আপনাদের মধ্যে অনেকেই মাঝে মাঝে স্টাইল করার জন্য চুল স্ট্রেইট করেন। মাঝে মাঝে স্ট্রেইট করলে সেই চুল যত্নের জন্য তেমন আলাদা কিছু করতে হয় না।
কিন্তু আপনি যদি পার্মানেন্টলি চুল স্ট্রেইট কিংবা রিবন্ডিং করান তাহলে? তাহলে কিন্তু সেই চুলের বিশেষ যত্ন দরকার। কীভাবে নেবেন সেই যত্ন সেটিই জেনে নিন!
১. হিট বাদ দিতে হবে
আপনি কী আপনার চুলে একগাদা ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান দিতে চান? নিশ্চয়ই না।
কিন্তু আপনি আপনার চুলে কোনও কারণে হিট দিলে সেই ক্ষতিকর কাজটাই তো করছেন আপনার অজান্তে।
আপনি ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে নিন বা স্ট্রেইটনার দিয়ে চুল স্ট্রেইট করুন, আপনার চুলে কিন্তু হিট যাচ্ছে।
আর এতেই আপনার চুল আর্দ্রতা হারাচ্ছে। ফলে চুল কুঁচকে যাচ্ছে শুকিয়ে। তাই স্ট্রেইট করার গুণ কিন্তু আপনি অচিরাই হারাবেন।
এই একই কারণে কিন্তু খুব গরম জলে মাথা ধুতে নেই। হাল্কা উষ্ণ জল চুলে দিয়ে মাথা ধুলেই ভাল।
২. শ্যাম্পু নয়, কন্ডিশন করুন
অনেক স্টাইলিস্ট বা স্টাইল বিশেষজ্ঞ বলেন, চুল পার্মানেন্টলি স্ট্রেইট করে ফেললে খুব একটা সেই চুলে শ্যাম্পু কড়া ঠিক নয়।
তাঁরা বরং ‘নো শ্যাম্পু’ মতে বিশ্বাসী। খুব ভাল, মাইল্ড শ্যাম্পু না হলে সেই শ্যাম্পু ব্যবহার না করাই ভালো।
যদি একান্ত ব্যবহার করতে হয় তাহলে সপ্তাহে দু’ দিন শ্যাম্পু করুন। হ্যাঁ, ড্রাই শ্যাম্পু মাঝে মাঝে ব্যবহার করতে পারেন।
শ্যাম্পুর ক্ষেত্রে সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু অবশ্যই বাছবেন। মাঝে মাঝে হেয়ার স্পা নিতে পারলে খুবই ভালো।
একটি ভাল কন্ডিশনার অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। এই কন্ডিশনারই কিন্তু আপনার স্ট্রেইট চুলের স্ট্রেইট ভাব বজায় রাখবে আর সাইন দেবে।
৩. রোদ আর দূষণ থেকে সাবধান
যথেষ্ট কেমিক্যাল ব্যবহার করে করা স্ট্রেইট চুল কিন্তু রোদের জন্য সমস্যায় পড়তে পারে। এর সঙ্গে আবার আছে দূষণ।
কিন্তু তাই বলে তো রোদ আর দূষণ ছাড়া আমরা চলতে পারব না। তাই ফ্যান্সি টুপি, স্কার্ফ, ছাতা সব সময়ে সঙ্গে রাখতেই হবে।
এখন তো এমন হেয়ার সিরাম পাওয়া যায় যাতে সান প্রোটেকশন দেওয়া থাকে।
সেই রকম সিরাম আপনি রোজ বাইরে যাওয়ার সময়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন।
৪. মাঝে মাঝে হেয়ার কাট
আপনারা কী জানেন যে স্ট্রেইট করা চুল সবচেয়ে বেশি স্প্লিট এন্ডস বা চুলের ডগা ভাঙার মতো সমস্যার সম্মুখীন হয়? নিশ্চয়ই জানতেন না!
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনাকে পার্লারে একটু যেতে হবে। ছয় সপ্তাহ অন্তর অন্তর চুল ট্রিম করুন।
এতে স্ট্রেইট করা চুল অনেক দিন পর্যন্ত ভাল থাকবে।
৫. আগের প্রোডাক্ট আর নয়
পার্মানেন্টলি চুল স্ট্রেইট করার আগে আপনি চুলের জন্য যে প্রোডাক্ট ব্যবহার করতেন, এখনও সেই প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন ভাবছেন? তাহলেই কিন্তু অনেক বড় ভুল করবেন।
আপনার চাই এখন সেই রকম প্রোডাক্ট যা স্ট্রেইট করা চুলের জন্য উপযোগী।
বাজারে যখন কোনও প্রোডাক্ট কিনতে যাবেন, তখন দেখে নেবেন সেই প্রোডাক্ট কেমিক্যালি ট্রিটেড চুলের জন্য কিনা! সেটা দেখেই কিনবেন।
এই ধরণের প্রোডাক্ট আপনার চুলের ময়েশ্চার ধরে রাখবে। মনে রাখবেন, স্ট্রেইট করার আগে আর পরে, এই দুই ক্ষেত্রে কিন্তু আপনার চুলের টেক্সচার পরিবর্তিত হয়েছে।
৬. রোজের যত্নেও খানিক বদল
যদি আপনি আপনার সদ্য স্ট্রেইট করা চুল ভালো রাখতে চান, তাহলে রোজের সামান্য কিছু অভ্যেস এবার বদলাতে হবে।
আগে হয়তো আপনি কম্বিং না করে শুধু চুল ব্রাশ করে নিতেন। এতে চুল হাল্কা ম্যানেজেবলও হত, আর বাউন্সিও লাগতো।
এখন কিন্তু চুলে ব্রাশ করার আগে কম্বিং মাস্ট। মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে আগে চুল আঁচড়ে নিন।
এতে চুলে হাল্কা জট থাকলে তা চলে যাবে। তারপর হাল্কা হাতে ব্রাশ করুন। এতে চুলের ভলিউম আর সাইন, দুইই ভাল থাকবে।
এভাবে সামান্য কিছু জিনিস মাথায় রাখা কিন্তু খুব দরকার। তাহলেই কিন্তু আপনার সুন্দর স্ট্রেইট চুলের সেই কাঙ্ক্ষিত সাইন আপনি পাবেন। আর চুলের স্বাস্থ্যও বজায় থাকবে।