সুন্দর চুল আমাদের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ।
স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, ঝলমলে চুল পেতে প্রায় সবাই-ই নানারকম চেষ্টাসাধনা করে থাকেন।
কিন্তু প্রতিদিন নিজের অজান্তেই করা কিছু ছোট ছোট ভুল আমাদের চুলকে করে দিতে পারে রূক্ষ, নিষ্প্রাণ!
ছোটখাট এ ভুলগুলো বর্জন করে চুলের যত্নে করণীয় কিছু বিষয় নিয়েই আজকে আলোচনা করবো।
১. অপরিষ্কার চুলে ঘুম নয়
যতই ক্লান্ত হন, কখনই অপরিস্কার চুল নিয়ে ঘুমোতে যাবেন না।
চুল পরিষ্কার না করলে একদিনের ময়লাই আপনার চুলের বারোটা বাজাতে পারে।
তাই শ্যাম্পু করে বা এমনি জল দিয়ে ধুয়ে ঘুমোতে যান। শীতকালে হাল্কা হট শাওয়ার নিতে পারেন।
অপরিষ্কার তোয়ালে, বালিশের কভারও চুল খারাপ হওয়ার অন্যতম কারণ।
তিন দিন অন্তর তোয়ালে ধুয়ে ফেলুন। রাতে ঘুমনোর সময় তাই দেখে নিন পরিষ্কার বালিশের কভারে ঘুমোচ্ছেন কিনা।
চেষ্টা করুন নরম বালিশে শোবার। এতে চুল ভালো থাকে।
২. চুলে শ্যাম্পুর যথাযথ ব্যবহার
চুলে সঠিক মাত্রায় শ্যাম্পুর ব্যবহার করা না হলে তা নিশ্চিতভাবে চুলের জন্য ক্ষতির কারণ হবে।
কোন চুলে কোন মাত্রায় শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে তা নির্ভর করে চুলের ধরণের উপর।
যেমন শুষ্ক চুলে প্রতি দু’তিন দিন পর পর শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।
আবার তৈলাক্ত চুলে প্রায় প্রতিদিনই শ্যাম্পু করা যেতে পারে যাতে করে চুলের তৈলাক্ত ভাব কমানো যায়।
৩. ভুল খাদ্যাভ্যাস পরিত্যাগ করা
আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যদি পরিমিত পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেলের উপস্থিতি না থাকে, তাহলে তা আমাদের চুলের বৃদ্ধিকে তরান্বিত করতে পারেনা।
এছাড়া অপরিমিত আয়রনের উপস্থিতি আমাদের দেহে রক্তস্বপ্লতা ঘটাতে পারে, যেটিও চুল পড়ার জন্য দায়ী।
তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা ঠিক করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন এতে সঠিক মাত্রায় সকল খাদ্য উপাদানের উপস্থিতি থাকে।
চুলের যত্নে সঠিক খাবার খেতে হবে।
৪. ব্রাশ করুন হাল্কা করে
ব্রাশ করার সময়ে খুব জোরে ঘষবেন না।
এতে চুল ছিঁড়ে যাবে। স্ক্যাল্পের ওপর বেশি চাপ পড়ায় তেল নিঃসরণও বাড়তে পারে।
তাই একদম হাল্কা হাতে চুল আঁচড়ান। রাতে হাল্কা হাতে কম্বিং করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
ব্রাশ করা মানে চুলকে খানিক বিন্যস্ত করা। চুলে ময়লা থাকলে তা চলে যায়, বা চুলে হাল্কা জট পড়লে তাও কেটে যায়।
তাই চুল রাতে ঘুমোবার আগে হাল্কা হাতে ব্রাশ করে নেবেন।
৫. আঁটসাঁট করে চুল বাঁধবেন না
টানটান করে শক্তভাবে চুল বাঁধলে বা চুলে শক্তভাবে হেয়ারব্যান্ড বা ক্লিপ পরলে খোলার সময় জোরে টান পড়ে চুল ছিঁড়ে বা ভেঙ্গে যেতে পারে।
চুলের ফলিকলের উপর অতিমাত্রায় টান পড়লে স্থায়ী চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে যাকে ট্র্যাকশন এলোপেসিয়া বলে।
চুলের যত্নে চুল বাঁধার ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে।
৬. ক্ষতিকর সূর্যরশ্মি থেকে চুলের সুরক্ষা
চুল ক্ষতিকর সূর্যরশ্মির প্রভাবে ড্যামেজ হতে পারে।
বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই চুলকে সান-প্রোটেক্টেড করে বের হতে হবে।
এক্ষেত্রে চুলকে হ্যাট, স্কার্ফ বা ওড়না দিয়ে ঢেকে নেয়া যায়।
যাদের বিভিন্ন সময় সুইমিং পুলে সাঁতার কাটা হয়, তাদের চুলের জন্য পুলের ক্লোরিনেটেড ওয়াটার ক্ষতিকর।
অতএব, তাদেরও পুলে নামার আগে বাথিং ক্যাপ পরে নেয়া উচিত বা সাঁতার শেষে ভালোভাবে চুলের পানি শুকিয়ে নেয়া উচিত।
তা না হলে পুলের ক্লোরিনযুক্ত পানির প্রভাবে চুল ড্যামেজ হওয়ার আশংকা থাকে।
৭. সময়মত চুলের আগা কাটা
চুলের আগা ফাটা রোধ করার উপায় সময়মত চুলের আগা কাটা।
ছাঁটা সময়মত চুলের আগা ছাঁটলে চুল দ্রুত বাড়ে এবং আগা ফাটা সমস্যা রোধ করা যায়।
ভালোভাবে আপনার চুলের আগা খেয়াল করে দেখুন, যদি তা মসৃণ না থাকে তাহলে আগার ফাটা অংশটুকু ছেঁটে নিন।
এমন ছোট ছোট কিছু দৈনন্দিন করণীয় ও বর্জনীয় মেনে চললে আমরা চুলকে ভালো ও সুন্দর রাখতে পারবো সহজেই।