‘হার্ট’ ভালো রাখার খুবই সহজ উপায় রয়েছে।
মাত্র কয়েকটি সহজ নিয়ম মেনে চললেই ভালো থাকবে হার্ট।
আর সেই সকল নিয়মনীতি মেনে চলাই হচ্ছে মূল কাজ।
সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না করা, পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত চাপ নেওয়া ইত্যাদি সব কারণে হৃদপিণ্ডের সমস্যা হয়ে থাকে।
মূলত জীবন পরিচালনার কারণেই হার্টের সমস্যা হয়ে থাকে।
এবার তাহলে ঘরোয়া উপায়ে হার্ট ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
খাবার বিষয়ে সচেতন হতে হবে
আপনি প্রাণীজ উৎস থেকে প্রাপ্ত ‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট’ খেতে ভালোবাসেন।
যেমন ধরুন, ‘রেড মিট’ কিংবা পূর্ণমাত্রায় ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত দ্রব্যাদি। হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে এসব খাবার ছাড়তে হবে।
‘রেড মিড’-এর মেন্যুতে ধীরে ধীরে ‘লো-ফ্যাট মিট’ যোগ করুন।
দুগ্ধজাত খাবারের পরিবর্তে জলপাই কিংবা ‘ক্যানোলা অয়েল’ খেতে পারেন।
খাবারে লবণের পরিমাণ কমান। প্রক্রিয়াজাত কিংবা প্যাকেটজাত খাবার কম খান।
প্রতিদিনের খাবারে ১ হাজার ৫০০ মিলিগ্রামের বেশি লবণ খাবেন না।
শাকসবজি খান প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই কাপ, সঙ্গে থাকুক ফলমূল।
শস্যদানা বা ‘গ্রেইন’যুক্ত খাবার খেতে পারেন, যেমন বাদামি চাল, বার্লি, পপকর্ন, ওটমিল, গমের রুটি, গমের প্যানকেক ইত্যাদি।
পর্যাপ্ত ব্যায়াম
হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সপ্তাহে ন্যূনতম পাঁচ দিন করে রোজ ৩০ মিনিট ব্যায়ামের প্রয়োজন বড়দের।
একটু হাঁটা কিংবা সাংসারিক কাজের মধ্য দিয়ে ব্যায়ামের রুটিন সেরে নিতে পারেন।
প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম মানে যে টানা আধঘণ্টা ব্যায়াম করতে হবে, সেটা কিন্তু নয়। এ সময়টাকে ভেঙে নিতে পারেন।
সকালে ১০ মিনিট ঘাম ঝরালেন, দুপুরে অফিসে মধ্যাহ্নবিরতির সময় ১০ মিনিট হেঁটে খেতে গেলেন।
অফিস থেকে ফেরার পর বিকেলে কিংবা রাতে এ রকম আরও কিছু কাজ দিয়ে ব্যায়াম সেরে নিতে পারেন।
ওজন নিয়ন্ত্রণ
স্থূলকায় মানুষের ওজন নিয়ে দুর্ভাবনার শেষ নেই।
ওজন কমাতে ক্যালরির হিসাব করছেন, ব্যায়াম করছেন কিন্তু তারপরও কমছে না কিছুতেই।
পুষ্টিকর খাবার খান এবং ক্যালরি খরচ ও গ্রহণে ভারসাম্য আনুন। তরল খাবার খেতে পারেন।
শাকসবজি থাকুক প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়।
এ ছাড়া শারীরিক পরিশ্রম করুন। প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বাধ্যতামূলক করুন। লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন।
বাসা থেকে বের হয়েই রিকশা না নিয়ে হেঁটে কিছুটা পথ এগোন। বাসায় ফেরার পথেও একই কৌশল অনুসরণ করুন।
ধূমপান ছাড়ুন
একটা সিগারেট জীবন থেকে ৫-৭ মিনিট পর্যন্ত সময় কমিয়ে দিতে পারে।
সেই সঙ্গে বাড়িয়ে দেয় একাধিক স্বাস্থ্যঝুঁকি। প্যাসিভ স্মোকিংও কিন্তু শরীরের ক্ষেত্রে ভাল নয়।
বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হৃদরোগের পিছনে দায়ী এই ধূমপান।
ধূমপানে হৃদস্পন্দন বাড়ে, মূল ধমনী অনেক ক্ষেত্রে মোটা হয়ে যায় আর এর সম্মিলিত প্রভাব পড়ে হার্টের উপর।
সিগারেটের মধ্যে যে নিকোটিন থাকে তা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক।
বিশ্বে প্রতি বছর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে যত সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয় তার মধ্যে ১৫ শতাংশের মৃত্যুর জন্য কিন্তু দায়ী ধূমপান।
তাই যতদ্রুত সম্ভব ধূমপান ত্যাগ করুন।
বিশ্রাম নিন
দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে পরিমিত বিশ্রাম নিন। মানে, স্রেফ কিছুই করবেন না, কোনো চাপ নেওয়ার দরকার নেই।
পূর্ণমাত্রায় বিশ্রাম হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী। হৃৎপিণ্ডের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় মানসিক চাপ ‘খলনায়ক’-এর ভূমিকা পালন করে।
গোটা স্বাস্থ্যের ওপরই এটা মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
আর তাই মাঝেমধ্যে কাজ ফেলে উঠে দাঁড়ান। বড় করে একটা শ্বাস নিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করুন।
সাংসারিক কিংবা অফিসের কাজ ভুলে যান।
স্রেফ নিজের জন্য বিশ্রাম নিন। সেটা শুয়ে-বসে যেকোনোভাবে।
বিশ্রাম নেওয়ার পর দেখবেন ভীষণ ফুরফুরে লাগছে।
মানে, ওই বিশ্রামের সময়টুকু আপনাকে কাজের জন্য উজ্জীবিত করে তুলবে।