তুলসীর গুনাগুণ আমরা একটু আধটু সবাই জানি।
তুলসী হলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। যেটি ক্যান্সারের অন্যতম ওষুধ।
এছাড়াও হার্টের সমস্যা থেকে শুরু করে সর্দিকাশি, এমনকি ত্বকের যত্নেও তুলসীর ভূমিকা অতুলনীয়।
আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক তুলসী ঠিক কী কী উপকার করে আমাদের।
ক্যান্সার
তুলসীতে আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার প্রতিরোধের একটি আনতম উপাদান।
তুলসী শুধু শরীরকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার হাত থেকেই বাঁচায় না, ক্যান্সার হলে সারিয়ে তুলতেও দারুন ভাবে সাহায্য করে।
বিভিন্ন স্টাডি থেকে দেখা গেছে যে, তুলসী যারা নিয়মিত খান তাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার সুযোগ অনেক কম।
অন্যদিকে তুলসীর মধ্যে যে ফাইটোক্যামিকাল রয়েছে তা লাং, লিভার, এবং স্কিন ক্যান্সার রোধে সাহায্য করে।
এটি তুলসীতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। এবং কান্সারকে ছড়িয়ে পড়তে দেয় না।
ক্যান্সারের সময় যে রেডিয়েশন দেওয়া হয় তার ফলে নানা সমস্যা হয়। কারোর চুল উঠে যায় একদম।
তুলসী এই রেডিয়েশনের ফলে হওয়া এই ধরনের সমস্যাগুলিকে প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিসের হাত থেকেও বাঁচাতে সাহায্য করে তুলসী।
বিভিন্ন ক্লিনিকাল এক্সপেরিমেন্ট থেকে দেখা গেছে তুলসীর আছে অ্যান্টিডায়াবেটিক গুনাগুণ।
যেটা ডায়াবেটিসকে রোধে অনেকটাই সাহায্য করে।
রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজকে নিয়ন্ত্রণ করে।
এটি কিডনি ও লিভারকে মেটাবলিক ড্যামেজের হাত থেকে বাঁচায়।
যেটি রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজের কারণে হয়।
জ্বর
তুলসী অ্যান্টিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে।
এটি আমাদের শরীরকে ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচায়।
যেগুলির কারনেই জ্বর হয়। জ্বরের সময় জলে তুলসী পাতা, গোলমরিচ সেদ্ধ করে সেই জলটা খেলে উপকার হয়।
এছাড়াও তুলসী সেদ্ধ করা জল ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া জ্বরের জন্যও খুব উপকার।
সর্দিকাশি
সাধারন সর্দিকাশিতেও তুলসী কাজে দেয়।
কাশি হলে একটু তুলসী পাতা ও আদার রস বানিয়ে তার মধ্যে একটু মধু মিশিয়ে সেটি খেলে কাশি কমে যায়।
এটি গলা বাথা, জমা সর্দি তুলতেও সাহায্য করে।
কিডনি স্টোন
কিডনিকে ভালো রাখতেও তুলশি বেশ উপকারি।
কিডনি স্টোনের মত সমস্যা রোধে সাহায্য করে।
এই সমস্যার ক্ষেত্রে তুলসীর রস করে একটু মধু মিশিয়ে খেলে, এটি কিডনি স্টোনকে কমাতে সাহায্য করে।
ইউরিনের মাধ্যমে দেহ থেকে বেরিয়ে যায়।
এছাড়াও তুলসী পাতা দেহে ইউরিক অ্যাসিডকে কমাতে সাহায্য করে। যার কারণে কিডনি স্টোন হয়।
দাঁতের সমস্যা
তুলসী মুখের ভেতরে ব্যাকটেরিয়াকে নির্মূল করে।
যার কারণে নানা দাঁতের সমস্যা হয়।
দাঁতের এই সকল সমস্যা রোধ করে।
এছাড়াও দাঁত হলুদ হয়ে যাবার হাত থেকেও বাঁচায়। মুখ অত্যন্ত ফ্রেস রাখে।
তার ফলে মুখে দুর্গন্ধের সমসাও হয় না। এবং দাঁতের সমস্যার সাথে সাথে মাড়িকে ও ভালো রাখে।
মুখের ভেতরের ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করে। যেটা তামাক সেবনের ফলে হয়।
এই সকল সমস্যা থেকে বাঁচতে রোজ তুলসী দিয়ে চা খান।
চোখের সমস্যা
চোখে অনেক সময় নানারকম ফাংগাল ইনফেকশন হয়।
তার ফলে চোখে অ্যালার্জি, লাল হয়ে যাওয়া, ফুলে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হয়।
এগুলির হাত থেকে বাঁচায় তুলসী। এছাড়াও কম দৃষ্টিশক্তির সমস্যাকেও নিয়ন্ত্রণ করে।
এতে আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। যা চোখকে ভালো রাখতে এবং চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
ত্বক
তুলসী ত্বকের বিভিন্ন সমস্যাতেও বেশ ভালো কাজ করে।
ত্বকে ব্রণ এর সমস্যা রোধ করে। এর জন্য তুলসী, নিম, চন্দন মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করলে উপকার হয়।
এছাড়াও মুখের অন্যান্য দাগ হালকা করতেও দারুন সাহায্য করে। এর জন্য ব্যবহার করুন বেসন ও তুলসীর প্যাক।
এছাড়াও তুলসির পেস্ট স্কিনকে উজ্জ্বল করতেও উপকারি।
কি ভাবছেন তুলসী যে এত উপকারি তা আগে জানতেন না?
এখন জেনে গেলেন তাহলে এবার থেকে বাড়ির ছোট্ট তুলসি গাছটিকে যত্ন করতে ভুলবেন না কিন্তু।