Search
Close this search box.

কোন খাবারটা কীভাবে খেলে ওজন কমে?

অনেকে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হার্টের সমস্যায় আছেন।

তারা যদি অতিরিক্ত ওজনের ৫ শতাংশ স্বাস্থ্যকর উপায়ে কমিয়ে ফেলতে পারেন তাহলে এসব রোগের সঙ্গে সঙ্গে কমবে কোভিড ঝুঁকির আশঙ্কাও৷

অতএব, এক-দেড় মাসে ৪-৫ কেজি ওজন কমাতে পারলে বজায় থাকবে সব দিক৷

পুষ্টিবিদদের মতে, এক-দেড় মাসে ৪-৫ কেজি কমানো এমন কোনও বড় টার্গেট নয়৷

নিয়ম মেনে ডায়েটিং ও একটু হাঁটাচলা বাড়ালে, ঘরের সব কাজ নিজে হাতে করলে খুব ভালভাবেই ওজন কমানো সম্ভব৷

তার উপর যদি ব্যায়াম করতে পারেন, তাহলে তো কথাই নেই৷

কম খেয়ে ডায়েটিং করা যাবে না

কারণ, কম খেলে খিদে পাবে সর্বক্ষণ৷

খিদে চেপে রাখলে এক দিকে যেমন মন খাই খাই করবে, তাতে অনেক সময় ভুলভাল খেয়েও নেবেন।

অন্যদিকে খিদে পেটে ঘুম আসবে না, মেজাজ খিটখিট করবে, ক্লান্ত লাগবে, অপুষ্টি হবে৷ সবে মিলে ওজন যদিও বা দু-এক কেজি কমেও, চেহারায় পড়বে ক্লান্তির ছাপ।

ফিটনেসে ঘাটতি হবে৷ অপুষ্টি ও অনিদ্রার ফলে কমতে পারে রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও।

অতএব ও পথে না হেঁটে খাবারে কিছু পরিবর্তন আনুন৷

ভাজা, মিষ্টি ও অন্যান্য হাই ক্যালোরি খাবার ও মিষ্টি পানীয়ের পরিবর্তে খান ফাইবারসমৃদ্ধ পুষ্টিকর ঘরোয়া খাবার৷

খাবারে পর্যাপ্ত ফাইবার থাকলে কম খাবারেই পেট ভরে যাবে ও বেশিক্ষণ ভরে থাকবে৷

তার সঙ্গে মাপ মতো কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও উপকারি ফ্যাট খেলে তৃপ্তি যেমন হবে, পুষ্টিও হবে তেমন৷ সবে মিলে ওজন কমবে পেটপুরে খেলেও।

কোন খাবার কীভাবে, কোনটার পরিবর্তে কোনটা খেলে দ্রুত ওজন কমবে তা এবার জেনে নেওয়া যাক

ডিম খেতে ভাল লাগলে শুধু কুসুমটা বাদ দিয়ে দিন৷ আগে হয়তো একটা গোটা ডিম খেতেন, এখন ৩-৪টা ডিমের সাদা অংশও খেতে পারেন সেদ্ধ করে৷

রেডমিট পছন্দ হলে ভাল করে চর্বি কাটছাট করে নিয়ে কম তেলে রান্না করুন৷ সেদ্ধ করা পানিটা ফেলে দিলে চর্বি আরও কিছুটা কমবে৷

এভাবে রান্না করা মাংস সপ্তাহে এক দিন দু’টুকরা খেলে ক্ষতি নেই৷

ফল ছাড়া কোনও মিষ্টি খাবার খাবেন না৷ ফলও খুব বেশি খাওয়ার দরকার নেই৷

দিনে একটা বা দুটো গোটা ফল খেতে পারেন৷ তার মধ্যেও যেটা কম মিষ্টি সেটা বেছে নিন৷

কোনও মিষ্টি পানীয় খাবেন না৷ ফলের রসও নয়৷

এসব খেলে পেট তো ভরেই না বরং একসঙ্গে অনেকটা ক্যালোরি ও চিনি শরীরে এসে বাড়িয়ে দেয় ভুঁড়ির আশঙ্কা৷

মাঝে মধ্যে স্মুদি খেতে পারেন৷ ফল দিয়ে রায়তা বানিয়েও খেতে পারেন৷

ভাত পছন্দ হলে কষ্ট করে রুটি খাওয়ার দরকার নেই৷

বরং একমুঠো করে ভাত কমিয়ে সে জায়গায় কম ক্যালোরির সব্জি সেদ্ধ খান৷ যেমন- পটল, ভেন্ডি, করল্লা, বেগুন ইত্যাদি৷

কম তেলে রান্না করা শাক বা পাঁচমিশালি সবজিও খেতে পারেন৷ 

ভাত-রুটির পরিমাণ কমাতে চাইলে শাক-সবজি খাওয়া দ্বিগুণ করে দিন

এক ধাক্কায় নয়, ধাপে ধাপে করবেন৷

না হলে পেটের সমস্যা হতে পারে৷ হতে পারে অতৃপ্তিও৷

সাদা ভাতের বদলে ব্রাউন রাইস খেতে পারলে বেশি ফাইবার পাবেন, তবে তার স্বাদ ভাল না লাগলে সাদা ভাতই খান৷

সঙ্গে নানা রকম সবজি।

বেশির ভাগ সবজির খোসা ছাড়াবেন না৷ এতে বেশি ফাইবার থাকে৷

আর এগুলো খেতে পারলে কম খাবারেই বেশিক্ষণ পেট ভরা থাকবে৷ অন্যান্য পুষ্টিও পাবেন বেশি৷

মূল খাবার খাওয়ার আগে মাখন না দেওয়া একবাটি ক্লিয়ার স্যুপ, সবজি বা চিকেন ব্রথ, ডাল সেদ্ধ বা এক প্লেট সালাদ খেলে কম খাবারেই পেট ভরবে৷

মাছ, মাংস, ডিম আগের চেয়ে একটু কম খেয়ে সে জায়গায় খান ফাইবারসমৃদ্ধ উদ্ভিজ্ প্রোটিন৷ যেমন- বিন, সয়াবিন, রাজমা, ছোলা, মটর, ডাল৷ উপকার যেমন হবে, তেমনি পেটও ভরা থাকবে বেশিক্ষণ৷

ময়দাজাত খাবার একেবারে বাদ দিন

মাঝে মধ্যে এক আধবার পরোটা খেতে ইচ্ছে হলে ময়দার মধ্যে সবজির পুর মেশান নয়তো আটা দিয়ে বানান৷ সবচেয়ে ভাল হয় বিভিন্ন ধরনের সবজি মেশানো রুটি খেলে৷

১০/ তেল-ঘি-মাখনের উপকার থাকলেও এ সময় যত কম খাওয়া যায় তত ভাল৷ তবে একেবারে বাদ দিয়ে দেবেন না৷

ভিটামিন ডি ও ই-এর শোষণ বাড়াতে একটু তেল-ঘি এর প্রয়োজন আছে৷

এর পাশাপাশি সব রকম বাদাম, বীজ, অ্যাভোক্যাডো, অলিভ অয়েল, তৈলাক্ত মাছ অল্প করে খান৷

এতে ক্যালোরি কিছুটা বাড়লেও উপকার পাবেন প্রচুর৷ পেট বেশিক্ষণ ভরা থাকবে৷ তৃপ্তি হবে বলে খাই খাই ভাব থাকবে না৷

বাজারের লো-ফ্যাট খাবার একেবারে খাবেন না৷ তাতে ফ্যাট কম থাকলেও চিনি থাকে প্রচুর৷

তাতে অপকারের পাল্লাই ভারি হয়৷ ওজন কমারও সুরাহা হয় না৷ ফাস্ট ফুড ও প্রসেস করা খাবার খাবেন না৷ কারণ তাতে তেল-ঘি-লবণ-মিষ্টি সবই বেশি থাকে৷

১২/ টুকটাক খাওয়ার অভ্যাস বদলাতে হবে৷

দিনে ৫-৬ বার খাবেন৷ সকালে মোটামুটি পেটভরে ব্রেকফাস্ট৷ মাঝ সকালে ফল বা ঘোল কি সালাদ৷

দুপুরে ডাল, সালাদ, সবজির সঙ্গে অল্প ভাত বা রুটি ও মাছ/চিকেন/ডিম/দই৷ ডেজার্ট এখন না খাওয়াই ভাল৷ খুব ইচ্ছে হলে অল্প খেজুর খেতে পারেন৷

বিকেলে মুড়ি-বাদাম বা হালকা অন্য কিছু৷

রাতে আবার দুপুরের মতো খেয়ে আধ ঘণ্টা একটু হাঁটাহাটি করে ঘণ্টা দুয়েক পরে ঘুমাতে যান৷

খেয়াল রাখবেন

দিনের প্রতিটি খাবারে যেন প্রোটিন, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ ঠিক থাকে।

দরকার হলে পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলে নেবেন৷