Search
Close this search box.

চুলের যত্নে ডিমের ব্যবহার

চুলের যত্নের জন্য আমরা কত কিছুই না ব্যবহার করি। কত রকমের প্রোডাক্ট, কত শ্যাম্পু!

কিন্তু আমাদের মনের মতো ফল কিছুতেই পাই না। আর তখনই আমরা মুখ ফেরাই সেই চিরাচরিত ঘরোয়া উপাদানের দিকে।

আর চুলের যত্নে সবার আগে মনে পড়ে যে উপাদানের কথা সেটা হল ডিম।

আজ পর্যন্ত ডিম চুলের জন্য ব্যবহার করেননি এমন মহিলার সংখ্যা পাওয়া খুব কঠিন।

হ্যাঁ, খানিক গন্ধ আছে বটে, কিন্তু সেটা সহ্য করলে যে উপকারটি পাওয়া যায় তার তুলনা নেই।

আসুন আজ তাহলে দেখে নিই চুলের জন্য ডিম কেন উপকারী আর কীভাবেই বা ডিম চুলের জন্য আপনারা ব্যবহার করবেন নিয়ম করে।

কেন ডিম ভালো চুলের জন্য?

প্রথমেই বলা ভালো যে ডিমের সাদা অংশ আর কুসুম মানে হলুদ অংশ- দুটোই কিন্তু উপকারী।

সবচেয়ে বেশি উপকারী অবশ্য কুসুম। এতে মূলত আছে প্রোটিন, যেমন বায়োটিন, ফলেট।

এছাড়া আছে ভিটামিন এ আর ডি। আছে ভিটামিন ই।

ভিটামিন মূলত চুলের ড্যামেজ থেকে চুলকে রক্ষা করে।

চুলকে শুষ্ক হওয়া থেকে আটকায় আর চুলের ময়েশ্চার ধরে রাখে।

আর বায়োটিন, ফলেট চুলের বৃদ্ধির জন্য খুবই দরকারী।

আর দরকার আয়রন কারণ আয়রন কোষের জন্ম দিতে সাহায্য করে।

সে ক্ষেত্রে ডিমে থাকা আয়রন কিন্তু স্ক্যাল্পে কোষের জন্ম দেবে। অর্থাৎ আপনার চুলের সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য ডিম ব্যবহার করা খুবই দরকার।

ডিম কীভাবে ব্যবহার করবেন?

ডিমের উপকারিতা নিয়ে তো এতো কিছু শুনলেন।

কিন্তু এবার আসুন দেখে নেওয়া যাক চুলের যত্নে আপনি কীভাবে ডিম ব্যবহার করতে পারেন।

১. ডিম আর অলিভ অয়েল হেয়ার মাস্ক

এই দুটো উপাদান এক সঙ্গে কিন্তু ম্যাজিকের মতো কাজ করবে।

সপ্তাহে দুদিন ব্যবহার করবেন আর কামাল দেখতে পারবেন।

উপকরণ

  • ২ ডিম
  • ২ টেবিল চামচ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল

পদ্ধতি

  • একটি পাত্রে এই দুটি উপকরণ খুব ভালো করে মেশান। তারপর চুলে আর স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • তারপর মাইল্ড কোনও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে আপনার চুল আর স্ক্যাল্প ড্রাই হবে না, মোলায়েম থাকবে চুল।
  • সপ্তাহে তিনবার করে এটি ব্যবহার করতে পারেন চাইলে।

২. ডিম, দুধ আর মধুর হেয়ার মাস্ক

যেহেতু আমাদের চুলের প্রধান উপাদান কেরাটিন প্রোটিন, তাই দুধ কিন্তু খুব দরকার চুলের জন্য।

দুধের মধ্যে থাকা প্রোটিন চুল মজবুত করতে আর চুলের পুষ্টির জন্য খুবই দরকার।

ভিতর থেকে চুল সুন্দর করতে কিন্তু দুধের বিকল্প নেই। আর সঙ্গে থাকা মধু চুলকে করবে ঝকঝকে আর ময়েশ্চারাইজড।

উপকরণ

  • ডিম দুইটা
  • দুই চামচ মধু
  • ২ টেবিল চামচ দুধ

পদ্ধতি

  • তিনটি উপকরণ খুব ভালো করে মেশান। তারপর তা চুলে লাগিয়ে নিন আর ৩০ মিনিট রাখুন। তারপর শ্যাম্পু করে নিন।
  • সঙ্গে সঙ্গে আপনি পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
  • সপ্তাহে দু দিন করতে পারেন।

৩. ডিম আর মেয়োনিজের হেয়ার মাস্ক

কি! শুনে চমকে উঠলেন? মেয়োনিজ এতো দিন খেয়ে এসেছেন।

কিন্তু চুলে লাগানোর কথা শুনে আশ্চর্য হওয়ার কিচ্ছু নেই।

এই মাস্ক মূলত চুল শুষ্ক হয়ে ভেঙে পড়া থেকে চুলকে রক্ষা করে।

উপকরণ

  • ২ ডিম
  • ১ টেবিল চামচ সাধারণ মেয়োনিজ

পদ্ধতি

  • দুটো উপকরণ খুব ভালো করে ফেটান। সারা মাথায়, চুলে লাগান। স্ক্যাল্পে খুব ভালো করে দিন। আর রেখে দিন ২০ মিনিট মতো।
  • আর এই ২০ মিনিট অবশ্যই মাথা শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ঢেকে রাখুন। এবার ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে নিন।
  • নিয়ম করে করলে চুলের ফেটে যাওয়া বা ভেঙে যাওয়ার সমস্যা চিরতরে চলে যাবে।
  • সপ্তাহে দুদিন করে ট্রাই করুন।

৪. ডিমের সাদা অংশের হেয়ার মাস্ক

মূলত যাদের তৈলাক্ত স্ক্যাল্প তাদের চুল থেকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হয়।

আর এর ফলে চুল সবসময়ে তেলতেলে হয়ে থাকে যা খুবই ক্ষতিকর।

এর থেকে আপনাকে মুক্তি দেবে ডিমের সাদা অংশ।

উপকরণ

  • দুটো ডিমের সাদা অংশ
  • ১ টেবিল চামচ লেবুর রস

পদ্ধতি

  • ডিমের কুসুমের থেকে সাদা অংশ আলাদা করে নিন। এর মধ্যে লেবুর রস নিয়ে খুব ভালো করে মেশান।
  • এবার এই মিশ্রণ চুলে লাগান স্ক্যাল্প বাদ দিয়ে আর রেখে দিন ২০ মিনিট। তারপর শ্যাম্পু করে নিন।
  • সপ্তাহে এক দিন এটা করে দেখুন।

৫. ডিম আর দইয়ের হেয়ার কন্ডিশনার

কেমন হয় যদি ঘরে বসেই কন্ডিশনার বানিয়ে নেওয়া যায়!

আজ তাহলে ডিম আর দই দিয়েই ঘরোয়া কন্ডিশনারের কথা আপনাদের জানিয়ে দিই।

দই যেহেতু দুধ থেকেই তৈরি তাই দুধের যাবতীয় গুণ সবই দইয়ের মধ্যে আমরা পাব।

আর হেনা করতে গিয়ে তো দই আমরা ব্যবহার করিই চুলে।

উপকরণ

  • ২ ডিম
  • ২ টেবিল চামচ টক দই

পদ্ধতি

  • এই দুটি উপকরণ খুব ভালো করে মিশিয়ে আপনার চুলে লাগান। স্ক্যাল্পে লাগাবার দরকার নেই। এবার রেখে দিন ৩০ মিনিটের জন্য।
  • ৩০ মিনিট হয়ে গেলে শুধু জল দিয়ে ধুয়ে নিন চুল। আপনি সঙ্গে সঙ্গেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
  • এতো জেল্লাদার আর ঝলমলে চুল আপনি এর আগে পাননি, কথা দিতে পারি।
  • সপ্তাহে তিনদিন করতে পারেন এই হেয়ার প্যাকটি ব্যবহার।