ব্লাড প্রেশারকে কিন্তু ‘সাইলেন্ট কিলার’ও বলা হয়।
কারণ ঠিক সময়ে এর সঠিক চিকিৎসা না করা হলে বা ডাক্তারের পরামর্শ না মেনে চললে, নিয়মিত ওষুধ না খেলে কিডনি ফেলিওর, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ইত্যাদিও হতে পারে, যাতে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
তাই ব্লাড প্রেশার ধরা পরলে শুরু থেকেই তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
ওষুধের মাধ্যমে তো বটেই, কিছু নির্দিষ্ট সবজিও ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে বেশ উপকার দেয়।
তাহলে আসুন, জেনে নেওয়া যাক যে কি কি সবজি ব্লাড প্রেশারের পক্ষে উপকারী?
বীটে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রিক অক্সাইড
আপনার যদি ব্লাড প্রেশারের সমস্যা থাকে তাহলে আপনি রোজ এক গ্লাস করে বীটের রস খেতে পারেন।
বীটে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রিক অক্সাইড থাকে।
নাইট্রিক অক্সাইড যুক্ত খাবার শরীরের শিরা ও ধমনীগুলোতে রক্ত চলাচলে সাহায্য করে ও রক্তচাপ কমায়।
বিভিন্ন স্টাডি থেকে জানা গেছে বীটে থাকা নাইট্রিক অক্সাইড ব্লাড প্রেশারের মাত্রা মাত্র ২৪ ঘণ্টায় অনেকটা কমিয়ে আনতে পারে।
সয়াবিন সেদ্ধ করে খেলে উপকার পাবেন
সয়াবিনের মধ্যে প্রচুর পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে যা ব্লাড প্রেশার কম করতে সাহায্য করে।
রোজ সকালে এক কাপ করে সয়াবিন সেদ্ধ করে খেলে উপকার পাবেন।
বেকড পট্যাটো
বেকড পট্যাটোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে।
পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম হল হার্টকে সুস্থ রাখার দুটি প্রধান উপকরণ।
এটি শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের সামঞ্জস্য বজায় রাখে।
বেকড পট্যাটোর মধ্যে থাকা পটাশিয়াম শরীরের অতিরিক্ত সোডিয়ামের মাত্রা কমায় ও ম্যাগনেশিয়াম রক্ত চলাচলকে স্বাভাবিক রাখে ও ব্লাড প্রেশারের সম্ভাবনা কমায়।
শাকপাতা ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণ করে
সবুজ পাতা যুক্ত শাক, যেমন পালংশাক, লেটুস ইত্যাদির মধ্যে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে ও ফাইবারের পরিমাণ বেশী থাকে।
এছাড়া এতে পটাশিয়াম, ফোলেট, ম্যাগনেশিয়াম প্রভৃতি খাদ্য পরিপোষক থাকায় তা ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণ করে।
তাই আপনার ডায়েট চার্টে রোজ বেশী করে সবুজ পাতাযুক্ত শাক রাখার ব্যবস্থা করুন।
ব্রকোলি ব্লাড প্রেশারকে কমায় ও স্ট্রোকের সম্ভাবনাকে কমায়
ব্রকোলি বিদেশী সবজি। কিন্তু ইদানীং আমরা ব্রকোলির গুণাগুণ সম্পর্কে সচেতন হয়েছি।
বাঙালীর হেঁশেলেও আজকাল মাঝেমধ্যে ব্রকোলি উঁকি মারতে শুরু করেছে।
ব্রকোলির মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম ও পটাশিয়াম থাকে যা ব্লাড প্রেশারকে কমায় ও স্ট্রোকের সম্ভাবনাকে কমায়।
এছাড়া ব্রকোলি-স্প্রাউট ধমনীতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
রসুন হার্টের ওপর থেকে চাপও কমাতে সহায়তা করে
সকালে উঠে আপনি এক কোয়া কাঁচা রসুন যদি চিবিয়ে খেয়ে ফেলার অভ্যেস তৈরি করতে পারেন, তাহলে তা আপনার ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
রসুন চিবিয়ে খেলে হাইড্রোজেন সালফাইড তৈরি হয় যা রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে, গ্যাসের সম্ভাবনা কমায়, ফলে হার্টের ওপর থেকে চাপও কমাতে সহায়তা করে।
এছাড়া লাল বেলপেপার, মিষ্টি আলু ইত্যাদিতেও প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি ধাতু উপস্থিত থাকে, যা আপনার ব্লাড প্রেশারের সম্ভাবনাকে কমাবে ও ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
তাই সুস্থ থাকতে ডায়েট চার্টে আজই এই সমস্ত সবজি যোগ করুন।
আর তাছাড়া যতই ওষুধ খান, শাক-সবজি খাবার যে কোনো বিকল্প নেই তা তো আপনারা জানেনই।
তাই সবজি খান, ব্লাড প্রেশারকে ঘরোয়া পদ্ধতিতে দূরে সরান।