বাইক নিয়ে সারাদিন স্টাইল করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
আবার জিমে গিয়ে ওয়ার্ক আউট করে আসছেন ঘাম ঝরিয়ে স্লিম ফিগার পাবেন বলে।
কিন্তু, এই সবের মাঝে চুলের দিকে নজর দিয়েছেন কি?
দেখেছেন কি হেলমেটটা খুলে, ওতে কি পরিমাণ চুল লেগে আছে? দেখেননি হয়তো।
ঘাম জমে আমাদের চুলের কিন্তু বারোটা বেজে যায় ভালোভাবেই।
তাই এখন থেকেই যত্ন নিন চুলের।
কী হতে পারে ঘাম জমে
ঘাম থেকে যে টক্সিন নির্গত হয় তা আমাদের চুলের জন্য খারাপ।
ঘামের মধ্যে যে সল্ট বা লবণ উপাদান থাকে, তা চুলের আর্দ্রতা শুষে নেয়, তাই চুল সহজেই শুষ্ক হয়ে যায়।
ফলে চুল ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ঘাম চুলের কালার মলিকিউল বা রঞ্জক পদার্থ নষ্ট করে, তাই চুল সহজেই পেকে যেতে থাকে।
আর সবথেকে বড় কথা, ঘাম জমে স্ক্যাল্পের ক্ষতি হয়, যা চুলের বৃদ্ধিতে অসুবিধার সৃষ্টি করে।
চুলের যত্ন নেওয়ার পদ্ধতিগুলো শুনুন
ওপরে ঘাম জমে কি কি ক্ষতি হতে পারে তা বললাম।
তা বলে কি ঘরে বসে থাকবেন? তা তো হবার নয়।
তাই এবার বলি কীভাবে ক্ষতি থেকে চুলকে আটকাবেন।
১. শ্যাম্পু করে নিন
এমনিতেই বাইরে থেকে আসলে আমাদের ফ্রেশ হতে হয়।
তা শুধু স্কিন নয়, চুলকেও তো ফ্রেস করতে হবে।
শীতকালের কথা বাদ দিলাম, কিন্তু অন্য সময়ে বাইরে থেকে এসে পারলে শ্যাম্পু করে নেবেন।
এতে ঘাম সহ ধুলো-বালি, ময়লা সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করুন, তাতে চুলের ফ্রিজিনেস কম হবে।
২. ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
শীতকালের জন্য এই অপশনটা বেস্ট। তাছাড়া সবসময় শ্যাম্পু করাও যায় না।
তাই ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এটা ঘাম ভালোভাবে শুষে নেবে।
বাইরে যাবার আগে ড্রাই শ্যাম্পু ভালো করে মাথায় মেখে নিন আর আঁচড়ে নিন।
এটা অতিরিক্ত ঘাম হওয়াও আটকাবে। আর এসেও ব্যবহার করতে পারেন ড্রাই শ্যাম্পু।
শুধু তোয়ালে দিয়ে হাল্কা করে অতিরিক্ত ঘাম মুছে নিয়ে মাথায় অ্যাপ্লাই করুন এই শ্যাম্পু।
৩. লিভ-ইন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন
এইরকম নাম শোনেন নি তো? কিন্তু এটা খুবই কার্যকরী ঘাম থেকে চুলকে রক্ষা করতে।
এই কন্ডিশনার ধুতে হয় না। এটি আপনি বাইরে যাবার আগে লাগিয়ে বেরোন।
এটা আপনার চুলকে ইউ.ভি. রে থেকেও রক্ষা করে থাকে।
দোকান থেকে যেকোনো ভালো ব্র্যান্ডের লিভ-ইন কন্ডিশনার কিনে আনুন আর ব্যবহার করুন।
৪. ভালো করে চুল ড্রাই করুন
বাইরে থেকে এসে চুল ড্রাই করুন ড্রায়ার দিয়ে।
প্রথমে তোয়ালে দিয়ে চুলের অতিরিক্ত ঘাম শুকিয়ে নিন।
তারপর হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল আরও ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।
মনে রাখবেন, যেন ড্রায়ার ‘কুলিং মোড’-এ থাকে।
এতে স্ক্যাল্প শুকনো হয় আর ফ্রেশও হয়।
‘হট মোড’-এ রাখলে কিন্তু চুলের খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৫. ভালোভাবে চুল আঁচড়ান
বেশ সময় নিয়ে চুল আঁচড়ান অন্তত একবার।
এতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় আর স্ক্যাল্পে থাকা ন্যাচরাল অয়েলের ড্রিস্টিবিউশন ভালো হয় চুল ও সারা মাথায়।
ফলে চুল ময়েশ্চারাইজড হয়ে থাকে আর ঘামের ফলে যে ড্যামেজ হয়, তাও ঠিক হয়ে যায়।
তাই ভালোভাবে চুল আঁচড়ান, বিশেষত কাঠের চিরুনি দিয়ে।
৬. সোয়েট ব্যান্ড ব্যবহার করুন
আজকাল মার্কেটে সোয়েট ব্যান্ড পাওয়া যায়।
বিশেষত জিমে গেলে আপনি এটা ব্যবহার করতে পারেন। মাথায় এটা জাস্ট বেঁধে ওয়ার্ক আউট করুন।
এটা চুল থেকে অতিরিক্ত ঘাম শুষে নেবে আর চুলের ময়েশ্চার ধরে রাখবে।
৭. নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে চুল বাঁধুন
ফ্যাশন করে চুল খুলে বেরিয়ে গেলে কিন্তু হবে না।
চুল বড় হলে তা বেশী ময়লা টানে আর ঘাম বেশী হয়। তাই ব্রেইডেড হেয়ার স্টাইল ব্যবহার করুন।
প্রথমে চুলের মাঝে একটা নট করুন। এবার চুল দুই ভাগে ভাগ করে প্রথম ভাগ দিয়ে খোঁপা করুন।
এবার বাকি ভাগটা বিনুনি স্টাইলে করে নিন আর সেটাও খোঁপাটার চারপাশে জড়িয়ে নিন।
পুরো চুলটা এক জায়গায় রইল। তাই ময়লাও কম হবে।
তাহলে, এবার রোদেও বিন্দাস ঘুরুন।
শুধু ওপরের এই পদ্ধতিগুলো একটু মেনে চলুন আর চুলের একটু যত্ন নিন সময় দিয়ে।
ঘামেও চুল ভালো থাকবেই, কথা দিলাম।