আজকালকার ব্যাস্ত জীবনে আমরা প্রায়সই চুলের যত্ন নিতে ভুলে যাই বা ভুলভাবে যত্ন নিই।
চুলের যত্ন নেওয়ার সময় বেশ কয়েকটা প্রশ্নই আমাদের মাথায় ঘোরে।
তার মধ্যে একটি প্রশ্ন অবশ্যই থাকে যে শ্যাম্পু করার পর সবসময় কণ্ডিশানার লাগানো উচিত কিনা।
আজ সেই প্রশ্নের জবাব নিয়ে আমি হাজির। হ্যাঁ উচিত।
কেন কন্ডিশনার লাগাবেন?
শ্যাম্পু আমাদের চুলকে পরিষ্কার করে তোলে।
এইটি আমাদের সম্পূর্ণ মাথার তালুকে ধুলো ময়লাহীন করে তোলে।
সারাদিন কাজ করতে করতে আমাদের চুলে বিভিন্ন ধরনের ধুলো বালি আটকে যায়।
সেই সব কিছু শ্যাম্পু ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করে।
কিন্তু শ্যাম্পু কি শুধুই ধুলো ময়লাই ধুয়ে ফেলে? আসলে না।
শ্যাম্পু আমাদের চুলের উপকারী প্রাকৃতিক তেলও ধুয়ে ফেলে।
প্রাকৃতিক তেল আমাদের চুলের স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি।
তাই চুলের প্রাকৃতিক তেলের সামঞ্জস্য বজায় রাখার জন্য শ্যাম্পুর পরে কন্ডিশনার লাগানো উচিত।
কারণ এরফলে সেই তেল আবার ফিরে আসে চুলে এবং আমাদের চুলের পক্ষে খুবই ভালো তা।
চুলেতে বিভিন্ন স্টাইল করার জন্য আমরা হট আয়রন, বিভিন্ন ক্ষতিকারক কেমিক্যাল ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকি।
এইসব জিনিস আমাদের চুলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
এইসবের সাথে মোকাবিলা করতে আমাদের চুলের দরকার হয় ময়শ্চারাইজার যা যোগায় আমাদের কন্ডিশনার।
যাদের চুলের তেল বেশি তাদের চুলের ডগাতে লাইট ওয়েইট লিভ ইন সেরম লাগানো উচিত।
কত ধরণের কন্ডিশনার হয়?
শ্যাম্পু করার পর সবসময় কন্ডিশনার লাগানো দরকার কারণ শ্যাম্পু করার ফলে চুলের দরকারী পুষ্টি ও ধুয়ে যায় কণ্ডিশানার সেই পুষ্টি যোগায় চুলে।
এইবার আমরা জেনে নিই যে কন্ডিশনার আসলে কি?
মূলত ৩ ধরণের কন্ডিশনার আছে – ডিপ কন্ডিশনার, লীভ ইন কন্ডিশনার, আর ট্রাডিশনাল কন্ডিশনার – প্রত্যেকটি কন্ডিশানারই সাহায্য করে আমাদের চুল কে নরম এবং স্বাস্থকর করে তোলে।
ডিপ কন্ডিশনার আপনি আপনার চুলের ডগাগুলিতেও দিতে পারেন।
লিভ ইন কন্ডিশানার আমাদের চুল কে জটহীন রাখতে সাহায্য করে।
এইটি সফ্ট কার্লস বজায় রাখতে উপকারী।
লীভ ইন কন্ডিশনার লাগানোর পর চুল না ধুলেও হবে।
তাই এইদিক থেকে এই কন্ডিশনার খুবই উপকারী।
ট্রাডিশনাল কন্ডিশানারও খুবই উপকারী আমাদের চুলের জন্য।
অনেকে ভাবেন যে কন্ডিশনার লাগালে আমাদের চুল তৈলাক্ত হয়ে উঠবে এবং চুলে ভারী ভাব অনুভব করবেন কিন্তু এইটা ঠিক না।
ঠিক পরিমানে কন্ডিশনার দিলে চুলে কিন্তু ভারী ভাব একেবারেই লাগবে না।
একেবারে বেশী পরিমানে কন্ডিশনার দিলে চুলে একটা ভারী ভাব আসে।
কন্ডিশনার আমাদের চুলকে উজ্বল করে তোলে।
শ্যাম্পু করার পর কণ্ডিশানার লাগানো যেমন দরকারি ঠিক সেরকম ভাবেই ঠিক পদ্ধতিতে কণ্ডিশানার লাগানো ও খুবই জরুরী।
চুলে কন্ডিশনার লাগানোর সঠিক পদ্ধতি
১. প্রথমে কণ্ডিশানারটি হাতে নিতে হবে এবং হাতে ভালো করে ঘষতে হবে।
২. তারপর চুলের ২/৩ অংশে সেইটি লাগাতে হবে।খেয়াল রাখতে হবে যাতে চুলের শিখরে কন্ডিশনার যেন না পৌঁছায়।
চুলের শিখরে কণ্ডিশানার পৌঁছালে তা চুলকে একটা ভারী ভাব প্রদান করবে আর তৈলাক্ত ত্বক হলে আরো ভারী ভাব অনুভব হতে পারে।
৩. কণ্ডিশানার লাগানোর পর ২-৩ মিনিট চুলে কন্ডিশনারটা রাখতে হবে।
২-৩ মিনিট ধরে রাখা জরুরি যাতে আমাদের চুলে ময়েশ্চারাইজার থাকে।
৪. এইবার চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে।বেশ কিছুক্ষণ ধরে জলে চুল ধুতে হবে যাতে সব কন্ডিশনার একেবারে ধুয়ে যায়।
এই পদক্ষেপটি ও জরুরি কারণ চুলে কন্ডিশনার রয়ে গেলে তা আমাদের চুলে ভারী ভাব এনে দেয়া যা একেবারেই গ্রহণ যোগ্য না।
তাহলে এখন আমরা বলতে পারি যে শ্যাম্পু করার পর সবসময় কন্ডিশনার লাগানো উচিত কিন্তু মনে রাখতে হবে যে কন্ডিশনার যেন বেশি পরিমানে না দেওয়া হয় নাহলে তা আমাদের চুল কে একটা ভারিত্ব ভাব এনে দেবে।
আর খেয়াল রাখতে হবে যে ডিপ কন্ডিশনার ছাড়া বাকি কণ্ডিশানার যেন আমাদের চুলের শিখরে না পৌঁছায়।
নাহলে তাও আমাদের চুল কে তৈলাক্ত করে তুলবে।