Search
Close this search box.

ফেস মাস্ক ব্যবহারের সঠিক উপায় ও ত্বকের যত্নে করণীয়

আমাদের এই নিউ নরমাল জীবনের সর্বক্ষণের সঙ্গী ফেস মাস্ক। মাস্ক ছাড়া আমরা বাইরে যেতেই পারব না।

আর মাস্ক প্রতিনিয়ত পরার ফলে আমাদের মুখে র‍্যাশ, লাল ভাব ইত্যাদি হতেই থাকে।

বর্তমান ডাক্তারি পরিভাষায় তো ‘মাস্কনে’ বলে টার্ম চালু হয়েই গিয়েছে।

তাহলে এখন কী করবেন! কীভাবে আপনি এই সমস্যার থেকে মুক্তি পেতে পারেন পড়ে নিন।

সাধারণভাবে কী কী করণীয়

  • ১০০% কটনের তৈরি ফেস মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। এই ধরণের মাস্ক ন্যাচারাল আর নরম হয়। নিঃশ্বাস নিতে সুবিধে হয়।
    নাইলন, রেয়ন, পলিয়েস্টারের মাস্ক কেনার দরকার নেই। এগুলি থেকে র‍্যাশ বেশি হয়, নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয়।
  • চিকিৎসকরা তো বলছেনই যে এন৯৫ মাস্ক সবার দরকার নেই।
    সাধারণ ভাবে মুখ, নাক ঢেকে রাখাই আমাদের কর্তব্য যাতে অন্যের হাঁচি, কাশির সংস্পর্শে আমরা সরাসরি না আসি।
    তাই আমরা ঘরে সাধারণ সুতির কাপড়, যেগুলো বেশ ফ্যান্সি, সেগুলি দিয়ে বানাতে পারি মাস্ক।
    আবার সারাদিনের পর এই মাস্ক ধুয়ে নেওয়াও বেশ সহজ। তাই এই ধরণের মাস্ক ব্যবহার করুন।
  • অবশ্যই ফ্রেগরেন্সহীন খুব একটা ফেনা হয় না এরকম ক্লিঞ্জার দিয়েই মাস্ক ধুয়ে নেবেন।
    হাত দিয়ে সামান্য ঘষে সারাদিনের ময়লা তুলে নেবেন। ওয়াশিং মেশিনে দেবেন না মাস্ক।
    কারণ ওয়াশিং মেশিনে একটা তাপ থাকে যেটা খারাপ মাস্কের জন্য।
  • যে কয়েকদিন এই ভাইরাসের প্রকোপ আমাদের মধ্যে থাকছে সেই কয়েকদিন মেকআপের ক্ষেত্রে একটু কম্প্রোমাইস করতে হবে।
    চোখে মেকআপ করাই যায়। কিন্তু যে অংশ মাস্কের নিচে আছে সেখানে মেকআপ না করাই ভালো।
    কারণ জায়গাটা ভেপে গেলে মেকআপের সঙ্গে মিলে একটা বিচ্ছিরি ব্যাপার হতে পারে।
    সেটা আপনার স্কিনের জন্য ভালো নয়।
  • অবশ্যই মাস্ক পরার আগে আর মাস্ক খোলার পর মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে নেবেন।

র‍্যাশ আটকানোর উপায়

সাধারণভাবে কী কী করতে হবে আমরা দেখলাম। এবার বিশেষ বিশেষ সমস্যা, যার মধ্যে অন্যতম র‍্যাশ, তা আটকাতে কী করা যায় দেখব।

১. গোলাপ জল আর চন্দনগুড়ো মিশিয়ে র‍্যাশ হওয়া জায়গায় লাগাতে হবে। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে নিতে হবে। এটা রোজ করতে পারেন।

২. যদি র‍্যাশ থেকে চুলকুনি হয় তাহলে এক মগ জলে একটু ভিনিগার নিয়ে সেটা ওই র‍্যাশের ওপরে দিয়ে দিন। এতে চুলকুনি অনেক কম হবে।

৩. নিমপাতা র‍্যাশের জন্য খুব ভালো। চার কাপ জলে অল্প আঁচে নিমপাতা এক ঘণ্টা ধরে ফোটান।
সারা রাত রেখে দিন জলটা নিমপাতা সমেত। সকালে উঠে র‍্যাশ হওয়া জায়গায় অ্যাপ্লাই করুন।
নিমপাতা গুলো পেস্ট করে ওই র‍্যাশের জায়গায় লাগাতে পারেন। এতে খুব তাড়াতাড়ি র‍্যাশ কমবে।

অ্যাকনে থেকে মুক্তি পেতে

১. মুখ ভালো ভাবে পরিষ্কার করার পর তেলহীন লোশন ব্যবহার করতে পারেন।

২. অ্যাকনের জন্য গ্রিন টি খুব ভালো। একটি গ্রিন টি ব্যাগ গরম জলে আধ ঘণ্টা ফুটিয়ে নিন। ঠাণ্ডা করে মুখে অ্যাকনে হওয়া জায়গায় লাগান। অনেক উপকার পাবেন।

৩. চন্দনও কিন্তু অ্যাকনে ভালো কমাতে পারে।

৪. আরেকটা কার্যকরী প্যাক আছে এই সমস্যার জন্য। দারচিনি পাউডার, মেথি পাউডার, লেবুর রস আর মধু দিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিন।
মুখের যে অংশ মাস্কের নিচে থাকে সেই অংশে কয়েক ঘণ্টা, বা সারারাতও রেখে দিতে পারেন। খুব ভালো ফল হয় এতে।

৫. টি ট্রি অয়েলের সাথে জল বা গোলাপ জল মিশিয়ে ওই অ্যাকনে হওয়া জায়গায় ব্যবহার করলে তাড়াতাড়ি ভালো কাজ পাওয়া যায়।

মুখের লালচে ভাব কমাতে

১. ভারী মেকআপ একদম করা যাবে না। মুখ পরিষ্কার করতে হবে মাইল্ড ক্লিনসার দিয়ে আর তারপর গোলাপ জল তুলো দিয়ে ট্যাপ করতে হবে।

২. রোজ অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন আর ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

৩. গ্রিন টিও এক্ষেত্রে কাজ করে। গ্রিন টি বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। ৩০ মিনিট পর বের করে তুলো ডুবিয়ে লাল হওয়া জায়গায় ব্যবহার করলে লালচে ভাব কমবে।

৪. টি ট্রি তেল আর নারকেল তেল ২ চামচ করে নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
এই তেলের মিশ্রণ মুখে লাল হয় যে জায়গা বেশি সেখানে ব্যবহার করুন।
১৫ মিনিট পর ভিজে তুলো দিয়ে তুলে ফেলুন।

ড্রাইনেস কমানোর উপায়

  • সবসময়ে সানস্ক্রিন মেখে বাইরে যেতে হবে। সানস্ক্রিনে ময়েশ্চারাইজার থাকে যা স্কিন ড্রাই হতে দেয় না।
  • ২ চামচ ভেজিটেবল অয়েল আর ঠাণ্ডা দুধ মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ মুখে লাগান আর রেখে দিন ৩০ মিনিট মতো। তারপর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে তিনবার করতেই পারেন।
  • হাফ চামচ মধু, ১ চামচ গোলাপ জল আর গুঁড়ো দুধের মিশ্রণও খুব ভালো কাজ দেয়। ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেললেই হবে।
    সপ্তাহে দু’দিন করলেই হবে। অ্যালোভেরা জেল আর মধু একসঙ্গে মুখ খুব ভালো নরম রাখে।
    এই দুইয়ের মিশ্রণও ব্যবহার করতে পারেন।
    ২০ মিনিট মতো রেখে ধুয়ে নিলেই দেখবেন সঙ্গে সঙ্গে মুখ কত সফট লাগছে।
  • নারকেল তেল, জোজোবা তেল বা শিয়া বাটার এই সব উপাদানও খুব ভালো ড্রাই স্কিনের জন্য।
    আপনার সুবিধে মতো আপনি ব্যবহার করতে পারেন। আমন্ড খুব ভালো কাজ দেয় ড্রাই স্কিনের জন্য।
    রোজ তিনটে আমন্ড খাওয়া খুব ভালো।

আর সবশেষে বলার, রোজ ২/৩ লিটার পানি পান করা আর ভালো ঘুম খুব দরকার শরীর আর স্কিন দুইই ভালো রাখার জন্য। মাস্ক আমাদের এখন অনেক দিন পরতে হবে আর সঙ্গে স্কিন ভালো রাখতে এই টিপস মানতেই হবে।