দিন শেষে রাতে ঘুমানোর আগে ত্বক ও চুলের বিশেষ যত্ন দরকার। কারণ রাতের বেলায় ত্বক রিপেয়ারিং এর কাজ করে।
সারাদিনের ঘাম, ধুলো-ময়লা, তেল জমে লোমকূপের মুখ বন্ধ থাকলে স্কিন-রিনিউয়াল ও রিপেয়ার প্রসেসিং ঠিক মতো হয় না।
স্বাভাবিক, শুষ্ক ও তৈলাক্ত যে ধরনের ত্বকই হোক না কেন, নাইট কেয়ার ইজ মাস্ট। তাই জানা দরকার নাইট কেয়ারের কিছু বিশেষ টিপস।
রাতে ঘুমাতে যাবার আগে যা করণীয়
রাতে ঘুমাতে যাবার আগে যতই ক্লান্ত থাকুন না কেন, মেকআপ অবশ্যই ভালোভাবে রিমুভ করতে হবে।
হাত,পা ও মুখের ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। রাতে ঘুমাতে যাবার আগে যদি গোসল করতে পারেন তাহলে খুবই ভালো হয়।
কারণ, ত্বক পরিষ্কার থাকলে স্বাভাবিক কাজকর্ম ঠিক মতো হয় এবং ত্বক ভালোভাবে শ্বাস নিতে পারে।
রাতে চুল ভালোভাবে শুকিয়ে, চিরুনি দিয়ে আস্তে আস্তে চুলের জট ছাড়িয়ে চুল আঁচরে নেন।
মেটালের চিরুনি ব্যবহার না করাই ভালো। চুল বড় হলে পনিটেল বা বিনুনি বেঁধে নিন।
এর ফলে চুলে জট পড়বে না। তবে থুব টেনে টাইট করে চুল বাঁধবেন না।
ঘুমাতে যাবার অন্তত দু’ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন।
অতিরিক্ত টেনশন বা স্ট্রেস নিয়ে ঘুমাতে গেলে ঘুম ভালো হয় না এবং ঘুম ভালো না হলে ত্বকে তার ছাপ পড়ে।
খুব ঠাণ্ডা বা গরম পানি দিয়ে মুখ ধোবেন না। একটু বেশি পরিমাণ পানি দিয়ে মুখ ধোবেন, যেন ত্বক ভালো মতো পরিষ্কার হয়।
বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বক হলে বেশি পরিমাণ পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
ত্বক যে ধরনেরই হোক না কেন, রাতে ক্লেনজিং আবশ্যক। যাদের ত্বক শুষ্ক প্রকৃতির তারা ক্লেনজিং ক্রিম ব্যবহার করুন।
এতে একদিকে যেমন ত্বক পরিষ্কার হবে, তেমনি ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতাও বজায় থাকবে। ত্বক পরিষ্কার করতে সাবান দিয়ে মুখ ধোবেন না। এতে ত্বক আরো শুষ্ক হয়ে যাবে। সোপ লেস ক্লিনজার বা ফেসওয়াস সোপ ব্যবহার করুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী।
ক্লিনজিংএর পর টোনিং জরুরি। মুখ পরিষ্কার করার পর তুলোয় টোনার দিয়ে ভালো করে মুখ মুছে নিন।
মনে রাখবেন
ত্বক মসৃণ, উজ্জ্বল এবং টানটান রাখার জন্য টোনিং-এর বিকল্প নেই। টোনার ত্বকে ভালোভাবে রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে।
ময়েশ্চারাইজার বা নাইট ক্রিম ত্বক হাইড্রেটেড রাখে। ত্বক ভালো রাখে।
যদি আপনার ত্বক শুষ্ক ও স্বাভাবিক হয়, তবে রাতে ঘুমাবার আগে মুখ পরিষ্কার করে মুখে ও গলার ত্বকে নারিশিং ক্রিম লাগিয়ে হালকা হাতে আপ-ওয়ার্ড ও আউট-ওয়ার্ড স্ট্রোকে হালকা ম্যাসাজ করুন।
তৈলাক্ত ত্বকে নারেশিং ক্রিম ব্যবহার করবেন না। এর ফলে ত্বক আরো তৈলাক্ত হয়ে যাবে।
রাতে শোবার আগে হাতে কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েল নিয়ে চোখের চারপাশে লাগিয়ে হালকা হাতে ১ মিনিট ম্যাসেজ করুন।
ভেজা তুলো দিয়ে মুছে ফেলুন। নিয়মিত করলে চোখের চারপাশের ত্বক যেমন ভালো থাকবে, তেমনি ডার্ক সার্কেলের সমস্যাও কমবে।
রোজ রাতে শুতে যাবার আগে ঠোঁটে কোনো ময়েশ্চার বা লিপবাম লাগিয়ে নিন। নরম কাপড় দিয়ে ১মিনিট ঠোঁটে ঘষুন।
তারপর গোলাপজল ও গ্লিসারিন একসঙ্গে মিশিয়ে লাগান। এর ফলে ঠোঁট কোমল ও মোলায়েম হবে।
ঘুমাতে যাবার আগে হাত ও পায়েরও যত্ন নিতে হবে। নখের ওপর ময়েশ্চার ম্যাসাজ করুন। নখ মসৃণ হবে।
হালকা গরম পানিতে হারবাল শ্যাম্পু মিশিয়ে পা বেশ কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন।
ভালো করে পামিস স্টোন দিয়ে পায়ের গোড়ালি ঘষে পরিষ্কার করতে পারলে ভালো।
গোড়ালি, আঙুলের ফাঁকে, পায়ের পাতার নিচের অংশে ফুট লোশন দিয়ে ম্যাসাজ করুন।
ত্বক ও চুলের পরিচর্যায় নিয়মিত কিছুদিন নাইট কেয়ার রুটিন মেইনটেইন করে দেখুন, তফাৎটা নিজেই বুঝতে পারবেন।