ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য অনেক পদ্ধতি ব্যবহার করে হতাশ হয়েছেন? চিন্তা করবেন না, হাতের কাছেই আছে এর সহজ সমাধান। ব্যবহার করুন পেঁপে।
পেঁপে খেতে ভালো লাগুক বা না লাগুক, এই সহজলভ্য ফলটিকে আপনার ত্বকের যত্নের উপকরণের একেবারে উপরের সারিতে রাখতে পারেন নির্দ্বিধায়।
পেঁপে ব্যবহার করার একাধিক পদ্ধতি আছে। কী সেগুলো, সেটা জানার আগে আসুন জেনে নিই ত্বকের যত্নে পেঁপের উপকারিতাগুলো।
ত্বকের যত্নে পেঁপের ফেস মাস্ক কেন ব্যবহার করবেন?
সেবাম বা মেদ থেকে ক্ষরিত যে রসের অতিরিক্ততার কারণে ত্বকে অত্যধিক তৈলাক্তভাব হয়।
পেঁপেতে থাকা প্যাপাইন বা প্যাপাইয়া এনজাইম নামক রাসায়নিক অতিরিক্ত সেবামকে তুলে দিয়ে সেই তৈলাক্তভাব দূর করে।
এতে ব্রণর সম্ভাবনাও অনেক কমে যায়। এটি ভিটামিন এ-তে সমৃদ্ধ।
পাকা পেঁপেতে বি.এইচ.এ. বা বিটা-হাইড্রক্সি অ্যাসিড নামে এক ধরনের রাসায়নিক থাকে, যা ত্বকের উপরিভাগের মৃত কোষকে পরিষ্কার করায় মুখে বয়সের ছাপ মুছে গিয়ে উজ্জ্বলতা বজায় রাখে।
এছাড়াও এর সোডিয়ামের স্বল্প মাত্রা ও পটাশিয়াম ত্বকের শুষ্কতাকে দূর করে স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
কালো ছোপ ও বলিরেখাকে মুছে ফেলে আপনার তারুণ্যকে ধরে রাখতেও এর জুড়ি মেলা ভার।
পেঁপের ফেস মাস্ক বানাবেন কীভাবে?
এবারে আসুন জেনে নিই একে আপনি ব্যবহার করবেন কীভাবে।
আসলে একরকম নয়, একে ব্যবহারের পদ্ধতির নানাবিধ রকমফেরের থেকে আপনাদের আমরা ফেস মাস্ক প্রস্তুতির কয়েকটি উপায় জানাবো।
পেঁপে ও মধুর ফেস মাস্ক শুষ্ক ত্বকের জন্য
পেঁপে আর মধুর এই মিশ্রণ আপনার মুখের ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ত্বককে আর্দ্র ও মসৃণ করে। দুধ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় ও বলিরেখা, কালো দাগকে তুলে দেয়।
উপকরণ
হাফ কাপ পাকা পেঁপে, ২ চামচ দুধ, ১ চামচ মধু।
পদ্ধতি
প্রথমে পেঁপেকে কয়েক টুকরো করে কেটে নিন। পরিমাণ মতো কাটা পেঁপেগুলোকে পেস্ট করে নিন। এবারে এই পেস্টের মধ্যে পরিমাণ মতো দুধ ও মধু মিশিয়ে দিন।
আপনার প্রস্তুত করা এই পেস্টটি এবারে মুখে মেখে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। ১৫ মিনিট পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ব্যবহারের পর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আপনি আপনার মুখের নরম ভাব ও মসৃণতা টের পাবেন। এই পদ্ধতিটি আপনি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার করতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনার যদি কোনও ডেয়ারি প্রোডাক্টে অ্যালার্জি থাকে, তাহলে তাহলে এই ফেস মাস্কে দুধ না দিয়ে আর এক চামচ মধু ব্যাবহার করুন।
পেঁপে, শসা ও কলার ফেস প্যাক
শসা আপনার মুখের চামড়াকে আর্দ্র ও শীতল রাখে। রোদে চামড়া পুড়ে যাওয়ার মতো সমস্যারও সমাধান এটি।
কলায় স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকায় ত্বক নরম ও আর্দ্র থাকে। এছাড়া কলা ত্বকের দাগ তুলে দিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ায় ও বয়সকেও ধরে রাখে।
উপকরণ
১/৪ কাপ পাকা পেঁপের টুকরো, অর্ধেক শসা, ১/৪ কাপ পাকা কলার টুকরো।
পদ্ধতি
শসার কয়েক পিস টুকরো কলার কয়েকটি টুকরো ও পরিমাণ মতো পেঁপের সাথে ব্লেন্ডারে মিশিয়ে নিন।
এর ফলে যে পেস্টটি তৈরি হলো, সেটিকে এবারে মুখে মেখে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
এরপর হালকা উষ্ণ গরম পানিতে মুখ পরিষ্কার করে নিন প্রথমে, তারপর শেষে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।
প্রতি সপ্তাহে একবার করে আপনি এইভাবে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন।
পেঁপের প্যাক
উপকরণ
কয়েক টুকরো পাকা পেঁপে।
পদ্ধতি
পেঁপের কয়েকটি টুকরো নিয়ে সেটিকে ভালো করে পেস্ট করে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে ১০ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।
পেঁপে ও টমেটো-র ফেস প্যাক
টমেটোতে লাইকোপিন থাকায় এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের কাজ করে। মুখের কালো দাগকেও এই ফেস প্যাকের মাধ্যমে আপনি তুলে ফেলতে পারেন।
ত্বকের উজ্জ্বলতাকেও ধরে রাখে এই ফেস প্যাক।
উপকরণ
কিছু পেঁপের টুকরো ও ১/২ টমেটো।
পদ্ধতি
ব্লেন্ডারে মধ্যে কয়েক টুকরো পাকা পেঁপে ও টমেটোর আধখানা অংশ দিয়ে সেটাকে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
এই মিশ্রণটিকে একই ভাবে মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
তাহলে আর কিছু না ভেবে আজ থেকেই পেঁপের এই ফেস মাস্কগুলো ব্যবহার শুরু করে দিন। আর ফল পান হাতে-নাতে।