলা চোখের জন্য একটি ভালো আই ক্রিম বাছাই করে নেয়া উচিত। তাহলে আমাদের চোখে ডার্ক সার্কেল আসা রোধ হবে। 

প্রাকৃতিকভাবে গ্লাস স্কিন পেতে হলে আরো কিছু স্টেপ ফলো করুন

আপনার লাইফস্টাইল একটু পরিবর্তন করেই একটি সুন্দর ত্বকের অধিকারী হয়ে যেতে পারেন। 

হেলদি ফ্যাট জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন

আপনার ত্বক অবশ্যই হেলদি ফ্যাট খুব পছন্দ করবে। কারণ হেলদি ফ্যাট আমাদের ত্বক হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়াও আমাদের ত্বক ময়েশ্চারাইজড ও ক্লিয়ার রাখতে সাহায্য করে। 

হেলদি ফ্যাট হিসেবে খেতে পারেন স্যামন, টুনা, সারডিনস ইত্যাদি।

তাছাড়াও অ্যাভোকাডো খুব হেলদি। এটা আমাদের শরীরের জন্য যেমন ভালো তেমনি আমাদের ত্বকের জন্যেও চমৎকার। 

সবজি ও ফল গ্রহণ করুন 

সবজি ও ফল-ফলাদি আপনার ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সবসময়ই উপকারী। বিশেষ করে সবুজ সবজি অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর থাকে। এই জাতীর খাবার আমাদের ত্বকে বয়সের ছাপ আসতে দেয় না। 

উল্লেখযোগ্য নাম হলো পালং শাক। এটা আমাদের ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। ছোট বেলায় “পাপায় দ্যা সেইলর ম্যান” নামক কার্টুনে স্পিনেচ বা পালং শাককে দেখানো হয়েছিলো শক্তির উৎস। আসলেই এটা সৌন্দর্য ও শক্তির উৎস। 

তাছাড়াও বাদাম আমাদের ত্বক সুন্দর রাখতে খুবই উপকারী। 

হাইড্রেট রাখা

আমাদের ত্বক হাইড্রেটেড রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ত্বক ড্রাই বা শুষ্ক হয়ে গেলে সেবাম উৎপন্ন বেশি হয়। যার ফলে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হতে থাকে। আর অতিরিক্ত তেল পিম্পল হওয়ার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 

তাই আমাদের বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। রাতে আমাদের পাশে এক বোতল পানি রাখা খুব ভালো। একটি পর পর পানি পান করলে শরীর ডিহাইড্রেট হবে না। 

প্রাকৃতিক উপাদানের তৈরি ফেইসপ্যাক ব্যবহার করা

আমাদের ডেইলি রুটিনে প্রাকৃতিক ফেইস প্যাক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেমিক্যাল বেইজড প্রোডাক্ট আমাদের ত্বক নির্জীব করে দেয়। তাই আমাদের ত্বক প্রাণবন্ত করার জন্য প্রাকৃতিক ফেইসপ্যাক ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। 

দুধের ফেসপ্যাক

চালের গুঁড়ার সঙ্গে দুধ বা দই মিশিয়ে তৈরি করে নিন একটি ফেইসপ্যাক। এই ফেইসপ্যাকটি মুখে ১৫ মিনিট রেখে তারপর ডাবের পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

মধুর ফেসপ্যাক

ত্বক ময়েশ্চারাইজ রাখতে মধুর ফেইসপ্যাকের তুলনা হয় না।

একটি বাটিতে মধু, গ্লিসারিন, গোলাপজল ও এক ফোঁটা লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করুন। ১৫/২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। 

হলুদ

ত্বকের যত্নে হলুদ অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। হলুদে রয়েছে কারকিউম যা আমাদের ত্বকের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। মুখ পরিষ্কার ও স্ক্রাবিং করতে হলুদের জুড়ি নেই।

আধা টেবিলচামচ হলুদ ও আধা টেবিলচামচ চিনি, অল্প মধুর সঙ্গে মিশিয়ে মুখ স্ক্রাব করে ধুয়ে ফেলুন। 

এরপর একটি তোয়ালের মধ্যে কয়েক টুকরো বরফ নিয়ে মুখে আলতো করে রাব করতে থাকুন। এতে পোরস মিনিমাইজ হওয়ার পাশাপাশি ত্বক ভালো থাকবে।