আচ্ছা, এই যে আপনি এক্ষুনি যে ফেস ওয়াশটি দিয়ে মুখ ধুয়ে এলেন, সেটা তো বেশ ব্র্যান্ডেড।
কিন্তু, তাতে যে ভর্তি কেমিক্যাল আছে তা কি জানেন?
জানেন কি, ওটা আপনার স্কিনের জন্য কতটা উপকারী? বা আদৌ উপকারী কিনা?
কী বলছেন! কেমিক্যাল নয়, হার্বাল প্রোডাক্ট!
তা এত যে হার্বাল হার্বাল করে কলার উঁচু করছেন, জানেন কী হার্বাল কোন উপাদানগুলো আপনার ত্বকের জন্য বেস্ট?
যদিও প্রাকৃতিক উপাদান বলে তেমন কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই, তাও ব্যবহারের আগে জানুন কোন উপাদানের কোন গুণ।
প্রোডাক্টের কন্টেনারের পিছন দিকে এবার আর অন্ধের মতো না চোখ বুলিয়ে সচেতন হয়ে বিউটি প্রোডাক্টস কিনুন, হ্যাঁ, হার্বাল প্রোডাক্টও!
ত্বকের যত্নে নিম পাতা
নিম পাতার যে অনেক গুণ তা তো আমরা জানিই।
সেই কবে থেকে নিম পাতা নানাভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে ত্বকের যত্ন নিতে।
নিম পাতা ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া বিরোধী। তাই নিম পাতা পক্স বা এই জাতীয় রোগে ব্যবহার করা হয়।
আজ আসুন আপনাদের নিমের এক অভাবনীয় ফেস প্যাকের কথা বলি যা একই সঙ্গে স্কিনের ড্রাইনেস কমাবে।
আবার কোমলও বানাবে আর মুখে ব্রণ বা ব্রণের দাগ হয়ে থাকলে তাও কমাবে।
উপকরণ
নিম পাওডার, ১ চামচ বেসন, ১ চামচ টক দই, পরিমাণ মতো পানি।
পদ্ধতি
প্রথমে নিম পাতা শুকিয়ে নিয়ে গুঁড়ো করে নিন।
এবার তার মধ্যে বাকি উপাদান মিশিয়ে একটা পেস্ট বানান।
সেটা এবার মুখে আর ঘাড়ে ভালো করে লাগান।
১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন ঠান্ডা জল দিয়ে।
দেখবেন কয়েকদিন পর থেকেই আপনার ত্বক কথা বলছে।
ট্যান দূর করতে মধু
আমাদের এখানে বারো মাসের মধ্যে দশ মাসই গরম। তা বলে কি বাইরে যাব না!
আর বাইরে বেরোলেই সূর্যের তাপে আমাদের স্কিনের বারোটা বাজবে।
ট্যান হয়ে আপনার অমন তপ্ত কাঞ্চন বর্ণ কালো হয়ে যাবে।
না না, এবার থেকে আর হবে না। মধুর বিশেষ টিপস দিচ্ছি যে, দেখুন একবার।
মনে রাখবেন মধুতে আছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান যা ত্বকের জন্য বেশ ভালো।
উপকরণ
১ চামচ মধু, ১ চামচ পাতিলেবুর রস।
পদ্ধতি
মধু ও পাতিলেবুর রস মিশিয়ে নিন।
এবার যে যে অংশে ট্যান পড়েছে, সেখানে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট মতো।
এবার ধোবার আগে দু’মিনিট মতো ম্যাসাজ করে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এটা একটা অসাধারণ অ্যান্টি-ট্যান প্যাক যা আপনি সময় থাকলে রোজই ব্যবহার করতে পারেন।
না হলে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন বটেই। দেখবেন আপনার ত্বকও হবে মধুর মতো।
কালো দাগ দূর করতে টক দই
নানা কারণে আমাদের মুখে কালো দাগ হয়ে থাকে।
তার জন্য আমাদের অনেক সময় দেখতেও খুব খারাপ লাগে।
টক দইতে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড এই কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
আজ তাই আপনাদের টক দইয়ের প্যাক বলি যা যে কোনো ত্বকের মানুষই ব্যবহার করতে পারেন।
উপকরণ
১ টেবিল চামচ টক দই, ১ চা চামচ কমলালেবুর রস।
পদ্ধতি
দুটো উপকরণই ভালো ভাবে মেশান।
এবার ত্বকে লাগিয়ে হাল্কা ম্যাসাজ করুন আর রেখে দিন ১৫-২০ মিনিট।
তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
রোজ ব্যবহার করতে পারেন ভালো ফল পেতে।
কমলালেবু তো স্কিনের জন্য ভালোই। তাই এই প্যাকটি ব্যবহার করুন।
নারকেল তেল হোক বডি অয়েল
কি! ভাবছেন তো এ আবার কি! নারকেল তেল তো চুলের জন্য এতদিন ব্যবহার করলেন।
এবার ত্বকের যত্নেও ব্যবহার করে দেখুন।
বাজার থেকে বডি অয়েল না এনে বাড়িতেই বানিয়ে নিন নারকেল তেলের বডি অয়েল।
উপকরণ
পরিমাণ মতো নারকেল তেল, ল্যাভেন্ডার অয়েল।
পদ্ধতি
স্নানের পনেরো মিনিট আগে নারকেল তেল আর ল্যাভেন্ডার তেলের মিশ্রণ ভাল করে গায়ে মেখে নিন।
হাল্কা হাতে ম্যাসাজ করুন। এবার স্নান করে নিন।
দেখবেন ইন্সট্যান্ট গ্লো পাচ্ছেন আর ত্বকের শুষ্কতাও আর থাকছে না।
চোখের নীচের কালি দূর করতে আমন্ড অয়েল
চোখের নীচে কালি হলে কী বিশ্রীই না লাগে!
জানেন কী, আমন্ড তেলের মালিশ এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে?
উপকরণ
পরিমাণ মতো আমন্ড অয়েল।
পদ্ধতি
রোজ রাতে শুতে যাবার আগে আমন্ড অয়েল চোখের নীচে লাগিয়ে হাল্কা হাতে ম্যাসাজ করুন।
দেখবেন এতে কালো দাগ দূর হয়ে গেছে।
রাতের পরিচর্যায় অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা নিয়ে নতুন করে আর কিই বা বলবো!
মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত সম্পূর্ণ পরিচর্যায় অ্যালোভেরা নানা ভাবে ব্যবহার করা হয়।
রাতে নাইট ক্রিম তো আমরা ব্যবহার করেই থাকি।
ক্রিমের বদলে কয়েক দিন অ্যালোভেরাই ব্যবহার করে দেখুন না।
উপকরণ
অ্যালোভেরার রস।
পদ্ধতি
অ্যালোভেরার গাছ একটা বাড়িতে লাগিয়ে নিন, তাজা পাতা পাবেন।
এবার ওই পাতা থেকে রস বের করে তুলোতে নিয়ে মুখে মেখে নিন।
শুকিয়ে যেতে দিন আর সারারাত রাখুন। সকালে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিন।
মুখ কতটা ফ্রেশ লাগবে ভাবতেই পারছেন না।
তাহলে, এবার থেকে বিউটি প্রোডাক্ট কিনতে গেলেও এই উপাদানগুলো আছে কিনা দেখে নিন আর আপনার ত্বকের দরকার অনুযায়ী কিনে ব্যবহার করুন।
ত্বকের কথা বলা কাকে বলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।