পার্টির জন্য ড্রেস রেডি করেই রেখেছেন। কিন্তু পার্টির মেকআপ? রেডি তো? পার্টিতে পারফেক্ট মেকআপ ছাড়া তো পুরো সাজটাই মাটি।
মেকআপ হতে হবে এমন যাতে পার্টিতে সবার চোখ আপনার দিকে আটকে যায়। কী ভাবছেন? এর জন্য তো পার্লারে যেতে হবে।
যদি সেই সময়টুকু হাতে না থাকে তবে একদমই চিন্তা করবেন না। মাত্র ১০ মিনিটেই বাসায় বসেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন পার্টির গ্ল্যাম কুইন।
আজ দিচ্ছি তারই কিছু মেকআপ ট্রিকস। পার্টি যাবার আগে শিখে নিন কিভাবে করবেন মেকআপ।

মুখ পরিষ্কার
পারফেক্ট মেকআপ করার প্রথম শর্ত হলো পরিষ্কার মুখ। মুখে ধুলো ময়লা জমে থাকলে, কিন্তু পারফেক্ট লুকটা একদমই আসবে না।
তাই আগে ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে নিন। মুখে জমে থাকা তেল, আগের মেকআপ পরিষ্কার করে নিন ভালো করে।

ময়েশ্চারাইজ করা
মুখ পরিষ্কার করার পর এমনিতেই মুখ একটু শুকনো লাগে। তাই অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার লাগানো দরকার।
না হলে মেকআপ করার পর কিন্তু মুখ খুব শুকনো লাগবে। তাই হালকা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।

কনসিলার
সুন্দর মেকআপের পরও মুখের নানারকম দাগ যদি পার্টিতে চোখে পড়ে, তাহলে কি ভালো লাগবে? তাই দরকার কনসিলার। এটা মুখের সমস্ত দাগকে সুন্দর ভাবে ঢেকে দেবে।
ব্যবহার করুন স্টিক কনসিলার। স্টিক দিয়ে চোখের নীচে লাগান। অন্যান্য দাগের অংশে মোটা করে লাগান।
তারপর ১ থেকে ২ মিনিট ওয়েট করুন। তারপর মেকআপ স্পঞ্জ দিয়ে চেপে চেপে ভালো করে বসিয়ে দিন।

ফাউন্ডেশন
এবার ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশন সবসময় নিজের স্কিন টোনের সাথে ম্যাচ করে কিনবেন।
আর মুখের সমস্ত দিকে ভালো ভাবে ছড়িয়ে দেবার জন্য, একটা মেকআপ স্পঞ্জ কিনে নিন। তাতে করেই ফাউন্ডেশন লাগান।
দেখবেন মুখের সমস্ত দিকে কেমন সুন্দর একদম পারফেক্ট ভাবে ব্লেন্ড হয়ে গেছে।

কমপ্যাক্ট
ফাউন্ডেশনের পর মেকআপ পাউডার লাগিয়ে নিন ব্রাশের সাহায্যে।
মেকআপ পাউডার লাগানোর পর, আরও হাইলাইট করার জন্য ব্লাশন লাগাতেই পারেন বা লাগাতে পারেন ইলুমিনেশন পাউডার বা ব্রঞ্জ পাউডার।
কিন্তু সময় খুব কম থাকলে, ফাউন্ডেশনের পরই ইলুমিনেসন পাউডার লাগিয়ে নিন। আর ব্লাশন লাগালে অবশ্যই নিজের ড্রেসের সাথে ম্যাচ করে কালার লাগাবেন।
তবে পার্টিতে একটু হেভি লুকই বেশি ভালো লাগে। তাই ইলুমিনেশন পাউডার ভালো লাগবে।

আই প্রাইমার
আই মেকআপ তাড়াতাড়ি উঠে যায়? তাহলে চোখের মেকআপ শুরু করার আগে আই প্রাইমার ব্যবহার করুন।
এটা আই মেকআপকে অনেকক্ষণ স্থায়ী করতে সাহায্য করে। আর পার্টিতে অনেকটা সময় ধরেই হইহুল্লোড় হবে। তাই মেকআপকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত স্কিনে তো রাখতেই হবে।
এই আই প্রাইমার চোখের ওপরের পাতায় লাগিয়ে নিন। তারপর জাস্ট কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। তারপর লাগান আইশ্যাডো।
পার্টিতে চোখকে বেশি হাইলাইট করতে দুরকম রঙ ব্যবহার করতে পারেন। চোখের শেষের কোণে একটু ডার্ক শেড আর সামনের দিকে অন্য শেড দিয়ে হাইলাইট করুন।
চোখের কোণ থেকে ওপরের দিকে আইশ্যাডো ব্রাশ তুলবেন। কিনতে পারেন ওয়াটার প্রুফ আইশ্যাডো বেস কালার।
যেটা সব পোশাকের সাথে এবং সমস্ত রকম অনুষ্ঠানে পরা যায়। সে বিয়েবাড়ি হোক বা রাতের কোনো পার্টি।
আলাদা করে আর বিভিন্ন পোশাকের জন্য বিভিন্ন রঙ লাগবে না। এই একটা রঙেই হবে বাজিমাত। দেবে একটা থ্রী ডি এফেক্ট।
এরকম একটা রঙ চোখে লাগালে, সবাই আপনার চোখে একবার হলেও আটকে যাবে।

আই লাইনার
পার্টিতে লাগান জেল আই লাইনার বা পেনসিল আই লাইনার। পেনসিল দিয়ে কিছুটা উইঞ্জড বা ক্যাট আই স্টাইলে লাইনার লাগিয়ে নিন।
ওপরের পাতায় মোটা করে লাইনার লাগিয়ে নিন এইভাবে। ব্যাস নীচের পাতায় লাইনার লাগাবার দরকার নেই।
তারপর একটু ঘন করে মাস্কারা লাগিয়ে নিন ওপরের পাতায়। ব্যাস আই মেকআপ কমপ্লিট।

লিপ
লিপস্টিকটা ঘষার আগে, লাগিয়ে নিন লিপবাম। তারপর লিপ লাইনার দিয়ে আগে আউটলাইনটা করে নিন। তারপর লিপস্টিক লাগান।
এতে লিপস্টিক বেশিক্ষণ থাকবে। কি ভাবছেন! লিপবাম লাগালে তো ঠোঁট চটচট করবে।কিন্তু পার্টিতে পছন্দ ম্যাট লুক।
তাহলে টিস্যু পেপার রাখুন হাতের কাছে। লিপস্টিক পরে, টিস্যু পেপার দিয়ে ঠোঁটটা হালকা চেপে নিন। ব্যাস ঠোঁটের এক্সট্রা তেল শুষে নেবে।

আরও কিছু বিষয়
মেকআপ করার সমস্ত জিনিস মেকআপ শুরু করার আগে, হাতের কাছে রাখুন, যেমন টিস্যু পেপার, প্রাইমার, লিপ লাইনার ইত্যাদি যা যা লাগে।
সময় খুব কম থাকলে আই প্রাইমার না লাগালেও অসুবিধা নেই। আর সেক্ষেত্রে এক রঙের আইশ্যাডো লাগিয়ে নিন।
একটু ব্রঞ্জ ধরনের চকচকে রঙ ভালো লাগবে। আর মাস্কারা লাগানোর দরকার নেই। শুধু আই লাইনার মোটা করে পড়ে নিন। ভালো লাগবে।
চুলের স্টাইল আগের ঠিক করে নিন, তারপর মুখের মেকআপ।
সময় কম থাকলে, প্রাইমার লাগানোর দরকার নেই। মুখে যদি দাগছোপ থাকে, তাহলে জাস্ট দাগের ওপর, চোখের তলায় কনসিলার লাগিয়ে, ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন।
আর যদি চোখের তলায় বা মুখে তেমন দাগ ছোপ কিছু না থাকে তাহলে কনসিলার লাগানোরও দরকার পড়বে না।
কনসিলারের কাজ হলো মুখের দাগ ছোপ, চোখের তলার কালি ঢেকে দেওয়া। আর প্রাইমারের কাজ হল মেকআপকে অনেকক্ষণ ধরে রাখা।
তাই চাহিদা মত বেছে নিন। আর প্রাইমার বা কনসিলার সবই ফাউন্ডেশনের আগে লাগাবেন।
পারফেক্ট মেকআপ করার জন্য ভালো মানের ব্রাশ ব্যবহার করা দরকার। ফাউন্ডেশন, ব্লাশন, আইব্রো, আইশ্যাডোর জন্য আলাদা আলাদা ব্রাশ রয়েছে। এই ব্রাশগুলো খুব সুন্দর ভাবে মেকআপ ব্লেন্ড করতে সাহায্য করবে।
তাহলে এবার থেকে হাতে সময় না থাকলে পার্লারে না গিয়ে বাসাতেই নিজের মেকআপ নিজেই করুন।
একটু মনোযোগ দিয়ে যদি মেকআপ করেন তবে বিশ্বাস করুন, কেউ বুঝবেই না যে আপনি নিজে মেকআপ করেছেন।