যোগাসন শরীরের জন্য ভালো তা আমাদের সকলের জানা আছে।
কিন্তু জানেন কি যাদের ডায়বেটিস (Diabetes) আছে তাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী যোগাসন করা।
যদি নিয়ম করে প্রতিদিন ডায়বেটিস আক্রান্ত ব্যাক্তি যোগাসন করতে পারেন, তাহলে সুগার নিয়ন্ত্রনে থাকবে।
কেন এত উপকারী যোগাসন? ডায়বেটিকদের কোন কোন যোগাসন করা উচিত তা নিয়ে আজকের লেখা।
আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে ও উপকারে আসবে।
ডায়বেটিস আসলে কী?
ডায়বেটিস বা সুগার সাধারণত হয়ে থাকে আমাদের শরীরে ইন্সুলিনের অভাব ঘটলে।
ইন্সুলিনের কাজ হল আমাদের রক্তে থাকা শর্করাকে শরীরের বিভিন্ন কোষে পরিমান অনুযায়ী যোগান দেওয়া।
ফলে শরীরের নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সতেজ ও কার্যকরী থাকে।
খাবার হজম হয়ে যাওয়ার পরে খাবারে থাকা শর্করা রক্তে মিশে যায়।
ইন্সুলিন যদি সঠিক পরিমানে শরীরে তৈরি হতে না পারে তাহলে রক্তে থাকা শর্করা বেড়ে যায়।
ফলে কোষ দুর্বল হয়ে যায়। কর্মশক্তি কমে আসে। রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার ফলে তা প্রস্রাবের সাথে বেরিয়ে আসে।
বার বার প্রস্রাব হতে থাকে যাকে আমরা বহুমূত্র রোগ বা ডায়বেটিস বলে থাকি।
কেন যোগাসন করা দরকার?
১.ডায়বেটিস হলে অবশ্যই তার চিকিৎসা করা প্রয়োজন। ওষুধের সাথে সাথে অবশ্যই যোগাসন করা জরুরী।
ওষুধ একটা স্তর পর্যন্ত কাজ করে।
কিন্তু সাথে সাথে যোগাসন করলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রনে থাকে।
ইন্সুলিন তৈরি হতে সুবিধা হয়।
২.ডায়বেটিকদের শরীর অন্যদের তুলনায় বেশি মাত্রায় দুর্বল থাকে। তাই আসন বা যোগাসন করলে শরীর সুস্থ্য থাকে।
নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কার্যকরী থাকে।ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি যোগাসন করলে ডায়বেটিক আক্রান্ত রোগীরা অনেকটা হলেও স্বাভাবিক জীবনের স্রোতে ফিরতে পারেন।
৩. গবেষণা করে দেখা গিয়েছে যে ডায়বেটিক রোগীরা শরীর সুস্থ্য না থাকার কারণে মানসিক অবসাদে ভোগেন বেশি।
যোগাসন মানে একপ্রকারের মেডিটেশান যা মানসিক অবসাদের থেকে মনকে মুক্ত রাখে।
তাই যোগাসন করার মধ্যে দিয়ে দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা অভ্যাস করা যেতে পারে।
৪. কোষে ইন্সুলিনের ঘাটতির জন্য মানব দেহের নানা সমস্যা তৈরি হয় বিশেষ করে শরীরের ক্লান্তি থেকে বডিপেন, হাড়ের ক্ষয়।
নিয়মিত যোগাসন করলে শরীরের বিভিন্ন ব্যাথা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
৫.ডায়বেটিস হলে অনিদ্রার সমস্যা দেখা দেয়। যোগাসন নিয়মত করলে অনিদ্রা দূর হয় সহজে।
তাছাড়া রক্ত সঞ্চালন সঠিক ভাবে হতে থাকে। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তা নিয়ন্ত্রনে থাকে।
কোন কোন যোগাসন করা উচিত?
১. পদ্মাসন
২. বজ্রাসন
৩. হলাসন
৪. পবনমুক্তাসন
৫. গোমুখাসন
৬. জানুশিরাসন
যোগাসন করার সময় যে বিষয়গুলি খেয়াল রাখা উচিত
ডায়বেটিকদের যোগাসন শুরুর আগে ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নেওয়া জরুরী।
নিয়ম করে আসন করা দরকার না হলে কোন কাজে আসবে না। সপ্তাহে ৫ দিন অন্তত করুন।
খাবার খাওয়ার পরে পরেই যোগাসন করবেন না। রক্তে শর্করা তখন অধিক থাকে।
অতিরিক্ত গরমে ডায়বেটিকদের যোগাসন না করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
গরমের সময় হালকা ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করা শরীরের জন্য ভালো।
যারা বাইরে থেকে ইন্সুলিন গ্রহন করেন তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে যোগাসন করা শুরু করবেন।