অনেক সময়েই মেয়েদের শুনতে হয় যে তাদের নাকি সাজতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু মেয়েরা চাইলেই বেশ কম সময়ে সেজে ফেলতে পারে।
তার জন্য শুধু দরকার হাতের কাছে মেকআপ কিটে কিছু বিশেষ জিনিস থাকা। এই জিনিসগুলি খুব যে দামী কিছু তা কিন্তু নয়।
সবগুলোই আপনি জানেন। শুধু এবার হাতের কাছে এনে সাজতে শুরু করার পালা।
ক্লিনসার
মেকআপ তখনই ভালো করে ফুটে উঠবে যখন মুখ সুন্দর ভাবে পরিষ্কার থাকবে। আর মুখ পরিষ্কার করতে পারে একমাত্র একটি ভালো ক্লিনসার।
আপনার ত্বকের রকমফের বুঝে একটি ভালো ক্লিনসার ব্যবহার করুন মেকআপ করার আগে। অবশ্যই ক্লিনসার হতে হবে মাইল্ড।
ক্লিনসার ত্বকের ভিতর থেকে ময়লা যেমন টেনে বের করে, তেমনই ত্বকের ওপরের মরা চামড়া তুলে দেয়। ফলে স্কিন এমনিতেই গ্লো করতে শুরু করে।
ময়েশ্চারাইজার
স্কিন পরিষ্কার করার পর মুখের দরকার একটি সুরক্ষা বলয়। সেই কাজ করবে একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার।
ময়েশ্চারাইজার যেমন একদিকে স্কিনকে আর্দ্রতা দেবে, তেমনই আবার মেকআপকে সরাসরি স্কিনের সংস্পর্শে আসতে দেবে না। ফলে স্কিন ভালো থাকবে।
সানস্ক্রিন
সানস্ক্রিন কেন ব্যবহার করা হয় আমরা সবাই জানি। দিনের বেলা মেকআপ করে বাইরে যেতে হলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা মাস্ট।
তাহলেই মেকআপ স্কিনে অনেক ক্ষণ টিকে থাকে। সানস্ক্রিন কিন্তু একভাবে আপনার মেকআপ লক করেও রাখে।
প্রাইমার
এবার মূল মেকআপ করার পালা শুরু। ফাউন্ডেশনের আগেও কিন্তু প্রাইমার ব্যবহার দরকার।
এটি মুখে মেকআপ ব্যবহার করার আগে একটা মজবুত ফাউন্ডেশন তৈরি করে।
এটি ভালো করে ব্যবহার করলে অনেক ক্ষণ মেকআপ মুখে থাকে এবং ঠিক থাকে। মুখে মেকআপ ধরে রাখে এই প্রাইমার।
ফাউন্ডেশন
এবার মেকআপ শুরু। প্রথমে একটি ভালো ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা উচিত নিজের স্কিন টাইপ অনুযায়ী।
ফাউন্ডেশন মুখ যেমন একদিকে উজ্জ্বল করে তোলে, তেমনই মুখের দাগ, ছোপ ইত্যাদি ঢেকে দিয়ে মুখ করে তোলে নিটোল।
কনসিলার
ফাউন্ডেশন ব্যবহার করে ব্রাইট তো হলেন। মুখের দাগ কিছু অংশে তো ঢেকে গেল।
কিন্তু এমন কিছু দাগ আছে যা ফাউন্ডেশন ব্যবহার করেও লুকানো যায় না। এই দাগের জন্য আছে কনসিলার।
ব্রনের দাগ বা ব্ল্যাকহেডস সহজে ফাউন্ডেশন দিয়ে ঢাকা পড়ে না। কনসিলার এই ক্ষেত্রে অনবদ্য কাজ দেয়।
বিবি ক্রিম
একে অনেক সময়ে বিউটি বাম বা ব্লেমিস বাম বলা হয়।
আপনি যদি আলাদা আলাদা করে কনসিলার, ফাউন্ডেশন বা প্রাইমার ব্যবহার করতে না চান, তাহলে ভালো কোনও ব্র্যান্ডের এই ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
এটি সুন্দর মেকআপ বেশ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
আই শ্যাডো
মুখের মেকআপ শেষ, এবার চোখের শুরু। চোখ সুন্দর করে না তুললে পুরো সাজটাই মাটি।
তাহলে চোখকে সাজিয়ে তুলতে আগে আই শ্যাডো ব্যবহার করুন। আপনার স্কিন কমপ্লেকশন অনুযায়ী আই শ্যাডো ব্যবহার করুন।
আর দিনে মেকআপ করলে হাল্কা আই শ্যাডো এবং রাতে মেকআপ করলে ডিপ আই শ্যাডো ব্যবহার করাই ভালো।
আই লাইনার
চোখে শেড দেওয়ার পর এবার দরকার চোখ প্রমিনেন্ট করে তোলা। তাই দরকার আই লাইনার।
আই লাইনার যেহেতু চোখের সরাসরি সংস্পর্শে আসছে তাই ভালো ব্র্যান্ডের ব্যবহার করাই ভালো। এখন আবার কালো ছাড়া অন্য রঙের আই লাইনার পাওয়া যায়।
আপনার পছন্দ আর পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে আপনি কিনতে পারেন আই লাইনার।
মাস্কারা
চোখের পাতা একটু বড় না হলে কেমন জানি লাগে! চোখের পাতা সুন্দর, কালো আর বড় দেখানোর জন্য ব্যবহার করুন মাস্কারা।
এটি মূলত কালো হয়। তবে দিনের বেলা বাইরে যাওয়ার জন্য আপনি হাল্কা কালারের বা ট্রান্সপারেন্ট মাস্কারাও ব্যবহার করতে পারেন।
কাজল
কাজল ছাড়া চোখ, ভাবাই যায় না। আই লাইনার, মাস্কারা এই সবের পরেও কাজল একটু দরকার হয়ই।
এতে চোখের মধ্যে গভীরতা আসে, চোখ হয়ে ওঠে অর্থবহ। তাই চোখে কাজল ব্যবহার করুন।
এতে চোখের সৌন্দর্য অনেক গুণ বেড়ে যায়। তবে ভালো ব্র্যান্ডের ব্যবহার করা দরকার। কাজল ব্যবহার করলেই চোখের মেকআপ ফিনিশ।
লিপ লাইনার
এবার ঠোঁটের পালা। ঠোঁটই তো আপনাকে মোহময়ী করে তুলবে। তাই এবার ঠোঁটের মেকআপ শুরু করুন।
ঠোঁট প্রথমে একে নিন লিপ লাইনার ব্যবহার করে।
আগে লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁট একে নিলে তারপর লিপস্টিক ব্যবহার করলে দেখতে ভালো লাগে। ঠোঁট অনেক বেশি নিটোল লাগে।
লিপস্টিক
এবার লিপস্টিক ব্যবহার করার পালা। লিপস্টিক আপনার ঠোঁট সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলে।
এর ওপর দিয়ে লিপ গ্লস ব্যবহার করলেই আপনার ঠোঁটের মেকআপ রেডি।
তবে লিপস্টিক ব্যবহার করতে হবে আপনার গায়ের রঙ, পোশাক আর কখন ব্যবহার করছেন সেই সব ভেবে।
ব্লাশার
এবার সবশেষে আপনার গাল খানিক হাইলাইটেড করার পালা। এর জন্য ব্যবহার করুন পছন্দের ব্লাশার। আর এখানেই আপনি রেডি।
তাহলে, কতক্ষণ লাগবে এটুকু মেকআপ করতে? খুব বেশি সময় লাগার কথা নয়। শুধু হাতের কাছে সব উপকরণ এনে রাখার যেটুকু অপেক্ষা।