কিছু মানুষ আছেন যাঁরা ঘামেন বটে, কিন্তু তাতে দুর্গন্ধ হয় না, ফলে সামাল দিতেও তেমন অসুবিধে হয় না। কিন্তু যাদের ঘামে দুর্গন্ধ হয়, তাদের সমস্যা সত্যিই ঘোরালো।
পাবলিক ট্রান্সপোর্টে সহযাত্রী থেকে আরম্ভ করে অফিসের সহকর্মী সকলেই তাঁদের দিকে বাঁকা চোখে তাকান।
অফিসের মাঝে কোনও ক্লায়েন্ট ভিজ়িট বা বিকেলে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার থাকলে তো আরওই অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়।
হ্যাঁ, ডিওডোরান্ট বা পারফিউম বারবার ব্যবহার করে এই সমস্যার সঙ্গে লড়াই করা যায়।
কিন্তু এ কথাও ঠিক যে তার মধ্যে উপস্থিত রাসায়নিকের প্রভাবে ক্রমশ ত্বকের অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে।
তার থেকে প্রাকৃতিক সমাধানের দিকে মন দেওয়াটাই বেশি কার্যকর না? কিছু বছর আগেও তো তেমনটাই হত!
![](http://glamozen.com/wp-content/uploads/2023/12/Untitled-design-2023-12-12T165858.964.jpg)
ঘামের দুর্গন্ধের কারণ
তার আগে অবশ্য জেনে নেওয়া দরকার যে ঘামের দুর্গন্ধের কারণটা ঠিক কী?
প্রথম কথা, আপনার সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হবে।
বেশি করে জল খান, পেট যেন পরিষ্কার থাকে সেদিকে লক্ষ রাখবেন।
আন্ডারআর্ম নিয়ম করে পরিষ্কার করুন, যত অপরিচ্ছন্নতা বাড়বে, তত বাড়বে দুর্গন্ধের সমস্যা।
মনে রাখবেন,আমাদের ত্বকে কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে।
ঘামে উপস্থিত প্রোটিন কণাগুলিকে এই ব্যাকটেরিয়া অ্যাসিডে পরিণত করে।
যখন এই প্রক্রিয়া চলে, তখনই দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।
এবং মানুষ ভেদে তার পরিমাণটা বদলাতে থাকে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আপনি এই প্রক্রিয়ার উপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আনতে পারবেন।
তবে যাঁরা খুব ঘামেন তাঁরা অফিসে বা ব্যাগে একটা বাড়তি ইস্ত্রি করা জামা রাখুন।
যাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী তা বদলে নেওয়া যায়।
![](http://glamozen.com/wp-content/uploads/2023/12/amin-32.jpg)
ঘামের দুর্গন্ধ থেকে আরাম পেতে হলে
তারমধ্যে একেবারে প্রথমেই আসবে তেল।
আজ্ঞে হ্যাঁ, তেল।
নারকেল তেল, টি ট্রি অয়েল, ল্যাভেন্ডার অয়েল, পিপারমিন্ট অয়েলের মধ্যে কোনও একটি হাতের কাছে রাখুন।
টি ট্রি অয়েল আর পিপারমিন্ট অয়েল জল দিয়ে পাতলা করে স্প্রে বোতলে রাখতে পারেন।
স্নানের পর গোটা গায়ে তা ছড়িয়ে নিন।
কর্নস্টার্চ আর বেকিং সোডার সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে কোনও অন্ধকার জায়গায় রেখে দিন দিন তিন-চার।
তারপর ট্যালকম পাউডারের পরিবর্তে এই মিশ্রণ ব্যবহার করুন।
নারকেল তেল, লেবুর রস অথবা সাইট্রিক অ্যাসিড পাউডার আর জল মিশিয়ে একটি মিশ্রণ বানিয়ে নিন।
স্নান সেরে বেরোনোর আগে শরীরের যে সব অঙ্গে ঘাম বেশি হয় সেখানে লাগান।
এর পর আর জল ঢালবেন না, তোয়ালে দিয়ে শুকনো করে মুছে নারকেল তেল মেখে নিন।
অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার, লেবুর রস, গ্রিন টিও ঘামের দুর্গন্ধ কমাতে সক্ষম।
সারাদিন আপনি ঝরঝরেও থাকতে পারবেন এগুলি ব্যবহারের ফলে।
গ্রীন টি বিধিমতো তৈরি করে নিন, ঠান্ডা করে স্প্রে বোতলে ভরে রাখুন।
প্রয়োজনমতো ব্যবহার করবেন।
![](http://glamozen.com/wp-content/uploads/2023/11/6-14.jpg)
অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার আর জল সম পরিমাণে নিন, মিশিয়ে স্প্রে বোতলে ভরে রাখুন।
তুলোয় নিয়েও ব্যবহার করতে পারেন এই মিশ্রণ।
উপরে বলা প্রতিটি পদ্ধতিই দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
ফলে ঘামের দুর্গন্ধের হাত থেকে আপনি সহজেই মুক্তি পাবেন।
এর পাশাপাশি এমন কতগুলি উপায় আছে।
যা আপনার শরীরের দুর্গন্ধ নিয়ন্ত্রণে রাখতে দারুণ কার্যকর হতে পারে।
খালিপেটে মেথি বা মৌরির জল খেতে পারেন।
গ্রীন টি খেলেও চলবে। সেই সঙ্গে এড়িয়ে চলুন খুব টাইট ফিটিং সিন্থেটিক পোশাক-আশাক।
হালকা রঙের ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরলে আরামে থাকবেন।
তেল-মশলাদার খাবার বা ভাজাভুজি খাওয়ার অভ্যেস থাকলেও সেটা ছাড়ার চেষ্টা করুন।
বেশি করে ফল, ফলের রস, ডাবের জল খান – ফলটা দেখে নিজেই চমকে যাবেন!