Search
Close this search box.

ত্বক মসৃণ করার ঘরোয়া উপায়

আপনার ত্বকের রুক্ষতা বা আপনার অমসৃণ ত্বক আপনার সৌন্দর্যকে অনেক সময় আড়াল করে।

আবার কখনো এই রুক্ষতা বা ত্বকের অমসৃণতা আপনাকে আপনার প্রিয়জনের স্পর্শ থেকেও বঞ্চিত করে।

জানি আপনার হাজার কাজ, তাই নিজের দিকে তাকানোর সময় পাচ্ছেন না।

কিন্তু প্রতিদিনের কাজের ফাঁকে মাত্র ১৫-২০ মিনিট সময় দিন নিজেকে আর কয়েক দিনের মধ্যেই পান মাখনের মত মসৃণ ও নরম ত্বক।

আপনার মসৃণ ও কোমল ত্বকের রহস্য কিন্তু আপনার হাতের মুঠোয়। তবে সেই মুঠো খুলতে হলে আপনাকে কিন্তু আজকের লেখাটি পড়তেই হবে।

আপনার রোজকার ব্যবহৃত কয়েকটি প্রাকৃতিক উপাদান ঠিক কীভাবে ব্যবহার করবেন ত্বকের মসৃণতা পাওয়ার জন্য আজ সেটাই আপনাদের জানাবো।

ওটমিল ও দারচিনি

ওটমিল আমাদের ত্বকের মৃত কোষগুলিকে খুব সহজেই পরিষ্কার করে এবং ত্বককে মসৃণ করে।

দারচিনি এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আমদের ত্বকের রুক্ষতা বা যেকোনো ইনফেকশন, ফাইন-লাইন বা বলিরেখা এগুলি দূর করে ত্বকের মসৃণতা বাড়িয়ে তোলে।

উপকরণ:

২ বড় চামচ ওটমিল, ১/২ চামচ দারচিনি পাউডার ও ১ বড় চামচ দুধ।

পদ্ধতি:

ওটমিল, দারচিনি পাউডার ও দুধ ভালো করে মিশিয়ে নিন। আপনার আঙুলের সাহায্যে মুখে ৪-৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন।

১০-১৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ দিন এই মিশ্রণ ব্যবহার করলে ১ সপ্তাহের মধ্যেই আপনি পার্থক্য লক্ষ্য করবেন।

আপনার শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলির ত্বক মসৃণ করার জন্যও এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন শুধু উপাদানগুলির পরিমান সমান রেশিও অনুযায়ী বাড়িয়ে নিতে হবে।

বেসন, দুধ ও হলুদ

প্রাচীন শাস্ত্রে মসৃণ ও নরম ত্বকের রহস্য কিন্তু এই তিনটি উপাদানই। এর নিয়মিত ব্যবহার আপনার ত্বকের রুক্ষতা, শুষ্কতা দূর করে।

আপনার মুখের সাথে সাথে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের রুক্ষতা দূর করতে এই মিশ্রণ সমান ভাবে উপকারী।

উপকরণ:

কাঁচা হলুদবাটা ১ চামচ ও বেসন ২ চামচ, দুধ পরিমাপ মতো।

পদ্ধতি:

কাঁচা হলুদবাটা ও বেসন সঠিক পরিমাপ অনুযায়ী দুধের সাথে মেশান যাতে পেস্ট মত তৈরী হয়।

এবার এই পেস্টটি মুখে বা শরীরের অন্যান্য অঙ্গে মাখুন। ১৫-২০ মিনিট পরে হালকা গরম পানি হাতে নিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

এই মিশ্রণটি সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করুন। আপনার ত্বকের মসৃণতা আপনি নিজেই ছুঁয়েই বুঝতে পারবেন।

পেঁপে

আমাদের ত্বকের মসৃণতা বাড়িয়ে তুলতে পাকা পেঁপে অত্যন্ত বেশি মাত্রায় কার্যকরী।

পেঁপেতে পেক্টিন থাকে যা আমাদের আমাদের রুক্ষ ও শুষ্ক ত্বককে খুব তাড়াতাড়ি হিল করে।

হাত বা পায়ের রুক্ষতা দূর করে মসৃণ করে তুলতে পেঁপে ব্যবহার করুন।

উপকরণ:

৩ বা ৪ টুকরো পেঁপে, ১টি কলা, ২ চামচ মধু।

পদ্ধতি:

পেঁপে ভালো করে মিক্সিতে বেঁটে নিন। এবার তার সাথে মধু ও কলা মিশিয়ে মুখে ভালো করে ম্যাসাজ করুন ১৫ মিনিট ধরে। ১

৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। ভালো ফল পেতে প্রতি সপ্তাহে ২ দিন এই ভাবে ম্যাসাজ করুন।

পুদিনা পাতা

পুদিনা পাতা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু ত্বকের ক্ষেত্রেও এর উপকার গুনে শেষ করা যায় না।

আমাদের ত্বকের অবাঞ্চিত দাগ, ছোপ, ব্রণ বা যেকোনো রকম সমস্যা দূর করে ও ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে মসৃণ ও নমনীয় করে তোলে।

উপকরণ:

১০-১২ টি পুদিনা পাতা, ২-৩ চামচ দই।

পদ্ধতি:

পুদিনা পাতা ভালো করে বেটে দইয়ের সাথে ভালো করে মিশিয়ে নিন।

মুখে মেখে ১৫ মিনিট পর জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

এটি আপনি প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন।

মধু

আমাদের আজকের সব শেষ উপাদানটি হলো মধু।

মধু সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। ত্বক মসৃণ করার সবথেকে সহজ উপায় হলো মধু।

উপকরণ:

২-৩ চামচ মধু, ১ টি ডিমের সাদা অংশ।

পদ্ধতি:

মধু ও ডিমের সাদা অংশ ফেটিয়ে ভালো করে মেশান। ভালো করে মুখে মেখে ১৫-২০ মিনিট পর ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে তারপর ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

সপ্তাহে ১ বার করে দেখুন, ১ মাসের মধ্যেই আপনি পার্থক্য বুঝতে পারবেন।

এই ঘরোয়া উপাদানগুলি ছাড়াও মসৃণ ত্বক পেতে বা মসৃণতা বজায় রাখতে কতগুলি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

বেশি করে পানি খেতে হবে, রাতে শোবার আগে ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে মুখে ক্রিম ও বডি লোশন মাখতে হবে, ফল খেতে হবে বেশি করে।

জাঙ্ক ফুড, ও বেশি মাত্রায় অ্যালকোহল ইনটেক বর্জন করতে হবে।

ঘরোয়া উপায়গুলি কিন্তু কাজের হওয়ার সাথে সাথে আপনার ত্বকের কোনোরকম ক্ষতি করে না।

তাই আজকের বলা  যেকোনো একটি বা দুটি উপায় আপনি আপনার মুখ ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মসৃণতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করে দেখতেই পারেন।

দেখবেন, কিছুদিনের মধ্যেই আপনার প্রিয়জন আপনাকে বারবার স্পর্শ করার ছুতো খুঁজবে!